আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
40 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (15 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ সম্মানিত উস্তায। পূর্বে আমি একটি স্বপ্ন দেখি যেটি ছিল ইস্তিখারার স্বপ্ন।স্বপ্নটি হলো-

১. আমরা পরিবারের সবাই মিলে দূরে কোথাও সম্ভবত নানু বাড়ি যাচ্ছি বেড়াতে।অনেক বড়ো একটা গাড়ি(বাস) রিজার্ভ করি।কিন্তু গাড়িটা নতুন সিস্টেমে তৈরি পানির উপর দিয়েও চলে এবং অনেক দ্রুত স্পিডে।আমরা রওয়ানা দেই। গাড়ি খুব অল্প সময়ে পানিতে ডুবে যাওয়া ভাঙা রাস্তা দিয়ে পার হয়।রাস্তাটি ছিল নির্জন এবং তুলনামূলক সরু।পথিমধ্যে আমার নয়ত বাসার একজন পিচ্চির জুতা পরে যায়।সেটা আমি আর মা তুলে নিয়ে আসি।কিন্তু গাড়ি থেকে জুতা পড়ার কোনো কথাই না,সকল ক্লাস লাগানো ছিল ২-১ টা বাদে।আবার গাড়ি চলতে শুরু করে, কিছু দূর যাওয়ার পরে আবার জুতা পরে যায়,সম্ভবত আমার বা অন্যকারও।তারপর গাড়ি থামানো হয়।সামনে যাওয়ার রাস্তা দেখা যাচ্ছে না, শুধু পানি আর পানি,পানি শান্ত ছিল একদম,তবে নিশ্চিন্তিত ছিলাম সবাই যে যাওয়া যাবে রুট চিনা আছে।কোনো সমস্যাই হবে না

আমি আর আমাদের বাসার দারোয়ান(আমাদের আত্নীয় হয়) জুতাটা নিয়ে আসতে যাই।রাস্তা ভাঙা হালকা হালকা স্বচ্ছ পানি।এরমধ্যে আমি আকাশের দিয়ে তাকিয়ে দেখি একটি চাঁদ এবং সূর্য পাশাপাশি,তবে চাদ, সূর্য দুটোই বেশ শান্ত, সূর্যের তাপ নেই,  দিনের আলোর মতো বা পূর্নিমার রাতের মতো সব আলোকিত। সূর্যের তাপ নেই সেটিও চাদের মতোই বা মেঘাচ্ছন্ন হলে যেরকম সূর্যের তাপ বা সূর্যকিরন দেখা যায় না সেরকম ছিল তবে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল না।তার পাশ থেকে আরএকটা কী যেন সূর্যের মতো কিন্তু সূর্যের চেয়েও অধিক আলো দিচ্ছিল।আমি ভাবি নতুন এ সূর্যটা কোথা থেকে আসলো? চারপাশে উচু গাছপালা তার মধ্যে থেকে কিরন দিচ্ছিল, আর বিষয়টা খুব সিগ্ধ ছিল,আমি উপভোগ করছিলাম প্রশান্ত চিত্তে।বিষয়টা এরকম ছিল যে চাদ এবং সূর্যকে আলোকিত করতেছে নতূন সূর্যটা।তখনই ঘুম ভেঙে যায়, তখন রাত ১.৫০ বাজে।

স্বপ্নের ব্যাখ্যা করেছেন আমার একজন দ্বীনি বোন:

"সূর্য দিয়ে পিতামাতাকে বুঝাইছে। আর চাঁদ দিয়ে জীবনসঙ্গীকে বুঝাইছে। আর অন্য আরেকটা যে বললেন,সূর্যের চেয়েও উজ্জ্বল লাগছে যেন চাঁদ আর সূর্যকে আলোকিত করছে, এটা দিয়ে দ্বীনের জ্ঞানের আলো বুঝাইছে।
তো অর্থ দাঁড়ালো, ভবিষ্যতে আপনার দ্বীনি ইলম দিয়ে আপনি আংকেল, আন্টি আর ভাইকে এভাবে উজ্জ্বল করবেন।"

আমার প্রশ্ন : এ স্বপ্নের ব্যাখ্যাটা কী ভালো? মানে আমার জীবনসঙ্গী কী পরিপূর্ণ দ্বীনদার নন/পরিপূর্ণ দ্বীনদার হবেন না?

২. গতোকাল আমি আমার ভাইয়ার একটা বিষয় নিয়ে ইস্তিখারা করেছিলাম- রাত ৩.৩৮ এর দিকে ঘুম ভেঙে যায় তখন খুব কষ্ট হচ্ছিল। অনেক বেশি অসুস্থ থাকার দরুন তাহাজ্জুদ সলাত আদায় করতে পারিনি।তবে অনেক দুয়া পড়েছিলাম।এরপর আবার ঘুমিয়ে পড়ি তখন স্বপ্ন দেখি - আমাদের বড়ো বাড়ির একটা ঘর ফাকা থাকে তাই সে ঘরে আমি তালা লাগিয়ে দিয়েছি যাতে সেটা সেইফ থাকে,এরপর দেখি সে ঘরের ভাবি আসে এবং সে পুরোনো শেওলা পরা ঘর পরিষ্কার করে নাকি সেখানে থাকবে তাই আমি আবার তালা খুলে দেই।এরপর কীজন্য যেন আমাদের বাড়ি আসতে নিছি। তখন আমাকে আমার চাচাত ভাবি আগায় দিচ্ছিলেন সাথে আমার ভাইয়া ছিলেন।স্বপ্নে নিজেকে খুব ভিআইপি কেও এরকম মনে হয়েছে।এখানে কিছু বিষয় আলোচনা হয়েছিল সেটি মনে নেই।

এরপর দেখি আমি একটা পেপার নিয়ে কোথাও একটা যাই, সেখানে যেয়ে দেখি একটা আম বাগান সম্ভবত সেখানে আমার ক্লাসমেটসরা গাছে উঠে দুষ্টামি করছে বা আম পেরে খাচ্ছে। এরপর পেপার নিয়ে অন্য একজনের কাছে যাই সে খুব খুশি হয় আমাকে দেখে।উক্ত ব্যক্তির বাবরি চুল অনেক সুন্দর কিন্তু বেশ লং।এরপর দেখি উনি শাওয়ার নিচ্ছেন পাশের একটা ছোট সুইমিংপুল মেইবি।তখন তার আলগা চুলটা পরে যায় তবে তার বাবরি চুল ছোট সেটি দেখতে পাই।এরপর আরও কিছু হয় এখন মনে পড়তে না।কাজ শেষে পেপার নিয়ে চলে আসি এমনটা দেখি,(পেপারটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা পেপার ছিল মেইবি থিসিস / প্রজেক্টের পেপার ছিল) তখন ঘুম ভেঙে যায় ফজরের সময়।

এ স্বপ্ন দ্বারা পজিটিভ নেগেটিভ কিছু ইঙ্গিত করে কী?

৩. বান্ধবীদের বিয়ের প্রপোজাল আসলে কী আমি ইস্তিখারা করে দেখতে পারব?বা নন মাহরাম কোনো রিলেটিভের কোনো বিষয়ে ইস্তিখারা করা যায়?বান্ধবীরা প্রায়ই ওদের কোনো বিষয়ে বা বিয়ের ব্যাপারে ইস্তিখারা করতে বল
by (15 points)
২ নং স্বপ্নে শেষে যেই লোকের কাছে গিয়েছি সে লোকের পক্ষ থেকে বিয়ের প্রস্তাব ছিল আমার জন্য। সামহাও সেখানে আমাদের পক্ষ থেকে না করে দেয়া হয়। স্বপ্নে এরকম অবস্থা ছিল যে আমার ক্লাস মেটস সহ গিয়েছি উনু আমার পেপার নিয়ে অনেক সময় ধরে বসিয়ে রেখেছে।আসতে দিতে চাচ্ছিলনা।  তবে এর পূর্বে উক্ত লোককে নিয়ে একদমই ভাবিনি

1 Answer

0 votes
by (577,410 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي عُمَرَ الْمَكِّيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ، عَنْ أَيُّوبَ السَّخْتِيَانِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا اقْتَرَبَ الزَّمَانُ لَمْ تَكَدْ رُؤْيَا الْمُسْلِمِ تَكْذِبُ وَأَصْدَقُكُمْ رُؤْيَا أَصْدَقُكُمْ حَدِيثًا وَرُؤْيَا الْمُسْلِمِ جُزْءٌ مِنْ خَمْسٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ وَالرُّؤْيَا ثَلاَثَةٌ فَرُؤْيَا الصَّالِحَةِ بُشْرَى مِنَ اللَّهِ وَرُؤْيَا تَحْزِينٌ مِنَ الشَّيْطَانِ وَرُؤْيَا مِمَّا يُحَدِّثُ الْمَرْءُ نَفْسَهُ فَإِنْ رَأَى أَحَدُكُمْ مَا يَكْرَهُ فَلْيَقُمْ فَلْيُصَلِّ وَلاَ يُحَدِّثْ بِهَا النَّاسَ "
মুহাম্মাদ ইবনু আবূ উমার আল-মাক্কী (রহঃ) ..... আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন যুগ ও সময় (কিয়ামাতের) সন্নিকটে হয়ে আসবে তখন প্রায়শ (খাঁটি) মুসলিমের স্বপ্ন মিথ্যা ও ভ্রান্ত হবে না। তোমাদের (মাঝে) অধিক সত্যভাষী লোক সর্বাধিক সত্য (ও বাস্তব) স্বপ্নদ্রষ্টা হবে। আর মুসলিমের স্বপ্ন নুবুওয়াতের পয়তাল্লিশ ভাগের এক ভাগ। আর স্বপ্ন তিন (প্রকার)- ভাল স্বপ্ন আল্লাহর তরফ হতে সুসংবাদ (বাহক)। আর (এক ধরনের) স্বপ্ন শাইতানের পক্ষ হতে দুর্ভাবনা তৈরি করে। আর (এক ধরনের) স্বপ্ন যা মানুষ তার মনের সাথে কথা বলে (এবং ভাবনা-চিন্তা করে) তা থেকে (উদ্ভূত)।

অতএব তোমাদের কেউ যদি এমন কিছু (স্বপ্ন) দর্শন করে- যা সে পছন্দ করে না, তাহলে সে যেন (ঘুম থেকে) উঠে দাঁড়ায় এবং সলাত (সালাত/নামাজ/নামায) আদায় করে আর মানুষের নিকট সে (স্বপ্নের) কথা গোপন রাখে।
(মুসলিম ৫৭৯৮, (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৭০৮, ইসলামিক সেন্টার ৫৭৪০)

ইসলামী দৃষ্টিতে স্বপ্ন তিন প্রকার। 
,
১. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাহকে দেখানো হয় যা কল্যানকর হয়।

২. শয়তানের পক্ষ হতে দেখানো হয় যাতে মানুষ খারাপ, মন্দ ভয়ংকর কিছু দেখে থাকে।
তবে শয়তান স্বপ্ন দেখানোর দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারেনা।
,
ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই। শয়তান মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্যই এমন সব আজব আজব জিনিস দেখায়। এমনটা দেখলে ঘুম থেকে জেগে বাম দিকে থুথু ফেলে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়। 

৩. মানুষের কল্পনা। অর্থাৎ মানুষ যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা দেখতে পায়। 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
স্বপ্নটি আপনার মনের কল্পনা প্রসূত বলেই মনে হচ্ছে। সুতরাং চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই।

(০২)
এ স্বপ্নে পজিটিভ ইঙ্গিত আছে বলেই মনে হচ্ছে। 

(০৩)
ইস্তেখারার দোয়া পদ্ধতি সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাঃ এক হাদীসে বলেন, দুই রা'কাত নামায পড়ে বিশেষ মনোযোগের সাথে (নিম্নে উল্লেখিত) দু'আ পড়বে। তাহলে হয়তো তার মন কোনো এক দিকে ধাবিত হবে,বা সে স্বপ্নযোগে কোনো এক ইশারা পাবে। 

যেমন হযরত জাবির রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে

 عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُعَلِّمُنَا الِاسْتِخَارَةَ فِي الأُمُورِ كُلِّهَا، كَمَا يُعَلِّمُنَا السُّورَةَ مِنَ القُرْآنِ، يَقُولُ: " إِذَا هَمَّ أَحَدُكُمْ بِالأَمْرِ، فَلْيَرْكَعْ رَكْعَتَيْنِ مِنْ غَيْرِ الفَرِيضَةِ، ثُمَّ لِيَقُلْ: 

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সব কাজে ইস্তিখারাহ্* শিক্ষা দিতেন। যেমন পবিত্র কুরআনের সূরাহ্ আমাদের শিখাতেন। তিনি বলেছেনঃ তোমাদের কেউ কোন কাজের ইচ্ছা করলে সে যেন ফরজ নয় এমন দু’রাক‘আত সালাত আদায় করার পর এ দু’আ পড়ে,,,

দোয়াটি বিস্তারিত জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
নিজের ইস্তেখারা নিজে করাই সুন্নাহভিত্তিক তরীকা।

বান্ধবী বা অন্য কাহারো বিবাহের ইস্তেখারা আপনি করবেননা।
এভাবে গায়রে মাহরাম কোনো পুরুষকে নিয়ে ভাবার সুযোগ নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...