আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,317 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (23 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।
১)আমার কবুতর পালনের খুব শখ।কিন্তু বিরাল খেয়ে ফেলে।এ জন্য অনেকেই কবুতর পিঞ্জিরাবদ্ধ করে কবুতর পালন করে। পিঞ্জিরাবদ্ধ করে কবুতর পালন করা কি জায়েজ হবে?
২)মাজহাব মানা কি জরুরি?
৩)আকিদা বিষয়ের একটি বই এর নাম বললে খুশি হতাম।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
প্রাণীদের বন্দী করে লালন পালন করা ও পোষা জায়েয রয়েছে।শুকুর এবং কয়েক শ্রেণীর কুকুর ব্যতীত। কুকুর লালন পালন করা নাজায়েয ও হারাম।তাছাড়া অন্যান্য প্রাণীকে পোষা ও লালন পালন করার সাধারণ বিধান হল,বৈধতা।

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত যে,
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সবচেয়ে অধিক সদাচারী ছিলেন। আমার এক ভাই ছিল; ‘তাকে আবূ ‘উমায়র’ বলে ডাকা হতো। আমার ধারণা যে, সে তখন মায়ের দুধ খেতো না। যখনই সে তাঁর নিকট আসতো, তিনি বলতেনঃ হে আবূ ‘উমায়র! কী করছে তোমার নুগায়র? সে নুগায়র পাখিটা নিয়ে খেলতো।(সহীহ বোখারী-৬২০৩,সহীহ মুসলিম-২১৫০)

প্রাণী লালন-পালন কয়েকটি শর্তে ভিত্তিতে জায়েয।
(১)প্রাণীকে নিয়মিত খাবার দাবার প্রদান করতে হবে।
হযরত ইবনে উমর থেকে বর্ণিত,
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এক নারী একটি বিড়ালের কারণে জাহান্নামে গিয়েছিল, সে তাকে বেঁধে রেখেছিল। সে তাকে খাবারও দেয়নি, ছেড়েও দেয়নি, যাতে সে যমীনের পোকা মাকড় খেতে পারত। আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) সূত্রেও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত আছে।(সহীহ বোখারী-৩৩১৮,সহীহ মুসলিম-২২৪২)

(২)প্রাণীকে কোনো প্রকার কষ্ট দেয়া যাবে না।
রাসূলুল্লাহ সাঃ মুখে প্রহার করা  এবং মুখে ট্যাটু অঙ্কন করা যাবে না।(সহীহ মুসলিম-২১১৬) এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- 4980

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি  পিঞ্জিরাবদ্ধ করে কবুতর পালন করতে পারবেন।এটা জায়েয রয়েছে।

(২)
মুজতাহিদ নয় এমন সবার জন্য মাযহাব মানা ফরয।
 
বিস্তারিত জানতে দেখুন!
জাস্টিস আল্লামা তাক্বী উসমানী রচিত
"মাযহাব কি ও কেন?"

মাযহাব অর্থ হল,কুরআন-হাদীসের ব্যাখা জানতে কারো সাহায্য গ্রহণ করা।অর্থাৎ যারা নিজে সরাসরি কুরআনের আয়াত বা হাদীসে রাসূল এর মর্মার্থ বুঝতে পারেন না, তারা অন্যর সাহায্য নিয়ে কুরআন-হাদীস এর মর্মার্থ বুঝবেন,এবং সে অনুযায়ী আ'মল করবেন।

সুতরাং
কোনো এক অালেম বা মৌলিক মূলনীতি এক এমন একদল আলেমের কুরাআন-সুন্নাহ অনুসৃত মত ও পন্থাকে অনুসরণ করার নামই হল মাযহাব।
এক্ষেত্রে সকল মাস'আলায় শুধুমাত্র একজনকেই অনুসরণ করতে হবে।নতুবা একেকজনকে একেক মাস'আলা অনুসরণ মূলত প্রবৃত্তির অনুসরণ হবে,।
এজন্য এমন কোনো এক আলেম বা মূলনীতি এক এমন একদল আলেমকে অনুসরণ করতে হবে যাদের প্রায় সকল বিষয়ে ইজতেহাদ রয়েছে।

এই হল মাযহাব এর তাৎপর্য। সুতরাং এ দৃষ্টিকোনে নবীজী সাঃ কোনো মাযহাবের অনুসারী হওয়ার প্রশ্নই আসে না।

হ্যা কুরআন হাদীসে মাযহাবের কথা রয়েছে।
যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেন,

আপনার পূর্বেও আমি প্রত্যাদেশসহ মানবকেই তাদের প্রতি প্রেরণ করেছিলাম অতএব জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর, যদি তোমাদের জানা না থাকে;
সূরা নাহল-৪৩

এই জিজ্ঞাসা এবং সে অনুযায়ী আ'মল করা এর নামই মাযহাব।

হাদীসে মাযহাবের অনুমোদন
রাসূলুল্লাহ সাঃ যখন মু'আয রাযি.কে ইয়ামন প্রেরণের ইচ্ছা করলেন,তখন তাকে বললেন,তুমি কিভাবে বিচার পরিচালনা করবে? যখন তোমার সামনে বিচারকার্য উপস্থিত হবে।
তখন মু'আয রাযি উত্তরে বললেন,আমি কিতাবুল্লাহ দ্বারা বিচার কার্য পরিচালনা করব।রাসূলুল্লাহ আবার জিজ্ঞাসা করলেন,যদি তুমি কিতাবুল্লাহে সেই বিষয়কে খুঁজে না পাও তখন কি করবে?মু'আয রাযি বললেন,তখন সুন্নাতে রাসূল দ্বারা বিচারকার্য পরিচালনা করব।রাসূলুল্লাহ সাঃ আবার বললেন,যদি তুমি কিতাবুল্লাহ বা সুন্নাতে রাসূলে খুঁজে না পাও তবে কি করবে?মু'আয রাযি বললেন,তাহলে নিজে ইজতেহাদ করে বিচার কার্য করব,এবং এতে কোনোপ্রকার ত্রুতি থাকবে না।একথা শুনে খুশিতে রাসূলুল্লাহ সাঃ মু'আয রাযি এর  সিনায় হাত বুলিয়ে বললেন,'সমস্ত প্রশংসা ঐ আল্লাহর যিনি উনার রাসূলের দূতকে এমন জিনিষ এর তাওফিক দিয়েছেন যে বিষয়ে রাসূলুল্লাহ খুশি ও আনন্দিত।(সুনানে আবু-দাউদ- ৩৫৯২)

দেখুন!
মু'আয রাযি.কুরআন-হাদীসকে সামনে রেখে তার আলোকে ইজতেহাদ করার কথা বলছেন,আর রাসূলুল্লাহ সাঃও এ কথা শুনে খুশি হলেন।
আর বিষয়ে কুরআন-হাদীসের সরাসরি কোনো নস নেই তাতে ইজতেহাদ করার নামই হল মাযহাব।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- 402


(৩) ইসলামী আকিদা ও ভ্রান্ত মতবাদ ( মাওলানা হেমায়েত উদ্দীন) এটি একটি সমৃদ্ধ বই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (23 points)
Jajakallah....

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...