আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
40 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (16 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।
১) একটা পরিবারের একজন সদস্য মানসিক ভাবে অসুস্থ  এবং তিনি পরিবারের অন্যদের নানারকমভাবে শারীরিক ও মানসিক কষ্ট দেয়। নানারকমের আজগুবি কাজ/ কথা বলে। এসব ঘটনা যদি কারো সাথে শেয়ার করি তাহলে কি এটা গীবতের অন্তর্ভুক্ত হবে?
২) কাউকে গীবত করছে বুঝতে পেরে থামানোর পরও সে যদি গীবত করতেই থাকে তখন অনিচ্ছায় গীবত শুনে ফেলার কারণে গুনাহ হবে শ্রোতার?

৩) অতীতে বুঝে না বুঝে গীবত শোনা বা গীবত করলে সেটা থেকে তওবা করলে কি আগের গুনাহ মাফ হবে?

৪) কেউ যদি আমার সামনে একজন বোনের শ্বশুর বাড়ির  বিষয়ে কথা বলে যা এক পর্যায়ে শ্বশুরবাড়ির মানুষদের সম্পর্কে  গীবতের দিকে চলে যায়৷, যদিও ওই বোনটির শ্বশুর বাড়ির কাউকে আমি চিনিনা, শুধু বোনটিকে চিনি। এক্ষেত্রে আমার কি গীবত শোনা হয়ে গেল?

৫) একজন প্রতিবেশী মহিলা মারা যাওয়ার পর লাশ দেখেছিলাম, মহিলাটি যুবতী বয়সে মারা গিয়েছিলো। ওনার মৃত্যু আকস্মিক হওয়ায় আমি বিষয়টা নিয়ে খুব চিন্তা করতাম। মৃত্যুর ২/১ দিনের মধ্যেই স্বপ্নে দেখি একটা সাদা কাফন পড়া লাস খুব কষ্ট পাচ্ছিলো হাত পা কেমন যেন করছিলো, আমাকে যেন বোঝাচ্ছিল পর্দা না করায় এমন হচ্ছে। স্বপ্নটির ব্যখ্যা জানাবেন প্লিজ।

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اجْتَنِبُوا كَثِيرًا مِّنَ الظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ ۖ وَلَا تَجَسَّسُوا وَلَا يَغْتَب بَّعْضُكُم بَعْضًا ۚ أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَن يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَّحِيمٌ [٤٩:١٢] 

মুমিনগণ, তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাক। নিশ্চয় কতক ধারণা গোনাহ। এবং গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না। তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তারা মৃত ভ্রাতার মাংস ভক্ষণ করা পছন্দ করবে? বস্তুতঃ তোমরা তো একে ঘৃণাই কর। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু। {সূরা হুজুরাত-১২}

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «أَتَدْرُونَ مَا الْغِيبَةُ؟» قَالُوا: اللهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ، قَالَ: «ذِكْرُكَ أَخَاكَ بِمَا يَكْرَهُ» قِيلَ أَفَرَأَيْتَ إِنْ كَانَ فِي أَخِي مَا أَقُولُ؟ قَالَ: «إِنْ كَانَ فِيهِ مَا تَقُولُ، فَقَدِ اغْتَبْتَهُ، وَإِنْ لَمْ يَكُنْ فِيهِ فَقَدْ بَهَتَّهُ»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লম বলেছেনঃ তোমরা কি জান, গীবত কি? তাঁরা বললেনঃ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। তিনি বললেনঃ গীবত হল তোমার ভাইয়ের সম্পর্কে এমন কিছু আলোচনা করা, যা সে অপছন্দ করে। প্রশ্ন করা হলঃ আমি যা বলেছি তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে থেকে থাকে, তাহলে আপনি কি বলেন? তিনি বললেনঃ তুমি তার সম্পর্কে যা বলেছ তা যদি তার মধ্যে থাকে, তাহলেই তুমি তার গীবত করলে। আর যদি তা তার মধ্যে না থাকে, তাহলে তো তুমি তার প্রতি অপবাদ আরোপ করলে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৫৮৯, ৭০, সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-১১৪৫৪, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৫৭৫৮, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৬২৯৩, মুজামে ইবনে আসাকীর, হাদীস নং-১৪১৭, সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-২১১৬৩}

ছয় ছুরতে কাহারো গীবত করা জায়েজ।
তার মধ্যে ২য় নাম্বার হলোঃ-

 الثاني: الاستعانة على تغيير المنكر ورد العاصي إلى الصواب. وبيانه أن يقول لمن يرجو قدرته على إزالة المنكر: فلان يعمل كذا فازجره عنه ونحو ذلك، ويكون مقصوده إزالة المنكر، فإن لم يقصد ذلك كان حراما. 

(দুই) মন্দকে পরিবর্তন করতে এবং গোনাহগারকে নেকির দিকে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে কারো গীবত করা।যেমন এমন কারো কাছে গিয়ে গিবত করা,যে ব্যক্তি ঐ মন্দকাজ সম্পাদনকারীকে ধমক দিতে পারে, ইত্যাদি ইত্যাদি।শর্ত এই যে, মন্দকে বিদূরিত করার উদ্দেশ্যই থাকতে হবে।উদ্দেশ্য যদি অন্য কিছু হয় তখন কিন্তু গীবত করা জায়েয হবে না বরং হারাম হবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তার ঘটনা এমন কাহারী সাথে শেয়ার করা,যে তাকে সংশোধন এর চেষ্টা করতে পারবে,তাহলে তার কাছে শেয়ার করা জায়েজ হবে।

অন্যথায় জায়েজ হবেনা।


(০২)
এমতাবস্থায় শ্রোতার উচিত ছিলো মজলিস ত্যাগ করে অন্যত্রে চলে যাওয়ার।
সে যদি উক্ত মজলিসেই বসে থেকে অনিচ্ছাকৃত ভাবে হলেও গীবত শোনে,সেক্ষেত্রে তার গুনাহ হবে।

(০৩)
এক্ষেত্রে যার গীবত করা হয়েছে,তার থেকে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।
ক্ষমা চাওয়া অসম্ভব হলে সেক্ষেত্রে আল্লাহর কাছে নিজের জন্য ও তার জন্য গুনাহ মাফের দোয়া করবেন।

(০৪)
এখানে তার শশুর বাড়ির লোক বলেই তো গীবত করা হচ্ছে,যেখানে তাদের আংশিক  পরিচয় চলেই এসেছে।

তাই এক্ষেত্রেও গীবত শোনার গুনাহ হবে।

তার শশুর,তার শাশুড়ী এভাবে পরিচয় উল্লেখ না করে এমনিতেই কাল্পনিক একজন মহিলার গল্প শোনানোর ন্যায় গল্প শোনালে গীবত শোনার গুনাহ হতোনা।

(০৫)
স্বপ্নটি আপনার মনের কল্পনা প্রসূত হতে পারে।
অথবা আপনার আমলের কমতির দিকেও ইশারা হতে পারে।

এক্ষেত্রে করনীয় জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...