আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
58 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (5 points)
closed by
আসসালামু আলাইকুম।

আমার এক বোনের স্বামী তাকে সময় দেয়না,তার সাথে কোনো কিছু নিয়ে কথা বলেনা।

তার প্রতিদিনের রুটিন হলো,সকালে দোকানে যাওয়া,দুপুরে এসে খাওয়া দাওয়া করে কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে আবার চলে যায় তারপর রাতে ৮/৮:৩০ এর দিকে এসে তার মা বাবা ভাই বোনের সাথে দুই থেকে আড়াইঘন্টা কথা বার্তা বলে, সময় দেয়,হাসি ঠাট্টা করে।তারপর ঘরে এসে তার বিজনেস পার্টনারের সাথে একা বা দেড় ঘন্টা কথা বলে। তারপর খাওয়া দাওয়া করে, এরপর ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকে, ইউটিউব ভিডিও বা ফেবু স্ক্রল করে তারপর ঘুমানোর সময় ঘুমিয়ে যায়।
যতক্ষণ ঘরে থাকে ততক্ষণ শুধু স্ত্রীর সাথে সাধারণ কথা বলে, খেয়েছে কিনা বা কখন খাবে এরপর আর কিছুনা। তার মন ভালো কিনা বা তার কি কোনো কিছু বলার আছে কিনা এগুলো কিছুই সে শুনতে চায়না।স্ত্রী আগ বেড়ে কথা বলতে চাইলেও বলে ক্যাচর ম্যাচর করে বা পকর পকর করে।

এগুলোর জন্য ওই বোনটা বললো, আপনি আপনার বাবা মা ভাই বোনকে, বিজনেস পার্টনারকে সময় দেন এতে আমার কোনো আপত্তি নেই, কিন্তু আপনি আমার জন্যও কিছু সময় বরাদ্দ রাখেন।আমার সাথেওতো কথা বার্তা বলতে পারেন,অন্তত আধাঘন্টা হলেওতো কথা বলা যায়।সারাটাদিন আমি আপনার জন্য অপেক্ষা করে থাকি কখন আসবেন,কখন কথা বলবো,কিন্তু আপনি আমাকে সময়ই দেন না কোনো।এমন হলেতো সম্পর্কে তিক্ততা আসবে আর নষ্টও হবে।

তারপর বললো, স্বামীর সময় আর অর্থ এসবেতো স্ত্রী আর সন্তানের হক আগে তারপর বাকি সবার।আমি বলিনা শুধু আমার জন্যই সব করেন।আপনার পরিবারের জন্যও করেন।

তখন উনার স্বামী বলে উঠে, মায়ের উপর নাকি কোনো হক নেই। সবার আগে তার হক তারপর বাকি সবার।মা বাবাকে উফ বলতেও নিষেধ করেছে কুরআনে।

আর যা পাচ্ছে সেটা নিয়ে শুকরিয়া আদায় করে চলতে বলে।কিন্তু সে এর বেশি কিছু করতে পারবেনা।আগে মায়ের হক তাই মায়েরটা আগে দেখবে।

এখন বোনের প্রশ্ন হলো,এটা কি সত্য যে মায়ের উপর কোনো হক নেই।আগে মা বা পরিবারের হক তারপর স্ত্রী আর সন্তানের হক?আর একজন মেয়ের উপর তার শ্বশুর বাড়ির হক কি কি?বিস্তারিতভাবে বলবেন অনুগ্রহ করে।

আর হাদীস থেকে রেফারেন্স দিবেন অনুগ্রহ করে।বোনটা তার স্বামীকে দেখাবে উত্তর।
closed

1 Answer

+1 vote
by (601,620 points)
selected by
 
Best answer
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর ইবনুল ‘আস (রাঃ) হতে বর্ণিত।
حَدَّثَنِي عَبْدُ اللهِ بْنُ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قَالَ لِي رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَا عَبْدَ اللهِ أَلَمْ أُخْبَرْ أَنَّكَ تَصُومُ النَّهَارَ وَتَقُومُ اللَّيْلَ فَقُلْتُ بَلَى يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَلاَ تَفْعَلْ صُمْ وَأَفْطِرْ وَقُمْ وَنَمْ فَإِنَّ لِجَسَدِكَ عَلَيْكَ حَقًّا وَإِنَّ لِعَيْنِكَ عَلَيْكَ حَقًّا وَإِنَّ لِزَوْجِكَ عَلَيْكَ حَقًّا وَإِنَّ لِزَوْرِكَ عَلَيْكَ حَقًّا وَإِنَّ بِحَسْبِكَ أَنْ تَصُومَ كُلَّ شَهْرٍ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ فَإِنَّ لَكَ بِكُلِّ حَسَنَةٍ عَشْرَ أَمْثَالِهَا فَإِنَّ ذَلِكَ صِيَامُ الدَّهْرِ كُلِّهِ فَشَدَّدْتُ فَشُدِّدَ عَلَيَّ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنِّي أَجِدُ قُوَّةً قَالَ فَصُمْ صِيَامَ نَبِيِّ اللهِ دَاوُدَ عَلَيْهِ السَّلاَم وَلاَ تَزِدْ عَلَيْهِ قُلْتُ وَمَا كَانَ صِيَامُ نَبِيِّ اللهِ دَاوُدَ عَلَيْهِ السَّلاَم قَالَ نِصْفَ الدَّهْرِ فَكَانَ عَبْدُ اللهِ يَقُولُ بَعْدَ مَا كَبِرَ يَا لَيْتَنِي قَبِلْتُ رُخْصَةَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেনঃ হে ‘আবদুল্লাহ! আমি এ সংবাদ পেয়েছি যে, তুমি প্রতিদিন সওম পালন কর এবং সারা রাত সালাত আদায় করে থাক। আমি বললাম, ঠিক (শুনেছেন) হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেনঃ এরূপ করবে না (বরং মাঝে মাঝে) সওম পালন কর আবার ছেড়েও দাও। (রাতে) সালাত আদায় কর আবার ঘুমাও। কেননা তোমার উপর তোমার শরীরের হাক্ব রয়েছে, তোমার চোখের হাক্ব রয়েছে, তোমার উপর তোমার স্ত্রীর হাক্ব আছে, তোমার মেহমানের হাক্ব আছে। তোমার জন্য যথেষ্ট যে, তুমি প্রত্যেক মাসে তিন দিন সওম পালন কর। কেননা নেক ‘আমলের বদলে তোমার জন্য রয়েছে দশগুণ নেকী। এভাবে সারা বছরের সওম হয়ে যায়। আমি (বললাম) আমি এর চেয়েও কঠোর ‘আমল করতে সক্ষম। তখন আমাকে আরও কঠিন ‘আমলের অনুমতি দেয়া হল। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আরো বেশি শক্তি রাখি। তিনি বললেনঃ তবে আল্লাহর নবী দাঊদ (আঃ)-এর সওম পালন কর, এর হতে বেশি করতে যেয়ো না। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আল্লাহর নবী দাঊদ (আঃ)-এর সওম কেমন? তিনি বললেনঃ অর্ধেক বছর। রাবী বলেন, ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বৃদ্ধ বয়সে বলতেন, আহা! আমি যদি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রদত্ত রুখসত (সহজতর বিধান) কবূল করে নিতাম! (সহীহ বোখারী-১৯৭৫)

আল্লাহ পাক সৃষ্টিকাল থেকেই প্রত্যেক মানুষকে তার ব্যক্তিগত নিজস্ব কিছু অধিকার দান করেছেন।স্ত্রীর উপর স্বামীর কিছু অধিকারও হক্ব দান করেছেন যেমনঃ-চাহিবামাত্র স্বামীকে সঙ্গ দেয়া ও স্বামীর সন্তানকে গর্ভে ধারণ করা এবং লালন-পালন করা ইত্যদি স্ত্রীর উপর স্বামীর অধিকার ও হক্ব। তদরূপ স্বামীর উপর স্ত্রীরও কিছু অধিকার ও হক্ব রয়েছে যেমন, বিয়ের পর স্ত্রীর ব্যক্তিগত অধিকার রক্ষা করে স্ত্রীকে একটি বাসস্থান ও খাদ্য এবং বস্র দান করা।এটা স্বামীর উপর  স্ত্রীর অধিকার ও হক্ব এবং শরীয়ত কর্তৃক ওয়াজিব। এ সম্পর্কে কোরআনের ঘোষনা হলঃ
ﻭَﻋَﺎﺷِﺮُﻭﻫُﻦَّ ﺑِﺎﻟْﻤَﻌْﺮُﻭﻑ
নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। (সূরা নিসা-১৯) এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/430

স্বামী স্ত্রীর সহবাস অধিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/990


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
স্বামী অবশ্যই তার মাতাপিতা ও পরিবারকে সময় দিবে। ব্যবসাবানিজ্যে সময় ব্যয় করবে। তবে স্ত্রীর সাথেও অবশিষ্ট সময় ব্যয় করবেন। স্বামীর উচিৎ মুবাইল নিয়ে ব্যস্ত না হয়ে, বরং স্ত্রীর দিকে নজর দেয়া। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শত ব্যস্ততার মধ্যেও উনার বিবিগণের সাথে খোশগল্প করতেন।

আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَرَأَيْتَ لَوْ نَزَلْتَ وَادِيًا وَفِيهِ شَجَرَةٌ قَدْ أُكِلَ مِنْهَا، وَوَجَدْتَ شَجَرًا لَمْ يُؤْكَلْ مِنْهَا، فِي أَيِّهَا كُنْتَ تُرْتِعُ بَعِيرَكَ؟ قَالَ: «فِي الَّذِي لَمْ يُرْتَعْ مِنْهَا» تَعْنِي أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ يَتَزَوَّجْ بِكْرًا غَيْرَهَا
তিনি বলেন যে, আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! মনে করুন আপনি এমন একটি ময়দানে গিয়ে পৌঁছলেন, যেখানে একটি গাছের কিছু অংশ খাওয়া হয়ে গেছে। আর এমন কটি গাছ পেলেন, যার কিছুই খাওয়া হয়নি। এর মধ্যে কোন গাছের পাতা আপনার উটকে খাওয়াবেন। মহানবী (ﷺ) উত্তরে বললেন, যে গাছ থেকে কিছুই খাওয়া হয়নি। এ কথার দ্বারা আয়েশা (রাযিঃ) এর উদ্দেশ্য ছিল মহানবী (ﷺ) তাঁকে ছাড়া অন্য কোন কুমারীকে শাদী করেননি।(সহীহ বোখারী-৪৭১০)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (5 points)
reshown by
হুজুর বোনের স্বামী যে বললো, মায়ের উপর কোনো হক নেই, আগে তার হক পালন করবে তারপর বাকি সবার এই কথাটা কি সত্য কিনা সেটাতো জানালেন না।
by (601,620 points)
মায়ের পায়ের নিচে তো প্রত্যেক সন্তানের জান্নাত।মায়ের দিকে নেক নজরে থাকালে নফল উমরাহর সওয়াব পাওয়া যায়। তাই মায়ের দেখভাল তো অবশ্যই করতে হবে। তাছাড়া মায়ের দু'আর সামনে কোনো পর্দা থাকে না। বাবা মাকে উফ শব্দ বলার সুযোগ না দেওয়ার জন্য কুরআন নির্দেশ দিয়েছে। 

অন্যদিকে স্ত্রীর খোরপোশ ও স্ত্রীর সাথে উত্তম আচরণ করার কথা ইসলাম শিক্ষা দিচ্ছে।

সুতরাং
 স্বামী তার মা বাবার সাথে সময় বেশী ব্যয় করছে, এজন্য স্বামীর প্রতি স্ত্রীর অভিযোগ কখনো গ্রহণযোগ্য হবে না। হ্যা, স্বামীর জন্য ব্যালেন্স ঠিক রেখে চলাফেরা করাই উচিত হবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...