আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
34 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (2 points)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

শায়েখ আমার প্রশ্নটা হচ্ছে, আমাদের বাসা করা হচ্ছে সেজন্য নিজেদের টাকার পাশাপাশি আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে টাকা ধার আনা হয়েছে। এরপরও টাকার সংকট পড়লে আত্মীয়-স্বজনের নিকট টাকা চাওয়া হয় কিন্তু তারা দিতে পারবে না জানায়। এদিকে আমরাও এক লোকের নিকট ৯০ হাজার টাকার পাই,এই মাসে টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি টাকা দেননি বরং আরো সময় নেন।পরিস্থিতি এমন যে টাকা নেই বললেই চলে, আবার টাকার দরকার। আমার মতে বাসার কাজ বন্ধ রাখা যেত কিন্তু আমার আম্মুর মতে না।

তারপর আমার আম্মু এক সমিতি থেকে ৫০ হাজার টাকা আনেন মাসিক ৫ হাজার করে দিতে হবে শেষে লাভ নিবে ৫ হাজার। অনেক আগে এভাবে কয়েকবার আমাদের সমিতি থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। তখন আমরা জানতাম না এটাও সুদ কিন্তু এখন জানি তারপরও আমার মা- বাবা টাকা নিয়েছে। আমি বলেছিলাম চলো ফিরিয়ে দিয়ে আসি,রাজি হয়নি। অনেক রাগারাগি,খারাপ আচরণ করে ফেলেছি। অনেক খারাপ লাগছে এইসব ব্যাপার নিয়ে। আবার এক বিষয়ে আমার জন্য আমার বাবা মার মারা যেতে হবে এমনটা বললে আমি বলি মরে যাও এমন। তারপর আমি এমনটাও বলি আল্লাহর বিধিনিষেধ মানো না আল্লাহকে ডেকে কি হবে। আমি অনেক আত্মঅহংকার নিয়ে হয়ত এসব বলেছি। এক্ষেত্রে আমি কি করব? আর আমার বাবা-মার কি হবে? ওনারা তো বুঝেও বুঝতেছেন না।

#আবার আগে আমরা জানতাম না জমি বন্ধক নিলে জমি ভাড়া হিসেবে টাকা দিতে হয় না দিলে সুদ হয়। কিন্তু আমরা তো এভাবে জমি বন্ধক নিয়েছি এক্ষেত্রে কোন ভাড়া দেওয়া হয়নি। আমাদের টাকা জমির মালিকের নিকট ছিল পরে ফিরিয়ে দিয়েছে,আমরা জমিতে ফসল ফলিয়ে খেয়েছি।এক্ষেত্রে আমার বাবার কি করণীয়?  করণীয় কিছু থাকলেও ওনি পালন করবে কিনা জানিনা।

আমাদের জমিও বন্ধক দিয়ে টাকা নেওয়া হয়েছে, মাসয়ালা জানার পূর্বে। এখনো একজনের নিকট জমি বন্ধক দেওয়া হয়েছে এক্ষেত্রে ওনাকে ভাড়ার কথা বলা হয়নি,বললে বুঝবে কিনা দিবে কিনা জানিনা। এভাবে বন্ধক দেওয়া নেয়ার ক্ষেত্রে গুনাহের ব্যাপারে জানতে চাই। 
 
পরিশেষে আমার বাবা-মার জন্য আমি কি করতে পারি। ওনারা তো সুদ গ্রহণ করতেছেন। 

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
সুদ হারাম। আল্লাহ তা'আলা বলেন,
اَلَّذِیْنَ یَاْكُلُوْنَ الرِّبٰوا لَا یَقُوْمُوْنَ اِلَّا كَمَا یَقُوْمُ الَّذِیْ یَتَخَبَّطُهُ الشَّیْطٰنُ مِنَ الْمَسِّ ذٰلِكَ بِاَنَّهُمْ قَالُوْۤا اِنَّمَا الْبَیْعُ مِثْلُ الرِّبٰوا ۘ وَ اَحَلَّ اللهُ الْبَیْعَ وَ حَرَّمَ الرِّبٰوا  فَمَنْ جَآءَهٗ مَوْعِظَةٌ مِّنْ رَّبِّهٖ فَانْتَهٰی فَلَهٗ مَا سَلَفَ  وَ اَمْرُهٗۤ اِلَی اللهِ  وَ مَنْ عَادَ فَاُولٰٓىِٕكَ اَصْحٰبُ النَّارِ هُمْ فِیْهَا خٰلِدُوْنَ.
যারা সুদ খায় তারা (কিয়ামতের দিন) সেই ব্যক্তির মতো দাঁড়াবে, যাকে শয়তান স্পর্শ দ্বারা পাগল করে। এটা এজন্য যে, তারা বলে, ক্রয়-বিক্রয় তো সুদের মতোই। অথচ আল্লাহ ক্রয়-বিক্রয়কে হালাল করেছেন এবং সুদকে করেছেন হারাম। যার নিকট তার প্রতিপালকের উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, তবে অতীতে যা হয়েছে তা তারই। আর তার ব্যাপার আল্লাহর এখতিয়ারে। আর যারা পুনরায় করবে তারাই জাহান্নামের অধিবাসী হবে। সেখানে তারা হবে চিরস্থায়ী। (সূরা বাকারা-২)

সুদ হলো, ঋণ দিয়ে বিনিময়ে কিছু গ্রহণ করা।যেমন উসূলে ফিকহের সুপ্রসিদ্ধ মূলনীতি
كل قرض جر نفعا فهو ربا
প্রত্যেক ঐ ঋণ যা মুনাফাকে টেনে নিয়ে আসে সেটাই সুদ।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/4247

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সুদ ভিত্তিক লোন নেওয়াটা জায়েজ হয়নি। এর কারণে গোনাহ হবে। তবে এই কথাটা আপনার পিতা-মাতাকে আদব ও নম্রতার সাথে বুঝাতে হবে। তাদের সাথে খারাপ আচরণ করা যাবে না। তাদের সাথে ঝগড়া করা যাবে না। তাদেরকে বুঝানোর পরও যদি তারা আপনার কথা না মানে তাহলে গোনাহ তাদের হবে।

তবে প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সুদ ভিত্তিক লোন না নিয়ে তার বিকল্প কারোর কাছ থেকে কিস্তিতে একটু বেশি দামে ইট, বালি বা সিমেন্ট কিনে নিলে তখন জায়েজ হতো।

২. আপনার পিতা-মাতাকে সুন্দর ভাবে আদবের সাথে বুঝিয়ে উক্ত জমির বিগত সময়ের ভাড়া দিয়ে দিতে বলবেন। 

৩. আপনাদের জমিও যার কাছে আছে তাকে ও আপনার পিতা-মাতাকে বুঝিয়ে এই বন্ধক চুক্তি ভেঙ্গে দিতে বলবেন। তার টাকা ফেরত দিতে বলবেন।

এগুলো বলার পরও আপনার পিতা-মাতা না মানলে গোনাহ তাদের হবে। তবুও তাদের সাথে খারাপ আচরণ করা যাবে না। 

(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...