আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
46 views
in ওয়াসওয়াসা by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ্। আমার ১৬ বছর বয়সে গত ৩বছর আগে বিয়ে হয়েছে।উনি পড়াশুনা করছেন।আমার বাবার একান্ত পছন্দের ছিলেন,ভালো মানুষ।সেই হিসেবেই আমার বাবা বিয়ে দিয়েছেন। আমার হাসবেন্ডের বাড়িতে আমি থাকার জন্য একটি রুম নেই।আর পর্দার পরিবেশ রান্নাঘর হতে ওয়াশরুম,কোথাও নেই। বিয়ের সময় তিনি অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পড়তেন।আমার বাবার কথা এক্টাই ছিল,পরিশ্রমী ছেলেদের একটা সময় রিজিকের ব্যবস্থা হয়েই যায়।মেয়েকে আমি ছেলের চাকরি না হওয়া পর্যন্ত নিজের কাছে রাখবো।৩-৪ বছর।


আমি আমার বিয়েতে শুরুতে রাজী ছিলাম না লোকলজ্জায়।৷ পরবর্তীতে মেনে নিলেও মানিয়ে নিতে অনেক কষ্ট হয়েছে।আমার হাসবেন্ডকে আমি পছন্দ করতাম না কিন্তু আল্লাহর ভয়েই দূরেও সরে যেতাম না।এভাবেই আলহামদুলিল্লাহ আমাদের মাঝে আল্লাহ ভালোবাসা তৈরী করে দেন।৷ বর্তমানে আমার ১৯মাসের বাচ্চা আছে।পর্দার জন্য জেনারেল পড়াশুনা ছেড়ে দেই। যেহেতু বাচ্চা সহ বাবার বাসাতেই আছি আর বিয়ের পর থেকেই ছিলাম তাই সব যায়গায় হৈ হৈ পড়ে গিয়েছিল,আমি যিনা করে বিয়ে করেছি!আমার বাবা মা সেটা ঢাকতে নিজেরা বিয়ে দিয়েছেন বলে চালাচ্ছেন! যাহোক,এসবের জন্য আমি প্রচুর ডিপ্রেশনে ছিলাম।অন্য দিকে স্বামীর বাড়ির মানুষ খুব একটা ভালোনা।আমি কিছুই পাইনি তাদের কাছ থেকে। সবমিলিয়ে দিনশেষে স্বামীর কাছে একটু মানসিক প্রশান্তি চাচ্ছিলাম।তিনি মাসে ১ বা ২দিনের জন্য আসেন।কিন্তু আমাকে খুব একটা সময় দেন না।মোবাইল নয়তো ঘুমানো,নয়তো অন্য কারো সাথে কথা বলেন,নয়তো বাইরে ঘুরেন। রাতেও আমার বিপরীতে পাশ ফিরে ঘুমান। শারিরীক মেলামেশা হয় মাঝে মাঝে কিন্তু এছাড়া এর বাইরে উনি কোনো কথা বলা বা কিছুই পছন্দ করেন না।আমি উনার সাথে বই পড়েও সময় কাটাতে চেয়েছি কিন্তু তাতেও তিনি রেগে গিয়েছেন।তিনি নাকি আমার সাথে কী বলবেন কী বলবেন কিছুই খুজে পান না।অথচ ঘরে ৪দেয়ালে বন্দী থেকে আমার উনার জন্য অনেক কষ্ট হয়।উনি আমাকে বলেন,কাজের মাঝে আমাকে ভেবেই তিনি আনন্দ পান।আলাদা কথা বলার প্রয়োজন বোধ করেন না।আমি নাকি আমার নিজের মত ভালোবাসা পেতে  চাই,এটা নাকি উনার উপর বোঝা চাপিয়ে দেয়ার মত হয়ে যায়।এবং আমি উনাকে এসব নিয়ে অভিযোগ করলেও উনি বলেন, এতে নাকি উনি কষ্ট পান। আমার কষ্টটা সেখানেই,তিনি আমাকে সময় না দিতে পারলে বিনয়ী থাকুক,সরি বলুক যে তিনি আসলে আমি কষ্ট পাবো তা চান নি! তাতেও আমার কিছুটা স্বস্তি লাগতো। কিন্তু তিনি তাও করতে চান না।


আমি এসব নিয়ে অনেক ডিপ্রেশনে আছি ২বছরের মত।অনেকবারই অভিমান করতে গিয়ে উলটো ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে।সালাতে আমার মনোযোগ আসেনা।উনাকে আমার কষ্ট বুঝাতে পারিনি বলে সালাতেও খুব কান্না আসে। অনেক বুঝিয়ে বলার পর হ্যাঁ হ্যাঁ করে। আমি আর কারো সাথেই খুব একটা মিশিনা তাই নিজেকে কয়েদী মনে হয়।

প্রশ্ন,আমি কীভাবে উনার থেকে বিমুখ হয়ে আল্লাহমুখী হব?  আমার কোনো কাজেই মনোযোগ যায়না সহজে।আমি কোনোকিছুকে ঘৃণা করলে তবেই সেটাকে ত্যাগ করতে পারি।যতই ভাবি,উনার কথা ভাবা বাদ দিয়ে দিব,কিন্তু উনি আসার পর সামান্য কিছু কথা বললেই আমি খুব পেরেশান হয়ে যাই।আমি আশা করি তিনি আমাকে খুব কেয়ার করবেন।আমি মুখেও বলি এই সময়টুকু অন্তত আমাকে দেন! কিন্তু তিনি কোনোভাবেই নিজের মর্জির বাইরে কিছু করতে রাজী নন।বহুদিন যাবত আমি আমল থেকে বিচ্ছিন্নই হচ্ছি বারবার। দ্বীন চর্চা বাড়লেও আমার আমল বাড়েনা। আমি কি দ্রুত আল্লাহর সান্নিধ্য চেয়ে দুয়া করতে পারবো? বর্তমানে আমার স্বামীকে খুব ঘৃণা হয়।মনেহয় উনি আমাকে হয় ডিভোর্স দিক নয়তো মাসের অন্তত দুয়েকদিন ভালোভাবে সময় দিক,তাও মন থেকে।

1 Answer

0 votes
by (600,690 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَمِنْ آيَاتِهِ أَنْ خَلَقَ لَكُم مِّنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَاجًا لِّتَسْكُنُوا إِلَيْهَا وَجَعَلَ بَيْنَكُم مَّوَدَّةً وَرَحْمَةً ۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ
আর এক নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সংগিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে।( সূরা রূম-২১)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(ক) আপনার স্বামীর দোষগুণ সম্পর্কে কাউকে কিছুই বলবেন না। 
(খ) পূর্ণ আগ্রহের সাথে তাকে সময় দিন।তাকে কখনো একা ছেড়ে দিবেন না।বরং সর্বদা তার সাথে লেগে থাকার চেষ্টা করুন। তার সকল প্রকার পছন্দের জিনিষকে নিজের পছন্দ বানিয়ে তার সাথে সর্বদা হাসিখুশি ভাব নিয়ে থাকার চেষ্টা করুন। এক দুইবার চেষ্টা করে অধৈর্য হবেন না বরং চেষ্টাকে অভ্যাহত রাখুন। বিশ্বাস রাখুন, ভলো ও সুন্দর ব্যবহারের দ্বারা সে নিশ্চয় একদিন না একদিন আপনার হবেই। 
(গ) তার মন পরিবর্তনের জন্য আল্লাহর কাছে দু'আ করতে থাকুন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...