আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
36 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
আসসালামু 'আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ্,
উস্তায আমার পরিবার আমাকে ইসলামিক নাম দিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ্।
গত ৩ বছর আগে দুনিয়াবি ব্যর্থতার দরুন বেশ কয়েকমাস আমি মানসিক ট্রমায় ছিলাম। পরিবার আমার অমতে ভিন্ন শহরের এক প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনার জন্য ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন। মানসিক অসুস্থতার কারনে সেখানকার আবাসিক হল থেকে পালিয়ে যেতেও চেয়েছিলাম। কিন্তু তাক্বদীর আমাকে এখানেই আটকে দিয়েছে।

প্রতিষ্ঠানের সবার কাছে ফেইক পরিচয় দেয়ার উদ্দেশ্যে আমি নিজেই আমার জন্য নতুন একটা নাম ঠিক করেছিলাম। এবং আজ ৩ বছর পরে এসেও ক্লাসমেট/কলিগ সবাই আমাকে সেই নামেই ডাকে। আমার সার্টিফিকেটের অরিজিনাল নামও সবাই জেনে গিয়েছে বাট সেই নামে কেউ আমাকে ডাকেনা। আমি পরিবারের কাছে নতুন নামের বিষয়টা জানিয়েছি। কিন্তু ক্লাসমেটদেরকে বলিনি যে এটা আমার নিজের ঠিক করা নাম।

প্রশ্ন হচ্ছে-
১.নিজেই নিজের নাম রাখাতে আমার কি গুনাহ হয়েছে? (মানসিক অসুস্থতা কি ওজর বলে গন্য হবে?)

২.হিউজ একটা কমিউনিটি আমাকে এই নামে ডাকে, তাদেরকে কি জানানো উচিত এটা আমার নিজের ঠিক করা নাম? (৩ বছর আগের পরিচিতদের কাছে তো সত্যিটা জানানো কষ্টকর)

৩.নতুন নামটা আমার খুব পছন্দের কিন্তু সবসময় হীনম্মন্যতা কাজ করে- “পূর্বে ইসলামিক নাম থাকা সত্ত্বেও নতুন করে নাম রাখা।” এ ব্যপারে কিছু বলিয়েন ইনশাআল্লহ্

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)

ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্ল-হি ওয়া বারাকা-তুহু।

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।

জবাবঃ

ভালো নাম রাখা পিতা-মাতার সর্বপ্রথম দায়িত্ব। পিতা-মাতার উপর সন্তানের সর্বপ্রথম হক হচ্ছে, তার জন্য সুন্দর নাম নির্বাচন করা।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. ও আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

من حق الولد على الوالد أن يحسن اسمه ويحسن أدبه.

অর্থ : সন্তানের সুন্দর নাম রাখা ও তার উত্তম তারবিয়াতের ব্যবস্থা করা বাবার উপর সন্তানের হক। -মুসনাদে বাযযার (আলবাহরুয যাখখার), হাদীস ৮৫৪০

মানসিকতা ও স্বভাবের উপরও নামের একটা প্রভাব থাকে।

أَخْبَرَنِي عَبْدُ الحَمِيدِ بْنُ جُبَيْرِ بْنِ شَيْبَةَ، قَالَ: جَلَسْتُ إِلَى سَعِيدِ بْنِ المُسَيِّبِ، فَحَدّثَنِي: أَنّ جَدّهُ حَزْنًا قَدِمَ عَلَى النّبِيِّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ فَقَالَ: مَا اسْمُكَ؟ قَالَ: اسْمِي حَزْنٌ، قَالَ: بَلْ أَنْتَ سَهْلٌ. قَالَ: مَا أَنَا بِمُغَيِّرٍ اسْمًا سَمّانِيهِ أَبِي قَالَ ابْنُ المُسَيِّبِ: فَمَا زَالَتْ فِينَا الحُزُونَةُ بَعْدُ.

আবদুল হুমাইদ বিন শায়বা বলেন, আমি হযরত সাঈদ ইবনুল মুসায়্যিবের কাছে বসা ছিলাম। তিনি তখন বললেন, আমার দাদা ‘হাযান’ একবার নবীজীর দরবারে উপস্থিত হলেন। নবীজী তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার নাম কী? দাদা বললেন, আমার নাম হাযান। (হাযান অর্থ শক্তভূমি) নবীজী বললেন- না, তুমি হচ্ছ ‘সাহল’ (অর্থাৎ তোমার নাম হাযানের পরিবর্তে সাহল রাখো; সাহল অর্থ, নরম জমিন।) দাদা বললেন, আমার বাবা আমার যে নাম রেখেছেন আমি তা পরিবর্তন করব না। সাইদ ইবনুল মুসায়্যিব বলেন, এর ফল এই হল যে, এরপর থেকে আমাদের বংশের লোকদের মেযাজে রুঢ়তা ও কর্কশভাব রয়ে গেল। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬১৯৩


সুন্দর নাম রাখার গুরুত্বপূর্ণ একটি কারণ হল, হাশরের ময়দানে- সেখানে পূর্বাপর সকল মানুষ একত্রিত হবে এবং ব্যক্তিকে তার নাম ও তার বাবার নামসহ ডাকা হবে।


হযরত আবুদ দারদা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

إِنّكُمْ تُدْعَوْنَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِأَسْمَائِكُمْ، وَأَسْمَاءِ آبَائِكُمْ، فَأَحْسِنُوا أَسْمَاءَكُمْ.

কিয়ামতের দিন তোমাদেরকে ডাকা হবে তোমাদের ও তোমাদের বাবার নাম নিয়ে (অর্থাৎ এভাবে ডাকা হবে- অমুকের ছেলে অমুক)। তাই তোমরা নিজেদের জন্য সুন্দর নাম রাখ। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৯৪৮

আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/12074/


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!


১-৩. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বাস্তবেই যদি আপনি মানসিক ভাবে বেশী অসুস্থ হয়ে থাকেন। যার ফলে আপনার নাম নিজে নিজে দিয়েছেন বা পরিবর্তন কছিলেন। তাহলে আশা করা যায় যে, আল্লাহ তায়ালা আপনাকে মাফ করে দিবেন। তারপরও আল্লাহর কাছে মাফ চেয়ে নিবেন। তবে এখন আপনার জন্য করণীয় হলো যে, আপনার মূল নামটা প্রচার করা। কেউ আপনাকে ঐ নামে ডাকলে তাকে বলবেন যে, আপনার মূল নাম এটা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...