আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
26 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
প্রথমেই আমার পরিচয় দেই। আমি সানজিতা সুলতানা বিন্তী। আমি বিবাহিত। আমার দুই ছেলে সন্তান রয়েছে। গত দুই বছর যাবত আমি খুব অশান্তি তে আছি. আমার স্বামী বিভিন্ন নারিতে আসক্ত। আর নেশা করে ২০১৯ সাল থেকে। আমি তার ২য় বউ। প্রথম বউ আত্ম হত্যা করে মারা গেছে। আমার সামি কথায় কথায় ঝামেলা করে আর বাসা থেকে চলে যেতে বলে। এছাড়া ও প্রতেক দিন নেশা করে আসে গালিগালাজ করে। আমাকে বোরখা পরতে দেয়না বন্ধু মহলে হাসাহাসি করে। এছাড়া ও আমাকে দুইবার বাসা থেকে বের করে দিছিল আমি বাবার বাসায় গিয়ে ছিলাম কোনো খোজখবর রাখেনি।এমন কি বাচ্চাদের সাথেও কথা বলেনি। গত দুইমাস আগে আমি বাসা গেছিলাম গিয়ে ছিলাম তখন ওকে একটা মেয়ের সাথে ধরে এলাকার ছেলে রা অনেক মারসে। যাইহোক পরে আমি না আসতে চাওয়াতে আমাকে আমার স্বামীর চাচা আর বাবা আমাকে রেখে গেছে বুঝায়া। আজকে দের মাস হচ্ছে ওর কোনো চেঞ্জ নাই। আমি রুকাইয়াও করছি অকে প্রতিদিন দোয়া পরে পানি ফুকায় ও খাওয়াইছি কিন্তু তবুও ছোট ছোট বেপারে আমাকে গালিগালাজ করে অপমান করে। কালকে এক সময় বলে যে তোকে ছেড়ে দিলাম। আমার বাচ্চাদের ও সেভাবে খেয়াল রাখেনা খালি হাবিজাবি জিনিস খাওয়ায় আর খারাপ কথা শিখায়। আমাকে মারতে শিখায় দেয়। আমার বাচ্চা রাও এখন ওর মতন করে আচরণ করে। আমাকে খারাপ কথা বলে। এরপর ও আমি ভেবেছিলাম আমি আমার মত করে থাকব এখানে উনি কি করে করুক। কিন্তু আমার সন্তান রা এখানে অনেক খারাপ হয়ে যাচ্ছে কোনো কথা শুনেনা। আর প্রতিদিন এর কাহিনি ত আছেই। এখন আমিও ডিসিশন নিতে চাছি। কি করব হুজুর? আমার কি করা উচিত?আমাকে সহায়তা করুন।

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।

জবাবঃ

স্বামীর জন্য জরুরি হলো স্ত্রীর অধিকার রক্ষা করা, তার সাথে সদব্যবহার করা।

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন

ألا واستوصوا بالنساء خيرا، فإنما هن عوان عندكم ليس تملكون منهن شيئا غير ذلك

শোন হে! তোমরা আমার পক্ষ হতে নারীদের প্রতি সদাচরণের উপদেশ গ্রহণ কর। তারা তো তোমাদের কাছে আটকে আছে। তোমরা তাদের কাছ থেকে এছাড়া আর কিছুর অধিকার রাখো না। (জামে তিরমিযী, হাদীস: ১০৮৩


https://ifatwa.info/91615/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-

ﻭَﻋَﺎﺷِﺮُﻭﻫُﻦَّ ﺑِﺎﻟْﻤَﻌْﺮُﻭﻑ

নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। (সূরা নিসা-১৯)


হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الأَحْوَصِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي أَنَّهُ، شَهِدَ حَجَّةَ الْوَدَاعِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَذَكَّرَ وَوَعَظَ فَذَكَرَ فِي الْحَدِيثِ قِصَّةً فَقَالَ " أَلاَ وَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا… أَلاَ وَحَقُّهُنَّ عَلَيْكُمْ أَنْ تُحْسِنُوا إِلَيْهِنَّ فِي كِسْوَتِهِنَّ وَطَعَامِهِنَّ " .

সুলাইমান ইবনু আমর ইবনুল আহওয়াস (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ বিদায় হজ্জের সময় তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলেন। তিনি আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও গুণগান করলেন এবং ওয়াজ-নাসীহাত করলেনএ হাদীসের মধ্যে বর্ণনাকারী একটি ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ স্ত্রীদের সাথে ভালো আচরণের উপদেশ নাও। ... জেনে রাখ! তোমাদের প্রতি তাদের অধিকার এই যে, তোমরা তাদের উত্তম পোশাক-পরিচ্ছদ ও ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবে। (সুনানে তিরমিযী ১১৬৩)


স্বামীর উপর আবশ্যক হলোঃ- স্ত্রীর সাথে উত্তম ব্যবহার করা। স্ত্রীর সঙ্গে প্রয়োজনে একান্তে বসা ও খোশগল্প করা।

অবসরে স্ত্রীর সঙ্গে একান্তে বসে কিছু গল্পগুজব করা, তার মনের কথা জানা-বোঝা, তার কোনো চাহিদা থাকলে তা জেনে নিয়ে পূরণ করা স্বামীর জন্য জরুরি।  প্রয়োজন মাফিক স্ত্রীকে সময় দেয়া।

বিস্তারিত জানুনঃ-

https://ifatwa.info/26084/


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!


১. স্বামীর উপর আবশ্যক হলোঃ- স্ত্রীর সাথে উত্তম ব্যবহার করা। স্ত্রীর সঙ্গে প্রয়োজনে একান্তে বসা ও খোশগল্প করা।

অবসরে স্ত্রীর সঙ্গে একান্তে বসে কিছু গল্পগুজব করা, তার মনের কথা জানা-বোঝা, তার কোনো চাহিদা থাকলে তা জেনে নিয়ে পূরণ করা স্বামীর জন্য জরুরি।  প্রয়োজন মাফিক স্ত্রীকে সময় দেয়া।

এর পরও যদি আপনাকে আপনার স্বামী সময় না দেয় বা আপনার সাথে খারাপ আচরণ করে তাহলে তার গোনাহ হবে।


২. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে "তোকে ছেড়ে দিলাম" বাক্যটি বলার দ্বারা এক তালাকে রজয়ী পতিত হয়েছে।

এক্ষেত্রে ইদ্দতকাল অতিবাহিত হওয়ার আগেই ফিরিয়ে নিতে চাইলে আপনার স্বামী আপনাকে "ফিরিয়ে নিলাম" বললেই হবে। বা আপনার সাথে স্বামী-স্ত্রী সুলভ দৈহিক আচরণ করলেই হবে।


৩. বোন, প্রথমত আমাদের পরামর্শ থাকবে যে, আপনি আপনার পরিবারের মুরুব্বী ও তাদের পরিবারের মুরুব্বীদের মাঝে বিষয়টি জানিয়ে সমাধান করার চেষ্টা করতে পারেন এবং আল্লাহ তায়ালার কাছে খুব বেশী বেশী দুআ করতে থাকবেন। বিশেষ করে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে। অন্তরকে পরিবর্তন করে দেওয়ার মালিক তো একমাত্র আল্লাহ তায়ালা। 

তারপরও যদি তারা পরিবর্তন না হয় এবং আপনার ওপরে জুলুম, অত্যাচার ও নির্যাতন করতে থাকে তাহলে আপনি আপনার পরিবারের লোকদের সাথে পরামর্শ ক্রমে আবার ইস্তেখারা করে ডিভোর্স বা অন্য কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...