আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
33 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (2 points)
আমার পুরো কুরআন পড়া নেই। হাদীস নিয়েও ভালো পড়াশোনা নেই৷ মূলত আমি হাদীসের হাজার হাজার রকমের ব্যাখ্যা পাই, কুরআনেআমারর আয়াতেরও এত এতরকম ব্যাখ্যা। কোন আলেম বিশ্বাসযোগ্য, এটাও বুঝতামনা। তাই আমি আল্লাহর কাছে সাহায্য চেয়ে চেয়ে পড়তাম এগুলো। যেগুলোর দিকে আল্লাহ গাইড করবেন সেগুলোকে মেনে নেব এমন। এভাবেই প্রায় সবকিছু জেনেছিলাম যতটুকুই জেনেছি।
কিন্তু কিছুদিন আগে ইউটিউবে কয়েকজনের চ্যানেল পাই,  যেমন the apostate prophet। নিজেকে এক্স মুসলিম দাবী করে আর ইসলামকে মিথ্যা প্রমাণ করার চেষ্টা করে। আবার আরেকজন আছে বায়োলজি টিচার, সে দাবী করে গডের দরকার নেই৷ আবার আরেকটা ভিডিওতে দুইজন মুসলিম যখন আলোচনা করে বিবর্তনকে মিথ্যা প্রমাণ করার চেষ্টা করে তখন ওটার কমেন্টে প্রচুর মানুষ দাবী করে যে তারা বিবর্তন নিয়ে পড়তে গিয়ে ইসলাম থেকে বের হয়ে গেছে। তাদের যুক্তি হল, বিবর্তনকে কোনোভাবেই মিথ্যা বলা সম্ভব না। তারা বিজ্ঞানের বাইরে কিছু মানতেই পারেনা আবার দাবী করে যে বিজ্ঞান কখনোই নিজেকে বিশ্বাস করতে বলেনা, ভুল করতে করতে শেখে। তো দেখা যায় যে এদের কমেন্টের রিপ্লাই দেখতে গিয়ে আরো অনেক মুরতাদের কমেন্ট পাই যেগুলোতে তারা ইসলামের এমন এমন জিনিস নিয়ে কথা বলে যেগুলো তারা দাবী করে যে ওগুলো নাকী কনট্রাডিকটরি। কিন্তু আমি আগে থেকেই জানি যে ইসলামের এগুলোতে কোনো ভুল নেই। কারণ আমার মাথায়ও এই প্রশ্নগুলো এসেছিল আর আমি উত্তর বের করেছি আলেমদের লেকচার দেখে লেখা পড়ে। কিন্তু এরপরেও এইরকম মানুষের কমেন্ট আর ভিডিও দেখতে গেলে নেশার মত হয়ে যায় আর কেমন যেন সবকিছু ভেঙে পড়তে থাকে। মনে হয় এতদিন যা জেনেছি সব ভুল। আমি জানি ভুল না, ওদের যুক্তিগুলো খুবই দূর্বল, কিন্তু তাও আমার পুরোটা জিনিস কেমন গুলিয়ে যায়৷ মনে হয় ছোট একটা জিনিস মনের মাঝে ঢুকে বিশাল বড় হয়ে আমার চিন্তা করার ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে। আমি অবিশ্বাসী হতে চাইনা। আমি জানি এমন অনেককিছু দুনিয়ায় আছে যেগুলো আমরা জানিনা, বিজ্ঞান সবসময়ই বদলায়। কুরআন সবসময়ই ঠিক। কিন্তু আমার এমনকি কুরআন হাদীসের সত্যতা নিয়েও সন্দেহ চলে এসেছিল, যে ব্যাখ্যাগুলো আলেমরা দেন ওগুলো কি মনগড়া? যেরকম ভাবলে শান্তি লাগে ওরকম বানিয়ে দেয়া হয়? কিন্তু আমি তো প্রচুর জিনিস নিজের জীবনেও টেস্ট করে দেখেছি কুরআন কখনোই ভুল প্রমাণ হয়নি! আপাতত আমি দুআর মধ্যে আছি। আমি ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে পড়তে চাইনা।

আমার প্রশ্নটা হল, কুরআন হাদীসে মুরতাদদের নিয়ে কী বলা আছে? তাদের থেকে কীভাবে সাবধানতা অবলম্বন করা যায়? তাদের সাইকোলজি নিয়ে কী বলা আছে? কেন মানুষের মধ্যে ফিতরাতগত ইশ্বর বিশ্বাস থাকলেও তারা অস্বীকার করতে চায়? শাস্তি পাওয়াটাকে অস্বীকার করাটা কি তাদের অবচেতন মনে থাকে?

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।

জবাবঃ

ওয়াবিসা ইবনে মা'বাদ রাযি থেকে বর্ণিত,

ﻭﻋﻦ ﻭﺍﺑﺼﺔَ ﺑﻦِ ﻣَﻌْﺒِﺪٍ  ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﺗَﻴْﺖُ ﺭﺳﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪ ﷺ ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺟِﺌْﺖَ ﺗﺴﺄَﻝُ ﻋﻦِ ﺍﻟﺒِﺮِّ؟ » ﻗُﻠْﺖُ : ﻧَﻌَﻢْ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺍﺳْﺘَﻔْﺖِ ﻗَﻠْﺒَﻚَ، ﺍﻟﺒِﺮُّ : ﻣَﺎ ﺍﻃْﻤَﺄَﻧَّﺖْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲُ، ﻭﺍﻃْﻤَﺄَﻥَّ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻘَﻠْﺐُ، ﻭﺍﻹِﺛﻢُ : ﻣَﺎ ﺣﺎﻙَ ﻓﻲ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲِ، ﻭﺗَﺮَﺩَّﺩَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﺪْﺭِ، ﻭﺇِﻥْ ﺃَﻓْﺘَﺎﻙَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻭَﺃَﻓْﺘَﻮﻙَ » ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ، ﺭﻭﺍﻩُ ﺃﺣﻤﺪُ ﻭﺍﻟﺪَّﺍﺭﻣِﻲُّ ﻓﻲ " ﻣُﺴْﻨَﺪَﻳْﻬِﻤﺎ ."

তিনি বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট গেলাম। রাসূলুল্লাহ সাঃ আমাকে বললেন,তুমি কি নেকীর কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার জন্য এসেছ? আমি বললাম জ্বী হ্যাইয়া রাসূলাল্লাহ!

তখন তিনি আমাকে বললেন, তুমি তোমার অন্তরের নিকট ফাতওয়া জিজ্ঞাসা করো। নেকি হল সেটা যার উপর অন্তর প্রশান্তিবোধ করে এবং যে জিনিষের উপর অন্তর শান্ত থাকে। আর গোনাহ হল সেটা, যা অন্তরে অশান্তি সৃষ্টি করে নাড়িয়ে দেয় এবং অন্তরকে দ্বিধান্বিত করে ফেলে। যদিও উক্ত কাজ সম্পর্কে মুফতিগণ বৈধতার ফাতাওয়া প্রদাণ করুক না কেন। (মুসনাদে আহমদ-১৭৫৪৫)


হাসান ইবনে আলী রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে।

ﻭﻋﻦ ﺍﻟﺤَﺴَﻦِ ﺑﻦ ﻋَﻠﻲٍّ ﺭﺿﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﻔِﻈْﺖُ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﷺ : « ﺩَﻉْ ﻣَﺎ ﻳَﺮِﻳﺒُﻚَ ﺇِﻟﻰ ﻣَﺎ ﻻ ﻳﺮِﻳﺒُﻚ » ﺭﻭﺍﻩُ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ﻭﻗﺎﻝ : ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ ﺻﺤﻴﺢٌ 

তিনি বলেনআমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেন, সন্দেহ যুক্ত জিনিষকে পরিহার করে সন্দেহমুক্ত জিনিষকে গ্রহণ করো। (সুনানু তিরমিযি-২৪৪২)


নু'মান ইবনে বশির বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি-

عن عامر، قال: سمعت النعمان بن بشير، يقول: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: "الحلال بين، والحرام بين، وبينهما مشبهات لا يعلمها كثير من الناس، فمن اتقى المشبهات استبرأ لدينه وعرضه، ومن وقع في الشبهات: كراع يرعى حول الحمى، يوشك أن يواقعه، ألا وإن لكل ملك حمى، ألا إن حمى الله في أرضه محارمه، ألا وإن في الجسد مضغة: إذا صلحت صلح الجسد كله، وإذا فسدت فسد الجسد كله، ألا وهي القلب "

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, (কোনো জিনিষ) হালাল (হওয়া) পরিস্কার। (এবং কোনো জিনিষ) হারাম(হওয়া) ও পরিস্কার। হ্যা এ দুয়ের মধ্যে কিছু বিধান রয়েছে সাদৃশ্যপূর্ণ। যার সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষই জানেনা। যে ব্যক্তি সন্দেহপূর্ণ জিনিষ থেকে বেঁছে থাকলসে যেন তার দ্বীন এবং ইজ্জতকে হেফাজত করে নিল। আর যে ব্যক্তি সন্দেহপূর্ণ জিনিষে পতিত হলসে যেন হারামে পতিত হল। যেমন রাখাল ক্ষেতের দেয়াল ঘেষে পশু চড়ালো। এখানে সম্ভাবনা রয়েছে যেপশু ক্ষেতে নেমে যাবে। 


জেনে রাখ! প্রত্যেক বাদশারই একটি সীমান্তরেখা রয়েছে এবং আল্লাহ যমীনে তার সীমারেখা হল, তার হারাম বিধি-বিধান। জেনে রাখ! শরীরে একটি মাংসপিণ্ড রয়েছে। যখন সেই মাংসপিণ্ড ভাল থাকে তখন সারা শরীর-ই ভাল থাকে। আর যখন সেই মাংসপিণ্ড নষ্ট হয়ে যায়, তখন সমস্ত শরীরই নষ্ট হয়ে যায়। সেই বস্তু হল, ক্বলব বা অন্তর। (সহীহ বুখারী-৫২)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!


প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শ থাকবে যে, আপনি এমন ব্যক্তি বা জিনিস অথবা ভিডিও দেখা থেকে বিরত থাকবেন যা আপনার ঈমানের মধ্যে ত্রুটিযুক্ত করে দেই। সুতরাং এসব জিনিস থেকে বিরত থাকবেন। আর একান্ত কোনো জিনিস সম্পর্কে প্রশ্ন বা জানার ইচ্ছা থাকলে যোগ্য কোনো আলেমের কাছ থেকে জেনে নিবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...