আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
19 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (2 points)
আমি প্রবাসী। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। আমার কোম্পানির নিয়ম অনুযায়ী বেতনরে ৩ শতাংশ প্রভিডেন্ট ফান্ডে জমা দেয়া বাধ্যতামূলক। তবে কেউ চাইলে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ পর্যন্ত জমা রাখতে পারে। প্রভিডেন্ট ফান্ডে যে টকাটা জমা করা হয় সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার সেই টাকার উপর ইনকাম ট্যাক্স মউকুফ করে দেয়। একারণে আমি আমার বেতনের ১৫ শতাংশ প্রভিডেন্ট ফান্ডে জমা রাখি।

নিয়ম অনুযায়ী কোম্পানির পক্ষ থেকে আরও ৩ শতাংশ টাকা জমা রাখে। উল্লেখ্য কোম্পানির জমার পরিমাণটা নির্দিষ্ট। আমার কম বা বেশি জমা রাখার উপর এটা নির্ভর করে না। এভাবে মোট ১৮ শতাংশ টাকা তারা বিভিন্ন ব্যাবসা এবং ব্যাংকে বিনিয়োগ করে যার বিস্তারিত আমার জানার সুযোগ নেই। এই টাকাটা আমার এখনি হাতে পাবারও সুযোগ নেই। চাকরি শেষে লভ্যাংশ সহ পুরো টাকাটা তারা আমাকে প্রদান করবে। এই টাকা থেকে যে লভ্যাংশ আসবে আমি সেটা সওয়াবের আশা ছাড়াই দান করে দেয়ার নিয়ত রাখি।

এমতাবস্থায় আমার প্রশ্ন ২ টিঃ

১। বাধ্যতামূলক ৩ শতাংশের অতিরিক্ত টাকা ট্যাক্স মউকুফের উদ্দেশ্য জমা করাটা আমার জন্য জায়েজ কিনা।

২। কোম্পানির পক্ষ থেকে যে ৩ শতাংশ টাকা জমা রাখা হচ্ছে সেটা ভবিষ্যতে গ্রহণ করা আমার জন্য জায়েজ হবে কিনা।

<!-- notionvc: ab056eb8-9b33-49e6-9a03-a8666f5acb6d -->

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

প্রভিডেন্ট ফান্ড এর অতিরিক্ত টাকার বিধানঃ  

প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বাধ্যতামূলকভাবে চাকরিজীবীর বেতনের যে অংশ প্রভিডেন্ট ফান্ডে কেটে রাখা হয় তার উপর সুদের নামে অতিরিক্ত যা দেওয়া হয় তা চাকরিজীবীর জন্য গ্রহণ করা জায়েয আছে। এটাকে সুদ বলা হলেও শরীয়তের দৃষ্টিতে তা সুদ নয়।
,
আর প্রভিডেন্ট ফান্ডে বাধ্যতামূলক অংশের অতিরিক্ত আরো টাকা নিজ থেকে খাটানো জায়েয নেই। কেউ খাটালে এ টাকার উপর যা অতিরিক্ত দেওয়া হবে তা নাজায়েয ও সুদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
,
তবে কেহ যদি বাধ্যতামূলক অংশের অতিরিক্ত টাকা জমা করে,তাহলে তাহা বৈধ হবেনা। এটির কারণে সুদি চুক্তির গুনাহ হবে। 

বিস্তারিত জানুনঃ 

শরীয়তের বিধান হলো টাকার বিনিময়ে টাকা নিলে  কোনো কমবেশি করা যাবেনা।
কম বেশি করলে সেটি সূদ হবে।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَبِي الْخَلِيلِ، عَنْ مُسْلِمٍ الْمَكِّيِّ، عَنْ أَبِي الأَشْعَثِ الصَّنْعَانِيِّ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الذَّهَبُ بِالذَّهَبِ تِبْرُهَا وَعَيْنُهَا وَالْفِضَّةُ بِالْفِضَّةِ تِبْرُهَا وَعَيْنُهَا وَالْبُرُّ بِالْبُرِّ مُدْىٌ بِمُدْىٍ وَالشَّعِيرُ بِالشَّعِيرِ مُدْىٌ بِمُدْىٍ وَالتَّمْرُ بِالتَّمْرِ مُدْىٌ بِمُدْىٍ وَالْمِلْحُ بِالْمِلْحِ مُدْىٌ بِمُدْىٍ فَمَنْ زَادَ أَوِ ازْدَادَ فَقَدْ أَرْبَى وَلاَ بَأْسَ بِبَيْعِ الذَّهَبِ بِالْفِضَّةِ - وَالْفِضَّةُ أَكْثَرُهُمَا - يَدًا بِيَدٍ وَأَمَّا نَسِيئَةً فَلاَ وَلاَ بَأْسَ بِبَيْعِ الْبُرِّ بِالشَّعِيرِ وَالشَّعِيرُ أَكْثَرُهُمَا يَدًا بِيَدٍ وَأَمَّا نَسِيئَةً فَلاَ "

হাসান ইবন আলী (রহঃ) ........... উবাদা ইবন সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সোনা সোনার বিনিময়ে সমান সমান বিক্রি করবে, চাই তা সোনার পাত হোক বা স্বর্ণ মুদ্রাই হোক এবং রুপা রুপার বিনিময়ে সমান সমান বিক্রি করবে, চাই তা রুপার পাত হোক বা রৌপ্য মুদ্রাই হোক। আর গম গমের বিনিময়ে এক মুদ এক মুদের বিনিময়ে বিক্রি করতে হবে এবং যবের বিনিময়ে যবও এক মুদের বিনিময়ে এক মুদ বিক্রি করতে হবে। আর খেজুর খেজুরের বদলে এক মুদের বিনিময়ে এক মুদ বিক্রি করতে হবে। একই ভাবে লবণ লবণের বিনিময়ে এক মুদের বদলে এক মুদ বিক্রি করতে হবে। এই প্রকারের একই ধরনের জিনিসের মধ্যে যে ব্যক্তি বেশী নিবে বা দিবে, তা-ই সূদ হবে।

তবে সোনাকে রুপার বিনিময়ে এ অবস্থায় বিক্রি করা, যখন রুপা উভয় অংশের মধ্যে অধিক হবে, তবে তা দূষণীয় নয়। তবে এতে শর্ত হলো- লেন-দেন হাতে হাতে হতে হবে, বাকীতে বিক্রি জায়িয হবে না। একই রূপে গম যবের বিনিময়ে বিক্রি করা দূষণীয় নয়, যখন যবের অংশ উভয়ের মধ্যে অধিক হবে। তবে তা এ শর্তে যে, লেন-দেন হাতে হাতে হতে হবে এবং এতেও বাকী বিক্রি বৈধ নয়।
(আবু দাউদ ৩৩১৬)
,
★প্রভিডেন্ট ফান্ড এর ক্ষেত্রে অতিরিক্ত টাকা  সূদ নয়।   

কেননা বেতনের কর্তনকৃত ঐ অংশ  ইচ্ছা করলেও উক্ত চাকুরজীবি এখন উসূল করতে পারবেনা।আর কবজা বা হস্তগ্রত করার পূর্বে কেউ কোনো বেতন ভাতার মালিক হতে পারে না।যখন সে উক্ত টাকার মালিকই হয়নি,তখন সে কিভাবে এ টাকাকে সুদে লাগাবে।তাই কর্তনকৃত টাকার চেয়ে অতিরিক্ত টাকার প্রভিডেন্ট ফান্ডকে সুদ বলা যাবে না।বরং এক্ষেত্রে এটাই অনুমান করা হবে যে,বেতন-ভাতার অপরিশোধিত সেই টাকাগুলাই এখন তার হস্তগ্রত হচ্ছে। এখানে সবগুলাকেই তার বেতন রূপে গণ্য করা হবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
প্রশ্নের বিবরন মতে বাধ্যতামূলক ৩ শতাংশের অতিরিক্ত টাকা জমা করাটা আপনার জন্য জায়েজ হবেনা।
চাই তাহা ট্যাক্স মউকুফের উদ্দেশ্যে হোক বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে হোক। 
কোনো ছুরতেই জায়েজ হবেনা। 

(০২)
কোম্পানির পক্ষ থেকে যে ৩ শতাংশ টাকা জমা রাখা হচ্ছে, সেটা ভবিষ্যতে গ্রহণ করা আপনার জন্য জায়েজ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...