আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
33 views
in হজ ও উমরা (Hajj and Umrah) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম ।

আমার দেন্মোহর৮লাখের অর্ধেক উসুল হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ গয়না দিয়ে।সেই গয়না  অর্থাৎ ৪লাখ টাকা আমার মেয়ের জন্মের আগে মেয়ের জন্যে রেখে দিতে চেয়েছিলাম।২০২৫এ আমার পিতামাতা হজ্জে যাবেন।আমার জীবনে এছাড়া আর সুযোগ হবেনা।আমি কি এই গয়না বিক্রি করে হজ্জে যেতে পারবো?

এবং আমার বাকি অর্ধেক দেন্মোহর ৪লাখ টাকা ্মেয়েকে পরে দিতে পারবো?মেয়ের বয়স ১মাস ।সে সাবালক হতে হতে ইন শা আল্লাহ তার জন্যে বাকি টাকা রাখতে পারবো।আমি প্রয়োজনে লিখিত দিতে রাজি যে সে আমার ৪লাখ টাকা পাবে তবুও কি হজ্জে যেতে পারবোনা?

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)

ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্ল-হি ওয়া বারাকা-তুহু।

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/44175/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে,

أَنَّ رَجُلاً أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ لِيْ مَالاً وَوَلَدًا وَإِنَّ وَالِدِيْ يَحْتَاجُ مَالِيْ قَالَ أَنْتَ وَمَالُكَ لِوَالِدِكَ إِنَّ أَوْلَادَكُمْ مِنْ أَطْيَبِ كَسْبِكُمْ، فَكُلُوْا مِنْ كَسْبِ أَوْلَادِكُمْ،

এক লোক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল, আমার সম্পদ ও সন্তান আছে। আমার পিতা আমার সম্পদের মুখাপেক্ষী।

তিনি বললেন, “তুমি ও তোমার সম্পদ উভয়ই তোমার পিতার। তোমাদের সন্তান তোমাদের জন্য সর্বোত্তম উপার্জন। সুতরাং তোমরা তোমাদের সন্তানের উপার্জন থেকে খাও।” [আবু দাউদ হা/৩৫৩০; ইবনে মাজাহ, হা/২২৯২, সনদ সহিহ]


প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,

নাবালেগ বাচ্চাকে যে হাদিয়া/উপহার আত্মীয় স্বজনদের পক্ষ থেকে দেয়া হয়, তার দ্বারা নির্দিষ্ট করে তাকে হাদিয়া দেয়া উদ্দেশ্য হয়না, বরং মা বাবাকেই দেয়া উদ্দেশ্য হয়। সুতরাং সেটির মালিক সন্তান নয়, বরং মা বাবাই তার মালিক। সে যা চাই, তারা সেটা করতে পারবে।

অবশ্য যদি কেহ নির্দিষ্ট ভাবে সন্তানকেই কিছু দেয়,তাহলে সন্তানই এর মালিক হবে। (বেহেশতি যেওর ৫/৪৭)


(০১) যেই জিনিস নাবালেগ এর মালিকানায় দেয়া হবে, সেটিকে সেই বাচ্চার কাজেই লাগানো উচিত। পিতা মাতা সেটি ব্যবহার করতে পারবেনা। পাত্র ইত্যাদি যাহা বাসা বাড়ির কাজে ব্যবহার করা যায়, সেটিকে বাসা বাড়ির কাজে ব্যবহার করা যাবে।


(০২) যেই হাদিয়া সময় চলে যাওয়ার কারনে খারাপ হয়ে যায়, এবং সেটি ঐ সময়ে সন্তান ব্যবহার করতে পারেনা।

তাহলে সেটিকে বিক্রয় করে বাচ্চাকে মালিক বানিয়ে দিতে হবে।


(০৩) পিতা মাতাও সেই বস্তুর মূল্য আদায় করে মালিক হতে পারবে।

قال فی الدر: یبیع الأب لأن لہ ولایة التصرف لا الأم ولا بقیة أقاربہ ولا القاضی اجماعاً عرض ابنہ  الکبیر الغائب لا الحاضر إجماعاً لا عقارہ فیبیع عقار صغیر ومجنون۔ (الدر مع الرد: 5/367)

সারমর্মঃ বাবা সেটি বিক্রয় করতে পারবে, কেননা তার সন্তানের সম্পদে হস্তক্ষেপ এর অধিকার রয়েছে।

তবে মায়ের নয়।   

قال فی الشامی: وحاصلہ أن المنقول مما یخشی ہلاکہ فللأب بیعہ حفظا لہ (5/367

সারমর্মঃ যে সমস্ত জিনিস পঁচে যাওয়া বা ধ্বংস হওয়ার ভয় রয়েছে,সেগুলো সেগুলো বিক্রয় করতে পারবে, হেফাজতের জন্য।


তবে উল্লেখিত মাসয়ালায় কিছু ইসলামী স্কলারদের মতবিরোধ রয়েছে। তাদের মতানুসারীগন এই মত অনুযায়ী আমল করতে পারবেন।    

তারা ঢালাও ভাবে উক্ত সম্পদে পিতার ব্যবহার বৈধ বলেন। তারা বলেন যে ছোট বাচ্চারা আত্মীয়স্বজন এবং বিভিন্নজন থেকে যেসকল অর্থ ও উপহার-সামগ্রী পায় পিতা যদি আর্থিক অস্বচ্ছলতার দরুন সেগুলো ব্যবহার বা খরচ করতে চায় তাহলে তার জন্য যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু নেয়া জায়েজ আছে। তবে প্রয়োজন না হলে বা প্রয়োজন অতিরিক্ত না নেয়াই ভালো। কেননা এসব উপহারের প্রতি শিশুদের মন লেগে থাকে।

হ্যাঁ, প্রয়োজনবোধে পিতা যদি তা ব্যবহার করেও তবে পরবর্তীতে সামর্থ্য হলে তাকে তা ফেরত দেয়ার চেষ্টা করবে। আর মা তা নিতে পারবে কি না তা দ্বিমত পূর্ণ।


মা নিতে পারে কি না সে ব্যাপারে দ্বিমত থাকলেও, অধিক বিশুদ্ধ মতে পিতা-মাতা এ ক্ষেত্রে সমান। অর্থাৎ মাও তার অভাব মোচন পরিমাণ সন্তানের সম্পদ গ্রহণ করতে পারে। তবে বাবা বিদ্যমান থাকা অবস্থায় মা সন্তানের অর্থ নেয়ার ব্যাপারে তার নিকট অনুমতি নিবে। কারণ বাবাই হল, পরিবারের প্রধান অভিভাবক।


হাদীস শরীফে এসেছে-

قال جابر بن عبد الله رضي الله عنه : ” يَأْخُذُ الْأَبُ وَالْأُمُّ مِنْ مَالِ وَلَدِهِمَا بِغَيْرِ إذْنِهِ ، وَلَا يَأْخُذُ الِابْنُ وَالِابْنَةُ مِنْ مَالِ أَبَوَيْهِمَا بِغَيْرِ إذْنِهِمَا ” رواه ابن حزم في “المحلى” (6/ 385) ، وصححه.

জাবের রা. বলেন, “বাবা ও মা তাদের সন্তানের সম্পদ তার অনুমতি ছাড়াই নিতে পারে। কিন্তু ছেলে বা মেয়ে পিতামাতার সম্পদ তাদের অনুমতি ছাড়া নিতে পারবে না।” [আল মুহাল্লা ৬/৩৪৫]


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!


প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যদি আপনার মেয়ের মালিকানায় এখানো দিয়ে না থাকেন তাহলে এটা একান্ত আপনার সম্পদ। সুতরাং আপনার সম্পদ দিয়ে হজ্বে যাবেন। এতে কোনো সমস্যা নেই ইনশাআল্লাহ।

আর আপনি যদি আপনার মেয়ের মালিকানায় দিয়ে থাকেন তাহলে উত্তম হলো যে, আপনি আপনার স্বামীর থেকে অনুমতি নিয়ে তারপর হজ্বে যাবেন। অত:পর পরবর্তীতে মেয়েকে এই পরিমাণ সম্পদ ফিরিয়ে দিবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...