বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
জবাবঃ-
রাসূলুল্লাহ সাঃ এর উপর দুরুদ পাঠ আল্লাহ তা'আলার নৈকট্য অর্জনের উত্তম মাধ্যম।আল্লাহ তা'আলা নবীর উপর দুরুদ পাঠের নির্দেশ দিচ্ছেন।এবং পাঠকারীদের প্রশংসা করেছেন।এবং এই দুরুদ পাঠকে গোনাহ মাফের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।প্রয়োজন পূরণের মাধ্যম হিসেবে উল্লেখ করেছে।
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻭَﻣَﻠَﺎﺋِﻜَﺘَﻪُ ﻳُﺼَﻠُّﻮﻥَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﺻَﻠُّﻮﺍ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠِّﻤُﻮﺍ ﺗَﺴْﻠِﻴﻤًﺎ
আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি রহমত প্রেরণ করেন। হে মুমিনগণ! তোমরা নবীর জন্যে রহমতের তরে দোয়া কর এবং তাঁর প্রতি সালাম প্রেরণ কর।(সূরা আহযাব-৫৬)
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻣَﻦْ ﺻَﻠَّﻰ ﻋَﻠَﻲَّ ﺻَﻠَﺎﺓً ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺑِﻬَﺎ ﻋَﺸْﺮًﺍ
যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দুরুদ পড়বে,আল্লাহ তা'আলা তার উপর দশবার রহমত বর্ষণ করবে।(সহীহ মুসলিম-৩৮৪)
হযরত উবাই ইবনে কা'ব রাযি, থেকে বর্ণিত,
ﻭﻋﻦ ﺃُﺑَﻲِّ ﺑْﻦِ ﻛَﻌْﺐٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗَﺎﻝَ ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺇِﺫَﺍ ﺫَﻫَﺐَ ﺛُﻠُﺜَﺎ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞِ ﻗَﺎﻡَ ﻓَﻘَﺎﻝَ : ( ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﺍﺫْﻛُﺮُﻭﺍ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺍﺫْﻛُﺮُﻭﺍ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺟَﺎﺀَﺕْ ﺍﻟﺮَّﺍﺟِﻔَﺔُ ﺗَﺘْﺒَﻌُﻬَﺎ ﺍﻟﺮَّﺍﺩِﻓَﺔُ ﺟَﺎﺀَ ﺍﻟْﻤَﻮْﺕُ ﺑِﻤَﺎ ﻓِﻴﻪِ ﺟَﺎﺀَ ﺍﻟْﻤَﻮْﺕُ ﺑِﻤَﺎ ﻓِﻴﻪِ ) ﻗَﺎﻝَ ﺃُﺑَﻲٌّ : ﻗُﻠْﺖُ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺇِﻧِّﻲ ﺃُﻛْﺜِﺮُ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓَ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ، ﻓَﻜَﻢْ ﺃَﺟْﻌَﻞُ ﻟَﻚَ ﻣِﻦْ ﺻَﻠَﺎﺗِﻲ ؟ ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻣَﺎ ﺷِﺌْﺖَ !!ﻗَﺎﻝَ : ﻗُﻠْﺖُ : ﺍﻟﺮُّﺑُﻊَ ؟ ! ﻗَﺎﻝَ ﻣَﺎ ﺷِﺌْﺖَ ، ﻓَﺈِﻥْ ﺯِﺩْﺕَ ﻓَﻬُﻮَ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻚَ !!ﻗُﻠْﺖُ : ﺍﻟﻨِّﺼْﻒَ ؟ ! ﻗَﺎﻝَ : ﻣَﺎ ﺷِﺌْﺖَ ، ﻓَﺈِﻥْ ﺯِﺩْﺕَ ﻓَﻬُﻮَ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻚَ !!ﻗَﺎﻝَ : ﻗُﻠْﺖُ ﻓَﺎﻟﺜُّﻠُﺜَﻴْﻦِ ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﻣَﺎ ﺷِﺌْﺖَ ، ﻓَﺈِﻥْ ﺯِﺩْﺕَ ﻓَﻬُﻮَ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻚَ !!ﻗُﻠْﺖُ : ﺃَﺟْﻌَﻞُ ﻟَﻚَ ﺻَﻠَﺎﺗِﻲ ﻛُﻠَّﻬَﺎ ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﺇِﺫًﺍ ﺗُﻜْﻔَﻰ ﻫَﻤَّﻚَ ، ﻭَﻳُﻐْﻔَﺮُ ﻟَﻚَ ﺫَﻧْﺒُﻚَ ) ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ( 2457 ) ﻭﺣﺴﻨﻪ ﺍﻷﻟﺒﺎﻧﻲ ﻓﻲ ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ .
রাত্রির শেষভাগে রাসূলুল্লাহ সাঃ ঘুম থেকে উঠে লোকদের উদ্দেশ্য করে বলতে,হে লোকসকল!আল্লাহকে স্বরণ করো!অাল্লাহকে স্বরণ করো!কিয়ামত(মিক্বাঈল আঃ কর্তৃক প্রথম ফু) স্বন্নিকটে, কিয়ামত(দ্বিতীয় ফু) স্বন্নিকটে। মৃত্যু তার সঙ্গ-সাথী নিয়ে উপস্থিত।মৃত্যু তার সঙ্গ-সাথী নিয়ে উপস্থিত।উবাই ইবনে কা'ব রাযি বলেন,হে রাসূলুল্লাহ সাঃ! আমি আপনার উপর বেশী করে দুরুদ পড়তে চাই!আমি আমার দু'আয় কতটুকু আপনার উপর দুরুদ কে স্থান দেবো?(অর্থাৎ অন্যান্য দু'আর তুলনায় আপনার উপর কতটুকু বেশী দুরুদ পেশ করব?)তখন রাসূলুল্লাহ বললেন, তুমি যা চাও।আমি বললাম,এক চতুর্থাংশ?
তিনি উত্তরে বললেন,তুমি যা চাও।তুমি যত বেশী পড়বে সেটা তোমার জন্য কল্যাণকর হবে।আমি আবার বললাম যে, তাহলে অর্ধেক?তিনি উত্তরে বললেন,তুমি যা চাও।তুমি যত বেশী পড়বে সেটা তোমার জন্য কল্যাণকর হবে।তিনি বলেন,অতঃপর আমি বললাম,দুই তৃতীয়াংশ? তিনি উত্তরে বললেন,তুমি যা চাও।তুমি যত বেশী পড়বে সেটা তোমার জন্য কল্যাণকর হবে।শেষপর্যন্ত আমি বললাম,আমার দু'আর সমস্ত অংশজুড়ে আপনার দুরুদ-কে স্থান দেবো?তিনি উত্তরে বললেন,তাহলে তো তোমার উদ্দেশ্য(দুনিয়া ও আখেরাতে) পূর্ণ হবে এবং তোমার গোনাহ সমূহকে ক্ষমা করে দেয়া হবে।(সুনানে তিরমিযি-২৪৫৭,মিশকাতুল মাসাবিহ-৯২৯)
মোল্লা আলী কারী রাহ উক্ত হাদীসের ব্যখ্যায় বলেন,
مَعْنَى الْحَدِيثِ كَمْ أَجْعَلُ لَكَ مِنْ دُعَائِي الَّذِي أَدْعُو بِهِ لِنَفْسِي؟ وَلَمْ يَزَلْ يُفَاوِضُهُ لِيُوقِفَهُ عَلَى حَدٍّ مِنْ ذَلِكَ، وَلَمْ يَرَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يَحُدَّ لَهُ ذَلِكَ لِئَلَّا تَلْتَبِسَ الْفَضِيلَةُ بِالْفَرِيضَةِ أَوَّلًا، ثُمَّ لَا يُغْلِقَ عَلَيْهِ بَابَ الْمَزِيدِ ثَانِيًا، فَلَمْ يَزَلْ يَجْعَلُ الْأَمْرَ إِلَيْهِ دَاعِيًا لِقَرِينَةِ التَّرْغِيبِ وَالْحَثِّ عَلَى الْمَزِيدِ، حَتَّى قَالَ: أَجْعَلُ لَكَ صَلَاتِي كُلَّهَا، أَيْ: أُصَلِّي عَلَيْكَ بَدَلَ مَا أَدْعُو بِهِ لِنَفْسِي، فَقَالَ: " إِذًا يُكْفَى هَمُّكَ "، أَيْ: أَهَمَّكَ مِنْ أَمْرِ دِينِكَ وَدُنْيَاكَ، وَذَلِكَ لِأَنَّ الصَّلَاةَ عَلَيْهِ مُشْتَمِلَةٌ عَلَى ذِكْرِ اللَّهِ، وَتَعْظِيمِ الرَّسُولِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَالِاشْتِغَالِ بِأَدَاءِ حَقِّهِ عَنْ أَدَاءِ مَقَاصِدِ نَفْسِهِ، وَإِيثَارِهِ بِالدُّعَاءِ عَلَى نَفْسِهِ مَا أَعْظَمَهُ مِنْ خِلَالٍ جَلِيلَةِ الْأَخْطَارِ وَأَعْمَالٍ كَرِيمَةِ الْآثَارِ،
হাদীসের অংশ-"আমি আমার দু'আয় কতটুকু আপনার উপর দুরুদ কে স্থান দেবো?(অর্থাৎ অন্যান্য দু'আর তুলনায় আপনার উপর কতটুকু বেশী দুরুদ পেশ করব?)" -কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাঃ নির্দিষ্টভাবে কোনো সংখ্যাকে সীমাবদ্ধ করে উল্লেখ করেননি। কারণ
(ক) যাতে করে ফযিলত কোনো নির্ধারিত জিনিষের সাথে সীমাবদ্ধ না হয়।
(খ)এবং যাতেকরে অতিরিক্ত দুরুদ পড়ার আগ্রহে ভাটা না পড়ে।সুতরাং রাসূলুল্লাহ সাঃ অতিরিক্ত দুরুদ পাঠের প্রতি আগ্রহ ও অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করতঃ দুরুদের কোনো সীমারেখা বেধে দেননি।
যার ফলশ্রুতিতে অনুপ্রাণিত হয়ে সাহাবী উবাই ইবনে কা'ব বলেন, আমি আমার দু'আর সমস্ত অংশজুড়ে দুরুদ শরীফকে রাখবো।তখন জবাবে রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছিলেন,তাহলে তো তোমার দুনিয়াবি ও উখরাবি সকল প্রকার মাকসাদ পূর্ণ হবে।কেননা দুরুদ শরীফের মধ্যে আল্লাহর যিকির রয়েছে।তাছাড়া রাসূলুল্লাহ সাঃ কে সম্মাণ প্রদর্শন ও তাহার হক্বকে আদায় করা নিজের প্রয়োজনের তুলনায়, এবং দু'আতে নিজের উপর তাঁহাকে প্রধান্য দেয়া অত্যন্ত মহত্ত্বপূর্ণ এবং ফযিলতপূর্ণ আ'মল ও প্রশংসনীয় কাজ।
হযরত ইবনে মাসউদ রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻣَﺴْﻌُﻮﺩٍ ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ : ( ﺃَﻭْﻟَﻰ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﺑِﻲ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﺃَﻛْﺜَﺮُﻫُﻢْ ﻋَﻠَﻲَّ ﺻَﻠَﺎﺓً )
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যে ব্যক্তি আমার উপর বেশী করে দুরুদ পড়বে সে কিয়ামতের দিন আমার শাফায়তের যোগ্য হবে।(সুনানে তিরমিযি-৪৮৪)
হযরত ইবনে মাসউদের হাদীস।আমর ইবনে সালামাহ থেকে বর্ণিত, একবার মসজিদে কিছুলোককে ১০০বার করে করে বিভিন্ন প্রকার তাসবিহ পড়তে দেখে ইবনে মাসউদ রাযি তাদের সেই কাজের অস্বীকৃতি জানিয়ে বললেন,
তোমাদের এ কাজ এটাই প্রমাণ করে যে, "হয়তো তোমরা মুহাম্মাদ সাঃ এর সাহাবী থেকেও বেশী হেদায়ত প্রাপ্ত অথবা গোমড়াহির দরজাকে উন্মোক্ত কারী।("সুনানে দারেমী-২০৪)
যেমন বর্ণিত রয়েছে-
ﻋﻦ ﻋﻤﺮﻭ ﺑﻦ ﺳﻠﻤﺔ ﻗَﺎﻝَ : ﻛُﻨَّﺎ ﻧَﺠْﻠِﺲُ ﻋَﻠَﻰ ﺑَﺎﺏِ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻣَﺴْﻌُﻮﺩٍ ﻗَﺒْﻞَ ﺻَﻠَﺎﺓِ ﺍﻟْﻐَﺪَﺍﺓِ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺧَﺮَﺝَ ﻣَﺸَﻴْﻨَﺎ ﻣَﻌَﻪُ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟْﻤَﺴْﺠِﺪِ ﻓَﺠَﺎﺀَﻧَﺎ ﺃَﺑُﻮ ﻣُﻮﺳَﻰ ﺍﻟْﺄَﺷْﻌَﺮِﻱُّ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺃَﺧَﺮَﺝَ ﺇِﻟَﻴْﻜُﻢْ ﺃَﺑُﻮ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ ﺑَﻌْﺪُ ؟ ﻗُﻠْﻨَﺎ ﻟَﺎ ﻓَﺠَﻠَﺲَ ﻣَﻌَﻨَﺎ ﺣَﺘَّﻰ ﺧَﺮَﺝَ ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺧَﺮَﺝَ ﻗُﻤْﻨَﺎ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺟَﻤِﻴﻌًﺎ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻟَﻪُ ﺃَﺑُﻮ ﻣُﻮﺳَﻰ ﻳَﺎ ﺃَﺑَﺎ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ ﺇِﻧِّﻲ ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻤَﺴْﺠِﺪِ ﺁﻧِﻔًﺎ ﺃَﻣْﺮًﺍ ﺃَﻧْﻜَﺮْﺗُﻪُ ﻭَﻟَﻢْ ﺃَﺭَ ﻭَﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻟِﻠَّﻪِ ﺇِﻟَّﺎ ﺧَﻴْﺮًﺍ ﻗَﺎﻝَ ﻓَﻤَﺎ ﻫُﻮَ ؟ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺇِﻥْ ﻋِﺸْﺖَ ﻓَﺴَﺘَﺮَﺍﻩُ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻤَﺴْﺠِﺪِ ﻗَﻮْﻣًﺎ ﺣِﻠَﻘًﺎ ﺟُﻠُﻮﺳًﺎ ﻳَﻨْﺘَﻈِﺮُﻭﻥَ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓَ ﻓِﻲ ﻛُﻞِّ ﺣَﻠْﻘَﺔٍ ﺭَﺟُﻞٌ ﻭَﻓِﻲ ﺃَﻳْﺪِﻳﻬِﻢْ ﺣَﺼًﻰ ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ ﻛَﺒِّﺮُﻭﺍ ﻣِﺎﺋَﺔً ﻓَﻴُﻜَﺒِّﺮُﻭﻥَ ﻣِﺎﺋَﺔً ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ ﻫَﻠِّﻠُﻮﺍ ﻣِﺎﺋَﺔً ﻓَﻴُﻬَﻠِّﻠُﻮﻥَ ﻣِﺎﺋَﺔً ﻭَﻳَﻘُﻮﻝُ ﺳَﺒِّﺤُﻮﺍ ﻣِﺎﺋَﺔً ﻓَﻴُﺴَﺒِّﺤُﻮﻥَ ﻣِﺎﺋَﺔً ﻗَﺎﻝَ ﻓَﻤَﺎﺫَﺍ ﻗُﻠْﺖَ ﻟَﻬُﻢْ ؟ ﻗَﺎﻝَ ﻣَﺎ ﻗُﻠْﺖُ ﻟَﻬُﻢْ ﺷَﻴْﺌًﺎ ﺍﻧْﺘِﻈَﺎﺭَ ﺭَﺃْﻳِﻚَ ﻭَﺍﻧْﺘِﻈَﺎﺭَ ﺃَﻣْﺮِﻙَ ﻗَﺎﻝَ ﺃَﻓَﻠَﺎ ﺃَﻣَﺮْﺗَﻬُﻢْ ﺃَﻥْ ﻳَﻌُﺪُّﻭﺍ ﺳَﻴِّﺌَﺎﺗِﻬِﻢْ ﻭَﺿَﻤِﻨْﺖَ ﻟَﻬُﻢْ ﺃَﻥْ ﻟَﺎ ﻳَﻀِﻴﻊَ ﻣِﻦْ ﺣَﺴَﻨَﺎﺗِﻬِﻢْ ﺛُﻢَّ ﻣَﻀَﻰ ﻭَﻣَﻀَﻴْﻨَﺎ ﻣَﻌَﻪُ ﺣَﺘَّﻰ ﺃَﺗَﻰ ﺣَﻠْﻘَﺔً ﻣِﻦْ ﺗِﻠْﻚَ ﺍﻟْﺤِﻠَﻖِ ﻓَﻮَﻗَﻒَ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢْ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻣَﺎ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺃَﺭَﺍﻛُﻢْ ﺗَﺼْﻨَﻌُﻮﻥَ ؟ ﻗَﺎﻟُﻮﺍ ﻳَﺎ ﺃَﺑَﺎ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ ﺣَﺼًﻰ ﻧَﻌُﺪُّ ﺑِﻪِ ﺍﻟﺘَّﻜْﺒِﻴﺮَ ﻭَﺍﻟﺘَّﻬْﻠِﻴﻞَ ﻭَﺍﻟﺘَّﺴْﺒِﻴﺢَ ﻗَﺎﻝَ ﻓَﻌُﺪُّﻭﺍ ﺳَﻴِّﺌَﺎﺗِﻜُﻢْ ﻓَﺄَﻧَﺎ ﺿَﺎﻣِﻦٌ ﺃَﻥْ ﻟَﺎ ﻳَﻀِﻴﻊَ ﻣِﻦْ ﺣَﺴَﻨَﺎﺗِﻜُﻢْ ﺷَﻲْﺀٌ ﻭَﻳْﺤَﻜُﻢْ ﻳَﺎ ﺃُﻣَّﺔَ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻣَﺎ ﺃَﺳْﺮَﻉَ ﻫَﻠَﻜَﺘَﻜُﻢْ ﻫَﺆُﻟَﺎﺀِ ﺻَﺤَﺎﺑَﺔُ ﻧَﺒِﻴِّﻜُﻢْ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻣُﺘَﻮَﺍﻓِﺮُﻭﻥَ ﻭَﻫَﺬِﻩِ ﺛِﻴَﺎﺑُﻪُ ﻟَﻢْ ﺗَﺒْﻞَ ﻭَﺁﻧِﻴَﺘُﻪُ ﻟَﻢْ ﺗُﻜْﺴَﺮْ ﻭَﺍﻟَّﺬِﻱ ﻧَﻔْﺴِﻲ ﺑِﻴَﺪِﻩِ ﺇِﻧَّﻜُﻢْ ﻟَﻌَﻠَﻰ ﻣِﻠَّﺔٍ ﻫِﻲَ ﺃَﻫْﺪَﻯ ﻣِﻦْ ﻣِﻠَّﺔِ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﺃَﻭْ ﻣُﻔْﺘَﺘِﺤُﻮ ﺑَﺎﺏِ ﺿَﻠَﺎﻟَﺔٍ ﻗَﺎﻟُﻮﺍ ﻭَﺍﻟﻠَّﻪِ ﻳَﺎ ﺃَﺑَﺎ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ ﻣَﺎ ﺃَﺭَﺩْﻧَﺎ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟْﺨَﻴْﺮَ ﻗَﺎﻝَ ﻭَﻛَﻢْ ﻣِﻦْ ﻣُﺮِﻳﺪٍ ﻟِﻠْﺨَﻴْﺮِ ﻟَﻦْ ﻳُﺼِﻴﺒَﻪُ ﺇِﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺃَﻥَّ ﻗَﻮْﻣًﺎ ﻳَﻘْﺮَﺀُﻭﻥَ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥَ ﻟَﺎ ﻳُﺠَﺎﻭِﺯُ ﺗَﺮَﺍﻗِﻴَﻬُﻢْ ﻭَﺍﻳْﻢُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻣَﺎ ﺃَﺩْﺭِﻱ ﻟَﻌَﻞَّ ﺃَﻛْﺜَﺮَﻫُﻢْ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﺛُﻢَّ ﺗَﻮَﻟَّﻰ ﻋَﻨْﻬُﻢْ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻋَﻤْﺮُﻭ ﺑْﻦُ ﺳَﻠَﻤَﺔَ ﺭَﺃَﻳْﻨَﺎ ﻋَﺎﻣَّﺔَ ﺃُﻭﻟَﺌِﻚَ ﺍﻟْﺤِﻠَﻖِ ﻳُﻄَﺎﻋِﻨُﻮﻧَﺎ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﻨَّﻬْﺮَﻭَﺍﻥِ ﻣَﻊَ ﺍﻟْﺨَﻮَﺍﺭِﺝِ .سنن دارمى-٢٠٤
তবে ইবনে মাসউদ রাযি এর এই হাদীস সাধারণত সংখ্যার বিরোধী নয়।বরং হাদীসে ভাষ্য অনুযায়ী সংখ্যা ঐ সব ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য যেখানে হাদীস দ্বারা বর্ণিত রয়েছে।আর যেসব ক্ষেত্রে হাদীসে সংখ্যার আলোচনা আসেনি সেসব ক্ষেত্রে সংখ্যা নির্ধারণপূর্ব বিশেষ কোনো পদ্ধতির যিকির-তাসবীহ কে অস্বীকার করাই মূলত নিষেধ এবং সেটাই ছিলো ইবনে মাসউদ রাযি এর উদ্দেশ্য।
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
মোটকথাঃ
কিছু দু'আ র বেলায় হাদীসে সংখ্যার উল্লেখ রয়েছে।সুতরাং সেগুলোকে উক্ত সংখ্যায় পড়াই সুন্নাত।অন্যদিকে কিছু দু'আ এমন রয়েছে যেগুলোতে সংখ্যার উল্লেখ আসেনি।সুতরাং সেগুলো কে বিশেষ কোনো সংখ্যা দ্বারা আখ্যায়িত করা,বা উক্ত সংখ্যার সাথে জরুরী মনে করা ঠিক হবে না।এমনকি বাড়াবাড়ি করলে বেদ'আত পর্যন্ত হুকুম আসবে।
হ্যা পূর্ববর্তী কিছু নেককার বান্দাগণ(সালাফে সালেহীন) তাদের অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু সংখ্যার পরামর্শ দেন বা পদ্ধতির পরামর্শ দেন,সেগুলোকে জরুরী বা সুন্নত মনে না করে আ'মলে নেয়া যেতে পারে।তবে এক্ষেত্রে এমন মনোভাব রাখতে হবে যে,উক্ত সংখ্যা বা পদ্ধতি আমাদের উদ্দেশ্য নয় বরং আমাদের উদ্দেশ্য হল, বেশী বেশী করে পড়া।কিন্তু কতটুকু পড়ালে বেশী হবে?সেটা তো আমরদের জানা নেই।তাই নেককার বান্দাদের পরামর্শকৃত একটা সংখ্যা বা পদ্ধতিকে আপাতত আমরা বেশীর মানদন্ড হিসেবে ধরে নিচ্ছি।এবং সাথে সাথে নিজেকে খালিছভাবে আল্লাহর সামনে উপস্থাপন করছি।হয়তো এই বেশী পড়ার মনোভাব থাকায় আল্লাহ আমাদের দু'আ কে কবুল করে নিতে পারেন।জাযাকুমুল্লাহ।