আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
62 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ্।
১/ আমি  পরপর ৩ বার ৩ দিন স্বপ্নে বন্যা দেখছি । বন্যা নিয়ে আমি কোনো চিন্তা করিনা কিন্তু এখন ৩ বার স্বপ্নে বন্যা দেখে টেনশন হচ্ছে ।  যতবারই বন্যা দেখি আমার এলাকায় বা ঘরে বন্যা দেখিনা। অন্য কোথাও দেখি এবং ওইখানে আমি  অনেকসময় থাকি আবার  অনেকসময় আমি থাকিনা । কিন্তু   দুইটা স্বপ্নে বন্যা আমাকে স্পর্শ করেনি ।
১ম স্বপ্নের বন্যার পানি হালকা লাল ছিল এবং ফুটন্ত পানির মতন ছিল টগবগ করে ফুটতেছিল।
২য় স্বপ্নের পানি  কখনো ঘোলাটে এবং  কখনো সচ্ছ সাদা ছিল।   হালকা পানির মধ্যে আমি হাটতেছিলাম অনেক মহিলাদের সাথে তারা বন্যার কারণে ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছিল। একটা ছেলে হঠাৎ  উপর থেকে খালে পড়ে যায়। ছেলেটার সাথে একটা ছাগল ছিল। বন্যার পানি থেকে বাঁচতে দুজন টানে উঠার চেষ্টা করে৷
৩য় স্বপ্নে, আমাকে পানিই স্পর্শ করেনি  আমার ঘরেও বন্যার পানি নাই কিন্তু  অন্য কোথাও বন্যা হইছে ওই বন্যার পানি ঘোলাটে  ওই পানিতে কেউ কেউ সাঁতার কাটছে।
★ বারবার একই স্বপ্ন দেখা এই স্বপ্নের ব্যাখ্যা কি??  
/ আমি আমার স্মার্ট ফোনটা চালাতে চাইনা। আমি অনেক সময় নষ্ট  করি স্মার্ট ফোনে। এটা বিক্রি  করে দিতে চাচ্ছিলাম কিন্তু  কেউ নিবেও না কারণ ফোনে কল আসলে ফোন কিছুক্ষণ  নিজে নিজে কাজ করে। আম্মুও নিষেধ করে এবং বলছে  আমার মোবাইলটা দিয়ে দিতাম।  আমি উনাদেরকে ফোনটা দিতে চাইনা কারণ উনারা নাটক দেখে। এদিকে আমার সময় অপচয়ের গুনাহ হয়। এজন্য আমি ফোনটা চালাতে চাইনা।
২/ এখন আম্মুকে যদি ফোনটা দেই তাহলে উনারা নাটক দেখলে আমার গুনাহ হবে??
আমি নিষেধ করি  এগুলো যেনো না দেখে। আমি  নামাজ পড়ার জন্য বলি, কিয়ামত,কবর ইত্যাদি সম্পর্কে বলি ভয় ঢুকানোর চেষ্টা করি কিন্তু  দুয়েকদিন নামাজ কালাম পড়লেও পরে আবার সেই বেখেয়াল হয়ে যায়।  
৩/ আমি তাদের কিভাবে দাওয়াহ দিতে পারি?
৪/আমার ফ্যামিলির জন্য আমাকে  কিয়ামতের দিন কোনো জবাবদিহি করতে হবে কিনা?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
আবু সা’ঈদ্ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:

إِذَا رَأَى أَحَدُكُـمْ الرُّؤْيَا يُحِبُّهَا ، فَإِنَّهَا مِنَ اللهِ ، فَلْيَحْمَدِ اللهَ عَلَيْهَا ، وَلْيُحَدِّثْ بِهَا ، وَإِذَا رَأَى غَيْرَ ذَلِكَ مِمَّا يَكْـرَهُ ، فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ الشَّيْطَانِ ، فَلْيَسْتَعِذْ مِنْ شَرِّهَا، وَلاَ يَذْكُرْهَا لِأَحَدٍ ، فَإِنَّهَا لَنْ تَضُرَّهُ

‘‘তোমাদের কেউ কোন ভালো স্বপ্ন দেখলে তা অবশ্যই আল্লাহ্ তা’আলার পক্ষ থেকে। অতএব সে যেন এ ব্যাপারে আল্লাহ্ তা’আলার প্রশংসা করে এবং তা কাউকে বলে। আর যদি সে এর বিপরীত তথা খারাপ স্বপ্ন দেখে তা হলে তা অবশ্যই শয়তানের পক্ষ থেকে। অতএব সে যেন উহার অনিষ্ট থেকে আল্লাহ্ তা’আলার নিকট আশ্রয় কামনা করে এবং তা কাউকে না বলে। কারণ, এ জাতীয় স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না’’।
(বুখারী, হাদীস ৬৯৮৫, ৭০৪৫)

ভালো স্বপ্ন দেখলে তা শুধুমাত্র প্রিয়জনকেই বলবে এবং খারাপ স্বপ্ন দেখলে শয়তান ও তার অনিষ্ট থেকে আল্লাহ্ তা’আলার নিকট আশ্রয় চাবে এবং তিন বার থুতু ফেলবে। উপরন্তু তা কাউকে বলবে না।

আবু ক্বাতাদাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ আমি কখনো কখনো খারাপ স্বপ্ন দেখে রোগাক্রান্ত হয়ে পড়তাম। অতঃপর আমি রাসূল (সা.) কে বলতে শুনেছি তিনি বলেন:

الرُّؤْيَا الْـحَسَنَةُ مِنَ اللهِ ، فَإِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ مَا يُحِبُّ فَلاَ يُحَدِّثْ بِهِ إِلاَّ مَـنْ يُحِبُّ ، وَإِذَا رَأَى مَا يَكْرَهُ فَلْيَتَعَوَّذْ بِاللهِ مِنْ شَرِّهَا وَمِنْ شَـرِّ الشَّيْطَانِ ، وَلْيَتْفِلْ ثَلاَثًا ، وَلاَ يُحَدِّثْ بِهَا أَحَدًا ، فَإِنَّهَا لَنْ تَضُرَّهُ

‘‘ভালো স্বপ্ন আল্লাহ্ তা’আলার পক্ষ থেকে। সুতরাং তোমাদের কেউ ভালো স্বপ্ন দেখলে সে যেন তা শুধুমাত্র তার প্রিয়জনকেই বলে। আর যদি সে খারাপ স্বপ্ন দেখে তা হলে সে যেন তার ও শয়তানের অনিষ্ট থেকে আল্লাহ্ তা’আলার নিকট আশ্রয় কামনা করে এবং তিনবার থুথু ফেলে। উপরন্তু তা কাউকে না বলে। কারণ, এ জাতীয় স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না’’।
(বুখারী, হাদীস ৭০৪৪)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
https://ifatwa.info/31057/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
স্বপ্নে বন্যা দেখা ভাল কিছু নয়, সুতরাং আপনি সাধ্যানুযায়ী সদকাহ করুন।এবং যথাসম্ভব ইবাদতে নিয়োজিত থাকার চেষ্টা করুন।

(০২)
আপনার আম্মুকে দেয়ার পর সেই ফোনে আপনার আম্মু নাটক দেখলে আপনারও গুনাহ হবে।
গুনাহের কাজে সহযোগিতার গুনাহ হবে।

সুতরাং এমনিতেই কাউকে কল দেয়া ও কল রিসিভ করার জন্য ফোনটি নিজের কাছে রেখে দিতে পারেন।
এতে গুনাহ থেকে বাঁচা অসম্ভ হলে সেক্ষেত্রে ফোনের ত্রুটি দূর করে দিয়ে ফোনটি বিক্রয় করে দিবেন।

(০৩)
আপনার আম্মুর হেদায়েত এর জন্য বাসায় তালিমের ব্যবস্থা করতে পারেন,নিজ এলাকাতে তাবলীগের মহিলাগন যেই বাসায় তালিম করে,সেখানে তালিমের জন্য তাকে পাঠাতে পারেন।
মাহরাম সহকারে তাকে মাস্তুরাত জামাতে পাঠাতে পারেন।

আপনি হিকমতের সহিত তাকে ধারাবাহিক ভাবে,  ভালোভাবে বুঝানো অব্যাহত রাখবেন।
জাহান্নামের শাস্তির বিষয়দি বর্ণনা করবেন।  

বাসায় টিভি সহ গুনাহের আসবাব থাকলে তাদেরকে হিকমতের সহিত বুঝিয়ে সেটি হতে বাসাকে মুক্ত করবেন।
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,    
বাড়িতে প্রত্যাহ তালিমের ব্যবস্থা করুনঃ

ফাজায়েলে আমল’ 

এটি তাবলিগ জামাতের লোকেদের মধ্যে অধিক পরিচিত ও ব্যাপক পঠিত একটি বই। নামাজ, রোজা , হজ, জাকাত জিকির, কুরআন তেলাওয়াতের ফজিলত ও সাহাবিদের জীবনীর সমন্বয়ে রচিত বইটি।

তাবলিগী মেহনতে অংশগ্রহণকারীদের তালিম-তরবীয়তের জন্য তাবলিগের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইলিয়াস রহ. উপর্যুক্ত বিষয়গুলোর সমন্বয়ে একটি বই রচনার তীব্র প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। ফলে তিনি ভাতিজা শায়খুল হাদিস হযরত মাওলানা যাকারিয়াকে রহ. এরকম বই লেখার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।

আরো কিতাবের নাম জানুনঃ
,
এবং হক্কানী শায়েখদের আখেরাত,জান্নাত,জাহান্নাম ইত্যাদি সংক্রান্ত রেকর্ড কৃত বয়ান তাকে শুনাবেন।

জাহান্নামের শাস্তি সম্পর্কে জানুনঃ  

(০৪)
আপনি যদি তাদেরকে দ্বীনের পথে আনার জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা না করেন,সেক্ষেত্রে কিয়ামতের দিন আপনাকেও এর জন্য জবাবদিহি করতে হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...