আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
45 views
in সালাত(Prayer) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম। এক বোন তার স্বামীর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে নিয়মিত দুহার সালাত আদায় শুরু করেছিলেন। তার স্বামী আওয়াল ওয়াক্তে সব নামাজ পড়তেন দেখে তিনিও অনুপ্রাণিত হয়ে নিয়মিত আওয়াল ওয়াক্তেই নামাজ পড়তেন। এরপর খুব খারাপভাবে তার স্বামীর সাথে ডিভোর্স হয়ে যায়। এরপর এমন সব ঘটনা ঘটে যে তারা একে অপরকে ঘৃণা করা শুরু করেন। এখন ঐ মহিলা দুহার সালাত পড়তে গেলেই তার আগের স্বামী ও স্বামীর দ্বারা পাওয়া ট্রমার কথা মনে পরে যায়। তাই তিনি চাইলেও সেভাবে দুহার সালাত আদায় করতে পারেন না। বলতে গেলে ঐ স্বামীর থেকে পাওয়া কষ্ট ভুলতেই তিনি দুহা পড়া একরকম বাদই দিয়ে দিয়েছেন। এমন না যে ঐ স্বামীকে দেখার আগে দুহার সালাত পড়তেন না কিন্তু সেটা কদাচিৎ, স্বামীকে দেখেই নিয়মিত হন। কিন্তু ডিভোর্সটা আর স্বামীর নির্দয় আচরণ তাকে খুব আঘাত করে গেছে। এভাবে যাতে ট্রমা চলে না আসে তাই দুহার সালাত আদায় না করলে কি গুনাহ হবে?
আওয়াল ওয়াক্তে সব নামাজও তিনি পড়তে পারেন না ঐ একই কারণে। এজন্য কি গুনাহ হবে? আসলে নামাজ তো আল্লাহর জন্য পড়া হয়। তিনি আল্লাহর জন্যই পড়েন। কিন্তু ঐ যে যাতে একটু কষ্ট ভুলে থাকতে পারেন তার জন্যই এসব করেন যেন ভুলেও ঐ লোকের কথা তার মনে না পড়ে। তিনি কি গুনাহগার হবেন?

বি:দ্র: আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনাকে অনুরোধ করছি শায়খ, আপনি এই প্রশ্নটা একটু কবির আনোয়ার ভাইকে(IOM এর শিক্ষক ছিলেন, এখন আছেন কিনা জানিনা) দেখাবেন আর ভাইকে বলবেন যেন এই প্রশ্ন তার স্ত্রীকেও দেখান। তার স্ত্রীর নাম বলতে পারতাম বাট আমি তার নামের পর্দা রক্ষা করতে চাচ্ছি। ওনারা কী বলেন প্রশ্নের উত্তরে এটাও একটু বলবেন প্লিজ।

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)

ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্ল-হি ওয়া বারাকা-তুহু।

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।

জবাবঃ

স্বামীর জন্য জরুরি হলো স্ত্রীর অধিকার রক্ষা করা, তার সাথে সদব্যবহার করা।

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন

ألا واستوصوا بالنساء خيرا، فإنما هن عوان عندكم ليس تملكون منهن شيئا غير ذلك

শোন হে! তোমরা আমার পক্ষ হতে নারীদের প্রতি সদাচরণের উপদেশ গ্রহণ কর। তারা তো তোমাদের কাছে আটকে আছে। তোমরা তাদের কাছ থেকে এছাড়া আর কিছুর অধিকার রাখো না। (জামে তিরমিযী, হাদীস: ১০৮৩


https://ifatwa.info/91615/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-

ﻭَﻋَﺎﺷِﺮُﻭﻫُﻦَّ ﺑِﺎﻟْﻤَﻌْﺮُﻭﻑ

নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। (সূরা নিসা-১৯)


হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الأَحْوَصِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي أَنَّهُ، شَهِدَ حَجَّةَ الْوَدَاعِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَذَكَّرَ وَوَعَظَ فَذَكَرَ فِي الْحَدِيثِ قِصَّةً فَقَالَ " أَلاَ وَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا… أَلاَ وَحَقُّهُنَّ عَلَيْكُمْ أَنْ تُحْسِنُوا إِلَيْهِنَّ فِي كِسْوَتِهِنَّ وَطَعَامِهِنَّ " .

সুলাইমান ইবনু আমর ইবনুল আহওয়াস (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ বিদায় হজ্জের সময় তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলেন। তিনি আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও গুণগান করলেন এবং ওয়াজ-নাসীহাত করলেন। এ হাদীসের মধ্যে বর্ণনাকারী একটি ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ স্ত্রীদের সাথে ভালো আচরণের উপদেশ নাও। ... জেনে রাখ! তোমাদের প্রতি তাদের অধিকার এই যে, তোমরা তাদের উত্তম পোশাক-পরিচ্ছদ ও ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবে। (সুনানে তিরমিযী ১১৬৩)


স্বামীর উপর আবশ্যক হলোঃ- স্ত্রীর সাথে উত্তম ব্যবহার করা। স্ত্রীর সঙ্গে প্রয়োজনে একান্তে বসা ও খোশগল্প করা।

অবসরে স্ত্রীর সঙ্গে একান্তে বসে কিছু গল্পগুজব করা, তার মনের কথা জানা-বোঝা, তার কোনো চাহিদা থাকলে তা জেনে নিয়ে পূরণ করা স্বামীর জন্য জরুরি।  প্রয়োজন মাফিক স্ত্রীকে সময় দেয়া।

বিস্তারিত জানুনঃ-

https://ifatwa.info/26084/


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!


১. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তার স্বামী যদি তার সাথে খারাপ আচরণ ও অত্যাচার করে থাকে তাহলে অবশ্যই তার স্বামীর গোনাহ হবে।

আর সালাতুদ দোহা আদায় করা সুন্নাত। ফরজ ও ওয়াজিব নয়। তাই এটা আদায় না করলে গোনাহ হবে না। তবে তিনি আদায় করার চেষ্টা করবেন।

২. ওয়াক্তের মধ্যে সালাত পড়লেই হবে ইনশাআল্লাহ।

৩. তিনিও এই প্রশ্নটি চাইলে অন্য কাউকে দেখাতে পারেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...