আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
47 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (18 points)
আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,

আশাবাদী আল্লাহর রহমতে আপনারা সবাই ভালো আছেন।
আমার এক ভাই আমার কাছ থেকে ১৫০ পাউন্ড ধার নেন। নেয়ার কয়েকদিন আগে আমাকে বলেন, আমি ১২০ টাকা নেব আর তুমাকে ১৫০ টাকা দেব। আমি বলে আমি ৩০ টাকা বেশি নেব না। মূল টাকাই নেব। তারপর উনি ১৫০ টাকা ধার নেন। তারপর উনি এসে বলেন, মাশা আল্লাহ, তুমার হাতে এত বরকত,আমি এই টাকাদিয়ে অনেক কিছু করতে পেরেছি।আমি খুবই খুশি।  আমি তুমাকে বেশি টাকা ফেরত দিব। উল্লাসিত হয়ে বলেছিলেন কথা গুলো।
আমি সাথে সাথে বলি, আমার ১৫০ পাউন্ড ই দেবেন। আমি বেশি নেব না। পরে উনি বলেন তুমি যদি না নেও আমি আর কোনোদিন ই তুমার কাছ থেকে টাকা নিব না। মানে চাইবেন না। ( আমি বলেছি আচ্ছা) তবে আমি মনে প্রানে এটাই চাইছিলাম যে উনি কোনো সমস্যায় পড়লে আমার কাছে আসুক, অন্য কারো কাছে গিয়ে হাত না পাতুক, তাই আচ্ছা বলেছিলাম।
আজ উনি আমাকে টাকা ব্যাক দেওয়ার সময় ১৫০ পাউন্ডের চেয়ে কিছু বেশি দিয়েছেন। পরে উনার সাথে এ নিয়ে কথা বললে উনি বললেন - আমি এ নিয়ে আর কথা বললে উনি আমার কাছ থেকে আর কোনদিন হেল্প নিবেন না। আর এই টাকা টা আমি যেকোনো কাজে ব্যাবহার করে দিতে।
এখন এই টাকা গুলো কি সুদ হবে?  আমি কী ব্যাবহার করতে পারব?  কাওকে কী দান করতে পারব?  বা মাসজিদে বা মাদরাসায় - মানে ইসলামিক কাজে?

1 Answer

0 votes
by (63,450 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাবঃ-

https://ifatwa.info/54143/   নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে, হাদীস শরীফে এসেছেঃ-

 عَنْ أَبِي رَافِعٍ، مَوْلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ اسْتَسْلَفَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَكْرًا فَجَاءَتْهُ إِبِلٌ مِنَ الصَّدَقَةِ . قَالَ أَبُو رَافِعٍ فَأَمَرَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ أَقْضِيَ الرَّجُلَ بَكْرَهُ . فَقُلْتُ لاَ أَجِدُ فِي الإِبِلِ

إِلاَّ جَمَلاً خِيَارًا رَبَاعِيًّا . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَعْطِهِ إِيَّاهُ فَإِنَّ خِيَارَ النَّاسِ أَحْسَنُهُمْ قَضَاءً "

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আযাদকৃত দাস আবূ রাফি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার একটি উট ঋণ নিয়েছিলেন। অনন্তর তাঁর হাতে সাদাকার কিছু উট আসে। আবূ রাফি’ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে ব্যাক্তির জওয়ান উটটি আদায় করে দিতে নির্দেশ দিলেন। আমি বললাম, এ গুলির মাঝে ছয় বছর বয়সী পছন্দনীয় উট ছাড়া তাকে আদায় করার মত আর কোন উট তো পাচ্ছি না। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তা-ই তাকে দিয়ে দাও। কেননা, সর্বোত্তম ব্যক্তি হলো সেই ব্যক্তি যে ব্যক্তি পরিশোধের ব্যাপারে উত্তম। (মুসলিম ১৬০০, তিরমিযী ১৩১৮, নাসায়ী ৪৬১৭, আবূ দাউদ ৩৩৪৬, ইবনু মাজাহ ২২৮৫, আহমাদ ২৬৬৪০, মুওয়াত্তা মালেক ১৩৮৪, দারেমী ২৫৬৫।)

حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَيَّاشٍ، حَدَّثَنِي عُتْبَةُ بْنُ حُمَيْدٍ الضَّبِّيُّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي إِسْحَاقَ الْهُنَائِيِّ، قَالَ سَأَلْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ الرَّجُلُ مِنَّا يُقْرِضُ أَخَاهُ الْمَالَ فَيُهْدِي لَهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا أَقْرَضَ أَحَدُكُمْ قَرْضًا فَأَهْدَى لَهُ أَوْ حَمَلَهُ عَلَى الدَّابَّةِ فَلاَ يَرْكَبْهَا وَلاَ يَقْبَلْهُ إِلاَّ أَنْ يَكُونَ جَرَى بَيْنَهُ وَبَيْنَهُ قَبْلَ ذَلِكَ " .

ইহয়াহইয়া ইবনে আবূ ইসহাক আল-হানাঈ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, আমাদের মধ্যে কেউ তার ভাইক মাল করয দেয়, অতঃপর করযদার তাকে উপঢৌকন দেয়। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ কোন জিনিস করয দেয়ার পর করযদার তাকে কিছু উপঢৌকন দিলে বা তার সওয়ারীতে আরোহণ করাতে চাইলে সে যেন তাতে আরোহণ না করে এবং উপঢৌকন গ্রহণ না করে। তবে তাদের মধ্যে আগে থেকেই এরূপ সৌজন্যমূলক বিনিময়ের প্রচলন থাকলে আপত্তি নেই। (ইবনে মাজাহ ২৪৩২.ইরওয়া ১৪০০, মিশকাত ২৮৩১।)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,

ঋন পরিশোধের সময় উত্তম জিনিস দ্বারা পরিশোধ করা সুন্নাত। যেমন টাকার ক্ষেত্রে নতুন টাকা তথা ভালো টাকায় পরিশোধ করা সুন্নাত। তবে এক্ষেত্রে টাকা বেশি দেয়া সুন্নাত নয়,বরং এটি সূদ।

তবে কিছু ইসলামী স্কলারগন বলেছেন যে কোনো এলাকায় যদি এভাবে সূদের প্রচলন না থাকে,সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত চাওয়া ছাড়াই এবং অতিরিক্তের আগ্রহ থাকা ছাড়াই যদি নিজ থেকে করজ গ্রহিতা বাড়িয়ে দেয়, তাহলে সেটি হাদিয়া হিসেবে নেয়া যাবে। কিন্তু আমাদের সমাজে যেহেতু ঋন পরিশোধের ক্ষেত্রে সূদ গ্রহনের ব্যাপক প্রচলন রয়েছে, সুতরাং আমাদের সমাজে এটি সূদই হবে। জায়েজ হবেনা।

হ্যাঁ যদি তাদের (ঐ ২ ব্যাক্তির) মাঝে আগে থেকেই হাদিয়া আদান প্রদান চালু থেকে থাকে,তাহলে এখন চাওয়া ছাড়া হাদিয়া হিসেবে দিলে তাহা হাদিয়া বলে গন্য হবে।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কাউকে বিনা সুদে ঋণ দেওয়া পর, যদি ঐ ঋণ গ্রহণকারী ব্যক্তি নিজের পক্ষ থেকে সন্তুষ্টির সাথে কিছু অতিরিক্ত দিয়ে দেয়, তাহলে তা জায়েয হবে। তবে নিজের অন্তরে মুনাফার প্রত্যাশা ও লোভ কোনটাই রাখা যাবে না। সুতরাং আপনার বিবরণ অনুযায়ী আপনার জন্য অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করত যেকোন দ্বীনি কাজে ব্যবহার করা জায়েয আছে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...