ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্ল-হি ওয়া বারাকা-তুহু।
বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।
জবাবঃ
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ «إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ وَإِنَّمَا لِامْرِئٍ مَا نَوٰى فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهٗ إِلَى اللهِ وَرَسُوْلِه فَهِجْرَتُهٗ إِلَى اللهِ وَرَسُولِه وَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهٗ اِلٰى دُنْيَا يُصِيبُهَا أَوِ امْرَأَةٍ يَتَزَوَّجُهَا فَهِجْرَتُهٗ إِلٰى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ». مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিয়্যাতের উপরই কাজের
ফলাফল নির্ভরশীল। মানুষ তার নিয়্যাত অনুযায়ী ফল পাবে। অতএব যে ব্যক্তি আল্লাহ ও
তাঁর রসূলের সন্তুষ্টির জন্য হিজরত করবে, তার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর
রসূলের সন্তুষ্টির জন্যই গণ্য হবে। আর যে ব্যক্তি দুনিয়ার স্বার্থপ্রাপ্তির জন্য
অথবা কোন মহিলাকে বিবাহের জন্য হিজরত করবে সে হিজরত তার নিয়্যাত অনুসারেই হবে যে
নিয়্যাতে সে হিজরত করেছে। বুখারী ১, মুসলিম ১৯০৭, তিরমিযী ১৬৩৭, নাসায়ী ৭৫, আবূ দাঊদ ২২০১, ইবনু মাজাহ্ ৪২২৭, আহমাদ ১৬৯, ৩০২।
https://ifatwa.info/57202/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,
কুরআনের হাফেজদের জন্য হাদীসে বিশেষ ফজিলত বর্ণিত হয়েছে।
হাদীস শরীফে এসেছে- রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা কোরআন তিলাওয়াত করো। কেননা তা কিয়ামতের দিন তার ধারকের
জন্য সুপারিশকারী হবে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৩০২)
কিয়ামতের দিন কোরআন মুখস্থকারীদের প্রতিটি আয়াতের বিপরীতে মর্যাদা
বৃদ্ধি করা হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোরআন অধ্যয়নকারীকে বলা হবে, কোরআন পাঠ করতে করতে
ওপরে উঠতে থাকো। তুমি দুনিয়াতে যেভাবে ধীরে-সুস্থে পাঠ করতে, সেভাবে পাঠ করো।
কেননা তোমার তিলাওয়াতের শেষ আয়াতেই (জান্নাতে) তোমার বাসস্থান হবে।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ১৪৬৪)
□ আপনি ঘরে বসে কুরআন শরীফ মুখস্থ করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে আপনার জন্য কিছু পরামর্শঃ-
★আপনার মেধা ও
স্মরণশক্তি অনুপাতে প্রতিদিন একটি নির্ধারিত পরিমাণ মুখস্থ করুন। এক পৃষ্ঠা হোক বা
আধা পৃষ্ঠা হোক,সর্বনিম্ন পাঁচ লাইন মুখস্থ করার চেষ্টা করুন।
★প্রতিদিন সকালে
ও বিকেলে দুইবার হিফজের জন্য সময় দিন। সকালে নির্ধারিত পরিমাণ মুখস্থ করুন এবং সারা
দিন মনে মনে আবৃত্তি করুন। রাতে দেখে তা আরো ভালোভাবে আত্মস্থ করুন। সকাল ও সন্ধ্যায়
কমপক্ষে ৪০ মিনিট করে সময় দেওয়ার চেষ্টা করুন।
★পরের দিন একজন
কোরআনের হাফেজ বা যাঁর কোরআন তিলাওয়াত বিশুদ্ধ তাঁকে মুখস্থ করা অংশটুকু শোনান। কোনো
স্থানে কোনো ভুল থাকলে তা সংশোধন করে নিন এবং পরের দিন তা আবার শোনান।
★প্রতিদিন নতুন
অংশ মুখস্থ করা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি পেছনের অংশ মুখস্থ রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। তাই সুযোগমতো পেছনের
অংশ বারবার তিলাওয়াত করতে হবে। এবং তাহা সেই উস্তাদকে/অন্য যেকোনো শুদ্ধ পাঠকারীকে
শোনাতে হবে, সম্ভবপর না হলে নিজেই নিজেই কুরআন বন্ধ রেখে ভালোভাবে পিছনের
পড়া তিলাওয়াত করবেন।
★রাতে-দিনে বিশ্রামের
সময় মনে মনে তিলাওয়াত করুন। বিশেষত ঘুমানোর আগে প্রতিদিনের নতুন মুখস্থ করা অংশটি আগের
দিনের অংশের সঙ্গে মিলিয়ে তিলাওয়াত করুন।
★একাধিক পারা
মুখস্থ হওয়ার পর সম্ভব হলে ধারাবাহিকভাবে পেছনের এক পারা করে একবার দেখে তিলাওয়াত করুন
এবং তারপর একবার না দেখে তিলাওয়াত করুন এবং তাহা সম্ভব হলে কোনো উস্তাদকে বা অন্য যেকোনো
শুদ্ধ পাঠকারীকে শোনানোর চেষ্টা করুন।
সম্ভবপর না হলে নিজে নিজেই কুরআন বন্ধ রেখে ভালোভাবে মুখস্থ
তিলাওয়াত করুন।
মুখস্থ অংশ শোনানোর সময় যেসব জায়গায় ভুল ধরা পড়ে—তা (রুল দিয়ে)
চিহ্নিত করে রাখা (পরবর্তীতে যেনো মিশে ফেলা যায়) এবং পরবর্তী সময় এসব শব্দ ও তার উচ্চারণের
সময় সতর্কতা অবলম্বন করা। (কিছু তথ্য সংগৃহীত।)
★ সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
১. আপনি নিয়তটা আবার একটু
সংশোধন করে নিবেন। আল্লাহ তায়ালার জন্যই কুরআন হেফজ করবেন।
২. এভাবে লুকিয়ে না গিয়ে
এমনি বাসায় বলতে পারেন যে, আপনি একটু মাদ্রাসায় সময় দিচ্ছেন। তারপর তারা অনুমতি দিলে
মাদ্রাসায় গিয়ে হেফজ করলেন। আর অনুমতি না দিলে বাসায় হেফজ করার চেষ্টা করবেন।