আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
41 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (5 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
আমার এক পরিচিত গোপনে বিয়ে করেছে।এই বিয়ের ব্যাপারে কেউ জানেনা, ছেলের পরিবারর কেউও জানেনা,মেয়ের পরিবারের কেউও জানেনা।তবে ওদের সম্পর্কের ব্যাপারে সবাই জানতো।বাসায় বলার পরও বিয়ে না দেওয়ায় বা প্রতিষ্ঠিত হবে তারপর বিয়ে দিবে বলায় তারা নিজেরা কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে করে সম্পর্ক হালাল করে নেয়।২ জন ছাড়া কেউই তাদের এই বিয়ের ব্যাপারে জানেনা। কিন্তু এখন কথা হচ্ছে ছেলে অনেকক রাগী,বা অযথাই বউকে সন্দেহ করে এবং রাগে তিন তালাক দিয়েছে মেসেজে।১মে যখন ১ তালাক আর ২ তালাক দিয়েছিল তখন মেয়েটা অনেক রিকুয়েষ্ট করে  যে তালাক  বললেই হয়ে যায়,রাগের  মাথায় আর যাই করেন না কেন তালাক শব্দটা উচ্চারণ করিয়েন না।

কিন্তু ওনি রাগের মাথায় তিন তালাক দিয়ে দিছে।তারপর ভিন্ন মুফতির থেকে জানতে পারে যে তিন তালাক হয়ে গেছে আর সংসার করা সম্ভব না,আর কখনো বিয়ে করাও সম্ভব না।তালাক দেওয়ার কিছুদিন পর্যন্ত  ছেলেটা মেয়েটার পিছু ছাড়তে চায়তোনা,বলতো যে না তালাক হয়নি,আরে ফতোয়া আছে, রাগের মাথায় দিলে তালাক হয়না।আরো নানা কথা,কিন্তু ৩/৪ জন মুফতিকে জিজ্ঞেস করা হয়েছে সবাই বলেছে তিন তালাক হয়ে গেছে,তো যাই হোক,মেয়েটাও অনেকক কষ্ট হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহর ফয়সালা মেনে নিয়েছে,আর,ওনার হাসবেন্ডকে বুঝিয়েছে যে যা হওয়ার হয়েই গেছে,নতুন করে জীবন শুরু করুন।সারাজীবন হারামে থাকার কোনো মানে হয়না।নতুন কাউকে বিয়ে করে নিন।আমার সাথে আর সম্ভব না।এভাবে ছেলেটাকে বুঝিয়ে মেয়েটা সমস্ত যোগাযোগ ছিন্ন করে দেয়,আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। তারা ২ জনই অল্প বয়সী,অনার্স ১ম বর্ষ শেষ হলো মাত্র। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে তাদের বিয়ের বিষয়টাতো একদম গোপন ছিলো।ছেলেটা মেয়েটাকে বলেছে এই বিয়ের কথা যেন কাউকে না বলে কখনো।ওনিও নেক্সটে যাকে বিয়ে করবে তাকে বলবেনা।

কিন্তু, এখন মেয়েটা অনেককল মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।জীবনে কখনো  এমন হবে তা কল্পনাও করেনি।কখনো ভাবেনি যে তাদের তালাক হয়ে যাবে, আলাদা হতে হবে।কিন্তু, ছেলের অতিরিক্ত রাগের কারণে আজকে এই দিন দেখতে হলো।

সবাই তো জানে মেয়েটা অবিবাহিত। এখন,মেয়ের পরিবার হয়তো মেয়ের জন্য বিয়ে দেখবে,পাত্র দেখবে।এখন,মেয়েটা এত খারাপ অবস্থা যে সে কি করবে তা  বুঝতে পারছেনা।

ওর সাথে যার বিয়ে ঠিক হবে তাকে কি তার আগের বিয়ের ব্যাপরে জানানো প্রয়োজন না?আর না জানালে কি তাকে ঠকানো হবেনা?কি করবে মেয়েটা এখন,মেয়ের পরিবারকেও তো বলতে পারবেনা এই বিয়ের ব্যাপারে।

এখন কি করবে মেয়েটা,শুধু কি আন্তরিক তওবাহই যথেষ্ট, নাকি যার সাথে বিয়ে হবে তাকে এই অতীত জানাতে হবে।

আবার মেয়েটা ভয়েও আছে যদি অতীত জানার পর যে বিয়ের প্রস্তাব দিতে আসবে সে সবার সাথে বা মেয়ের পরিবারের কাছে বলে দেয়।তখন তো  মেয়েটা আরো ঝামেলায় পড়বে।

কি করবে মেয়েটা?

আবার,মেয়েটা ভেবেছিলো তার  মায়ের সাথে বিষয়টা শেয়ার করবে।কিন্তু, মায়ের সাথে শেয়ার করার পর তো মা বিষয়টা গোপন রাখতে চাওয়ার সম্ভাবনা বেশি,কারণ,এর কারণে বিয়ে ভেঙে যেতে পারে।

ওদের বিয়ে ১ বছরের মতো টিকে ছিলো।তবে বিয়ের পর ৫ মাস তাদের শুধু ফোনেই যোগাযোগ হতো।ছেলে এক জায়গায় মেয়ে আরেক জায়গায় থাকতো।আর,এরপর তারা কাছাকাছি জায়গায় থাকতো তবে একসাথে না,মাসে ১ দিন বা ২ দিন একসাথে সময় কাটাতো।আর,এরমধ্যেই ছেলেটা ১ম তালাক দিয়ে দেয়। আর,তিন তালাক দেওয়ার আগে তিন মাস তারা একসাথেই ছিলো।পরেই রাগে তিন তালাক দিয়ে দেয়,এমনকি ঐ টাইমে মেয়েটাকে অনেক প্রেসারও দিতো,গায়ে হাতও তুলতো।ছেলেটা সহ্য করতে পারতোনা মেয়ে তার পরিবারের মানুষদের সাথে বেশি কথা বলুক,বা ওদের কাছে যাক,মেয়েটা বলতো যে দেখ আমাদের বিয়েটা তো গোপন,তুমি পরিবার এনে বিয়ে করো তখন তোমার সব কথা শুনতে পারবো,মেয়ের পরিবার বলেছিলো ছেলের পরিবার আনতে,বিয়ে দিয়ে দিবে,কিন্তু ছেলের পরিবার আসেনি।যাই হোক পরে তো তালাক দিয়েই দিছে।

কিন্তু এখন মেয়েটা কি করবে?মেয়েটার জীবন যে নষ্ট হয়ে গেল,এই অতীত জানলে কেউ তো তাকে আর বিয়েও করতে চাইবেনা, এদিকে পরিবারের মানুষ বিয়ে দেখতেছে।আবার, মেয়ের অনেক খারাপও লাগে এটা ভাবলে যে অতীত না জানিয়ে বিয়ে করে ফেললে হয়তো ঠকানো হবে।এখন মেয়েটা কি করবে,একটু নসীহা করেন দয়া করে।মেয়ে চায়না পরিবারের কেউ জানুককারন,বিয়েটার ব্যাপারে একদমই কেউ জানেনা  এখন তো সম্পর্কই নাই,এখন বলে আর কি হবে?কত আঘাত পাবে তারা এখন কি করবে মেয়েটা?যার সাথে বিয়ে হবে তার সাথে অতীত কি গোপন রাখবে?নাকি অতীতের সেই বিয়ের কথা বলবে যে বিয়ে করতে চাইবে তাকে,আর বললেও কিভাবে বলবে?একটু দয়া করে জানান,অনেকক কষ্টে আর মানসিক যন্ত্রণায় আছে

আর,যদি গোপন রেখে বিয়ে করে ফেলে তাহলে কি গুনাহ হবে?নাকি সুযোগ আছে গোপন রাখার।

কি করলে আল্লাহ মেয়েটার উপর সন্তুষ্ট হবে,আল্লাহ তো ক্ষমাশীল,ইন শা আল্লাহ তিনি হয়তো ক্ষমা করে দিবেন, কিন্তু মেয়েটা কিভাবে পরিস্থিতি সামলাব। একটু জানান।

1 Answer

0 votes
by (579,240 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/96754 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
ধোকা এবং প্রতারণা সম্পর্কে হাদীসে ধমকি বর্ণিত হয়েছে,
হযরত আবু-হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,
عن أبي هريرة رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : ( مَنْ حَمَلَ عَلَيْنَا السِّلَاحَ ، فَلَيْسَ مِنَّا ، وَمَنْ غَشَّنَا ، فَلَيْسَ مِنَّا ) 
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন-যে ব্যক্তি আমরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে অস্র ধরলো, সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।এবং যে কাউকে ধোকা দিলো সেও আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।(সহীহ মুসলিম-১৪৬)

হযরত আবু-হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,
عن أبي هريرة رضي الله عنه – أيضاً - ، وفيه : مَنْ غَشَّ ، فَلَيْسَ مِنِّي

ভাবার্থঃ যে কাউকে ধোকা দিলো সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।(সহীহ মুসলিম-১৪৭)

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫}

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}

আপনি যদি আগের সেই বিবাহের কথা গোপন করে নতুন বিবাহ করেন, সেক্ষেত্রে ২য় স্বামী দেড়িতে হলেও কোনো ভাবে বিষয়টি জেনে যেতেও পারেন।

তারা যদি বিবাহের পর বিষয়টি জানে,তাহলে খুবই মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
পারিবারিকভাবে বিবাহের পর আবারো বিচ্ছেদের সম্ভাবনা হতে পারে।
যাহা কোনো ভাবেই কাম্য নয়। 

এক্ষেত্রে ২য় স্বামী মেনে না নিয়ে তালাক দিলে সেক্ষেত্রে ৩য় বিবাহের ক্ষেত্রে আপনার যে পূর্বে দুইবার বিবাহ হয়েছিলো,এটি আবার পরবর্তী পাত্রদেরকে বলতে হবে। 

★আপনি যদি আগের সেই বিবাহের কথা গোপন করে নতুন বিবাহ করেন,এক্ষেত্রে গুনাহগার হবেন। স্বামীকে ধোকা দেয়ার গুনাহ হবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত বোনের যে বিবাহ হয়েছিলো,সেটা ১ বছর পর্যন্ত টিকেছিলো,অল্প কিছু দিনের জন্য হলেও তারা একত্রে ঘর সংসার করেছে।

সুতরাং সেই বোন যদি আগের সেই বিবাহের কথা গোপন করে নতুন বিবাহ করে,সেক্ষেত্রে সে গুনাহগার হবে। ২য় স্বামীকে ধোকা দেয়ার গুনাহ হবে।

উক্ত বোনের যদি মনে প্রবল আস্থা থাকে যে ২য় স্বামী বা তার পরিবারের কেহ ভবিষ্যতে কোনোদিনও তার আগের বিবাহের কথা জানতে পারবেনা,সেক্ষেত্রে সে ২য় স্বামীকে আগের বিবাহের বিষয় গোপন করে বিবাহ করতে পারে।
তবে এক্ষেত্রেও তথ্য গোপনের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে,পাশাপাশি পরবর্তীতে দোষটি প্রকাশ না করে হলেও এবং স্বাভাবিক ভাবে হলেও ২য় স্বামী হতে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...