আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
38 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (29 points)
আসসালামু আলাইকুম।
আমার এক পরিচিত বোনের হয়ে পোস্ট করা,উনার ভাষ্যমতে,

উনি আগে সবধরনের গুনাহ থেকেই বেচে থাকত ইদানীং সে প্রচুর গান শুনছে যেমন ফেসবুকে বা ইউটিউবে রিলসের গান দেখছে বা কখনো গান শুনে সেটার ভোকালস শুনছে যা সে এগুলো আগে কিছুই করত না প্রত্যকবার গুনাহ করে আবার তাওবা ভংগ হচ্ছে, অন্যদিকে সে হারাম জিনিস ও দেখে ফেলছে বিশেষ করে মেয়েদের হায়েজ এর আগের আবং পরের সময়গুলোতে তার দ্বারা গুনাহ হয়ে যাচ্ছে কৌতুহলবশত বা যেটা নাকি উনার অঈ সময়টুকুতে উত্তেজনা কাজ করে না চাইতেও উনার বেশ কিছু পার্ট উত্তেজনা অনুভুত করেন এবং নিজেকে ডাইভার্ট করার চেষ্টা করতে করতে একসময় তার গুনাহ হয়েই যাচ্ছি।আর এই গুনাহ গুলো স্পেসিফিক এই সময়টাতেই হয় উনার কি করনীয় বা কি পরামর্শ উনি সবধরনের হারম থেকে বাচতে চান, তাওবা করেও উনার তাওবা ভংং হচ্ছে, কিভাবে নিজেকে হিফাজতে রাখবেন উনি বিয়ের জন্য দুয়াও করেন।কিন্তু,বিয়ের আগেই নিজেকে হিফাজতে রাখতে সব ধরনের হারম থেকে বাচতে অন্তরে তাকওয়া বজায় রাখতে কি করা উচিত বা কোন বই যা পড়া উচিত জানাবেন ইন শা আল্লহ।

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)

ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্ল-হি ওয়া বারাকা-তুহু।

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/51361/ নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

,

ইসলামী স্কলারগন বলেছেন যে,

পর্ণ ও অশ্লীল ভিডিও দেখার ফলে আখেরাতে তো তার জন্য কঠিন ও মারাত্মক শাস্তি রয়েছেই, সাথে সাথে এতে তার আমলনামা কলুষিত হয়, দীন ও চরিত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং অন্তর শয়তানের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। পর্ণ ও অশ্লীলতায় ডুবে থাকা ব্যক্তির অন্তর রোগাক্রান্ত হয়। সে অন্তরে ভয়-ভীতি, অস্থিরতা, দুশ্চিন্তা ও নি:সঙ্গতা অনুভব করে। অন্তর থেকে লজ্জা শরম বিদায় নেয়, ঈমানের স্বাদ উঠে যায় এবং আল্লাহ ভীতি লোপ পায়।

,

দুনিয়াবি ক্ষতি হলোঃ

উক্ত ব্যাক্তি ধীরে ধীরে নানা পাপাচারে লিপ্ত হয়, জিনা-ব্যভিচার ও নোংরামির পথ খুঁজতে থাকে, নিজের উপর জুলুম করতে থাকে, হস্তমৈথুন করে, তার শরীর ও চেহারায় পাপাচারের চিহ্ন ফুটে উঠে এবং শরীরে নানা রোগব্যাধি বাসা বাঁধে।

,

বিবাহিত হলে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে মনোমালিন্য শুরু হতে পারে এবং প্রেম-পরকীয়া জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। কারণ তখন হালাল স্ত্রীও তার কাছে অপছন্দনীয় হয়ে যেতে পারে। বা পূর্ণ শান্তি পায়না। তাকে আর সহ্য হয়না।

,

ইসলামে পরপুরুষ বা পরনারীর দিকে কামনা-বাসনা সহকারে তাকানো হারাম। অনুরূপভাবে পরপুরুষ-পরনারীর লজ্জা স্থানের দিকে তাকানো হারাম। চাই তা সরাসরি হোক, বা ছবি বা ভিডিও এর মাধ্যমে হোক। পর্ণ ও অশ্লীল ভিডিও দেখার ফলে চোখের গুনাহ হয়।

,

উল্লেখ্য যে, এক্ষেত্রে যদি বিষয়টি যেনা পর্যন্ত না যায়,তাহলে সেক্ষেত্রে শরীয়াহর দৃষ্টিকোণ থেকে দুনিয়াতে নির্দিষ্ট কোনো শাস্তির কথা উল্লেখ নেই। বিচারক তা'যির হিসেবে যেই শাস্তি দিবেন, সেটিই হবে। তবে আখেরাতে এর জন্য কঠিন শাস্তি রয়েছে। যেটা আল্লাহ তায়ালা নিক ইচ্ছা মোতাবেক প্রদান করবেন।

আরো বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/51361/

,

নিচের পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে:

নিয়মিত নামায আদায় করতে হবে এবং আল্লাহ্ কাছে মুনাজাত করে, তাঁকে স্মরণ করে, তাঁর কিতাব তেলাওয়াত করে স্বাদ অনুভব করতে হবে।

আল্লাহ্ তাআলা বলেন,

اتْلُ مَا أُوحِيَ إِلَيْكَ مِنَ الْكِتَابِ وَأَقِمِ الصَّلَاةَ إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاء وَالْمُنكَرِ وَلَذِكْرُ اللَّهِ أَكْبَرُ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مَا تَصْنَعُونَ

আপনি আপনার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব পাঠ করুন এবং নামায কায়েম করুন। নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত রাখে। আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন তোমরা যা কর। (সূরা আনকাবুত ৪৫)

,

একবার সাহাবারা রাসূলুল্লাহ -কে বলল, অমুক সাহাবী বিভিন্ন ধরনের খারাপ কাজে জড়িয়ে পড়েছে। রাসূলুল্লাহ জিজ্ঞেস করলেন, সে কি এখনো নামাজ পড়ে? সবাই বলল, হ্যাঁ, পড়ে। রাসূলুল্লাহ বললেন, সে যদি নামাজ পড়তে থাকে তাহলে নামাজ তাকে অবশ্যই একদিন খারাপ কাজ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। (মুসনাদে আহমাদ ২/৪৪৭)

,

একাকী থাকা যাবেবা। বিশেষ করে একাকী রাত কাটানো যাবেনা।

হাদিসে এসেছে নবী কোন পুরুষকে একাকী রাত কাটাতে নিষেধ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ ২/৯১)

,

ঘুমানোর সময় ইসলামী আদবগুলো মেনে চলতে হবে। যেমন ঘুমানোর দোয়াগুলো পড়া, ডান পার্শ্বে কাত হয়ে শোয়া, পেটের উপর ভর দিয়ে না-ঘুমানো; যেহেতু এ সম্পর্কে নবী -এর নিষেধ আছে।

,

কাছে মোবাইল বা কম্পিউটার  রাখা যাবেনা, সেটি অন্য ঘরে রেখে আসতে হবে।

যথাসম্ভব মাগরিবের পর থেকেই মোবাইল থেকে দূরে থাকতে হবে।

,

পাশাপাশি নবী নবী -এর নির্দেশিত প্রতিকার পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে। সেটা হচ্ছে– রোযা রাখা। কেননা রোযা যৌন চাহিদাকে পরিশীলিত করে।

সুতরাং মাঝে মাঝে নফল রোজা রাখতে হবে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ ، مَنِ اسْتَطَاعَ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ ، ، وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ فَإِنَّهُ فَإِنَّهُ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ

হে যুবক সম্প্রদায় ! তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহ করার সামর্থ্য রাখে, তারা যেন বিবাহ করে। কেননা, বিবাহ তার দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং যৌনতাকে সংযমী করে এবং যাদের বিবাহ করার সামর্থ্য নাই, সে যেন রোযা পালন করে। কেননা, রোযা তার যৌনতাকে দমন করে। (বুখারী,হাদীস নং-৪৯৯৬)

,

আরো জানুনঃ

https://ifatwa.info/4425/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...