আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
46 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (6 points)
আসসালামু আলাইকুম।

আমি একজন হুজুরের কাছে কুরআন পড়া শিখতে চাই। আমি অনলাইনে কুরআন শিক্ষার একটি কোর্স করতে চেয়েছিলাম কিন্তু ভর্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় ভর্তি হতে পারিনি। নতুন কোর্স আসতে ২ মাসের মতো দেরি আছে।এই সময়ের মধ্যে আমি ভেবেছি যে,আমাদের এলাকায় এক হুজুর আছে তার কাছে পড়বো। আমাদের এলাকায় কোনো মহিলা শিক্ষিকা নাই।

আসলে আমি অনলাইন এর পাশাপাশি অফলাইনেও পড়তে চাচ্ছিলাম। অফলাইনে পড়তে চাচ্ছি এজন্য যে,যাতে পড়াটা বেশি শুদ্ধ হয়। সামনাসামনি পড়লে হুজুরের পড়া ভালোভাবে শুনতে পারবো, উচ্চারণ গুলো সঠিকভাবে শুনতে পারবো এবং আমিও সঠিক উচ্চারণ করতে পারছি কিনা তা ভালোভাবে শোনা যাবে বলে আমার মনে হয়।আর অনলাইন এ ভালোভাবে শোনা যাবে কিনা একদম সঠিক হবে কিনা তা নিয়ে আমার একটু কনফিউশন আছে। এজন্য আমি চাচ্ছি অফলাইনে আগে পড়তে তারপর পড়ে আবার অনলাইনে পড়বো।যাতে আমার পড়াটা বেশি শুদ্ধ হয়। আমি যেই কোর্সে ভর্তি হতে চেয়েছিলাম তাদের পড়ানোটা আমার খুবই ভালো লেগেছে তাই সেখানে আরেকবার পড়তে চেয়েছি। আবার যেই হুজুরের কাছে পড়তে চাচ্ছি তার পড়ানোও একদম সহিহ কিনা তা নিয়েও কনফিউশন আছে। এজন্য আমি দুই জায়গাতেই পড়তে চাচ্ছি। অফলাইনে হুজুরের কাছে পড়তে চাচ্ছি শুধু মাত্র পড়া যাতে ভালোভাবে শুনতে পারা যায় ভালোভাবে পড়া হয় এজন্য।

এখন আমি কি এই উদ্দেশ্যে হুজুরের কাছে পড়তে পারবো??নাকি অনলাইন এ কোনো মহিলা শিক্ষিকার কাছেই পড়তে হবে?? আমাদের এলাকায় কোনো মহিলা শিক্ষিকা নাই।

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম 

জবাব,

 https://ifatwa.info/3536/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,

শরীয়তের বিধান হলো ছাত্রী যদি বালেগাহ হয়,এবং সে কোনে মহিলা শিক্ষক খুজে না পায়,এবং ফেতনার কোনো আশংকা না থাকে তাহলে তখন ছাত্রীর জন্য পূর্ণ হিজাব পরিধান,এবং ঐ ছাত্রীর মাহরাম কোনো পুরুষ বা ঘরের কোনো বালিগ মহিলা, পাশে থাকার শর্তে গায়রে মাহরাম পুরুষের কাছে কুরআন বা অন্য কোনো শিক্ষা অর্জন করা জায়েজ আছে। 

হযরত ইবনে আব্বাস রাযিঃ থেকে বর্ণিত,তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছেন,

 عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، يَقُولُ : " لَا يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِامْرَأَةٍ ، وَلَا تُسَافِرَنَّ امْرَأَةٌ إِلَّا وَمَعَهَا مَحْرَمٌ ، فَقَامَ : رَجُلٌ ، فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ اكْتُتِبْتُ فِي غَزْوَةِ كَذَا وَكَذَا ، وَخَرَجَتِ امْرَأَتِي حَاجَّةً ، قَالَ : اذْهَبْ فَحُجَّ مَعَ امْرَأَتِكَ " . الكتب » صحيح البخاري » كِتَاب الْجِهَادِ وَالسِّيَرِ » بَاب مَنِ اكْتُتِبَ فِي جَيْشٍ فَخَرَجَتِ امْرَأَتُهُ 

অনুবাদ- আজনবী পুরুষ-মহিলার মাহরাম ব্যতীত পরস্পর খালওয়াত তথা নির্জনে সাক্ষাৎ করবে না।এক ব্যক্তি দাড়িয়ে বলল।অমুক জিহাদে আমার আমার নাম লিখা হয়েছে,অন্যদিকে আমার স্ত্রী হজ্বে যেতে চাচ্ছে।তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্বে যাও। বুখারী-২৮০০ খালওয়াহ শব্দের ব্যখ্যা

 الْخَلْوَةُ فِي اللُّغَةِ: مِنْ خَلاَ الْمَكَانُ وَالشَّيْءُ يَخْلُو خُلُوًّا وَخَلاَءً، وَأَخْلَى الْمَكَانُ: إِذَا لَمْ يَكُنْ فِيهِ أَحَدٌ وَلاَ شَيْءَ فِيهِ، وَخَلاَ الرَّجُل وَأَخْلَى وَقَعَ فِي مَكَان خَالٍ لاَ يُزَاحَمُ فِيهِ 

 ভাবার্থ যখন কোনো স্থানে উক্ত আজনবী পুরুষ ও মহিলা ব্যতীত অন্য কেউ থাকবে না বা অন্য কোনো এমন জিনিষ থাকবে না যা সহবাসকে বাধা দিতে পারে।তথা এমন খালি স্থান যেখানে লোকসমাগম বলতে নেই।  (আল মাওসুআতুল ফেকহীয়্যায়;১৯/২৬৫) 

  পুরুষ শিক্ষক তিনি ছাত্রকে প্রাইভেট পড়াবেন।ছাত্রীদেরকে নারী শিক্ষকই প্রাইভেট পড়াবেন।যদি কোথাও পুরুষ শিক্ষক, ছেলে শিক্ষার্থীকে না পান,এবং মেয়ে শিক্ষার্থীরা, নারী শিক্ষিকা-কে না পায়।

এমন পরিস্থিতে শিক্ষার স্বার্থে কয়েকটি শর্তে বিপরিত লিঙ্গের কাউকে পড়ানোর ব্যাপারটা অনুমোদনযোগ্য হতে পারে।

(১) ফিতনার আশংকা থাকতে পারবে না।যখনই শয়তান মনের মমধ্যে কিছু আনয়ন করবে,সাথে সাথেই তখন পড়ানোকে বাদ দিতে হবে।

(২) যতক্ষণ পড়াবেন ততক্ষণ মেয়ে শিক্ষার্থীর একজন মাহরাম পুরুষ সেখানে উপস্থিত থাকবেন বা এক সাথে কয়েকজন মেয়ে শিক্ষার্থীকে পড়াবেন।

(৩) মেয়ে শিক্ষার্থীরা পরিপূর্ণ হেজাব পড়ে ক্লাস নিবেন।

(৪) মেয়ে শিক্ষার্থীর সাথে নরম ভাষায় কথা বলা যাবে না।

(৫) এছাড়া ফিতনামুক্ত পরিবেশ গড়ার যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করিতে হইবে।বিস্তারিত জানুন-https://www.ifatwa.info/4193


ছাত্রী পড়ানো সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/1542



প্রশ্নকারী সম্মানিত দ্বীনি ভাই / বোন! 

প্রথমত পরামর্শ থাকবে যে, অফলাইনে আরো ভালো ভাবে শিক্ষিকার সন্ধান করবেন। এটিই অধিক নিরাপদ যে, আপনি কোন আলেমা বা দ্বীনি বোনের নিকট কুরআন শিখবেন। যদি কোন ভাবেই তা সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে অনলাইনে মহিলা উস্তাযার মাধ্যমে বোনদের দ্বীন শিক্ষার অনেক নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আপনি খোঁজ খবর নিয়ে যেকোন ভালো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারেন।

তবে পুরোপুরি ফিতনার আশংকা না থাকলে এবং কোনো ক্রমেই মহিলার কন্ঠ শোনা না গেলে, উভয়ের ক্যামেরা বন্ধ থাকলে, মহিলার অডিও বন্ধ থাকলে কিছু ইসলামী স্কলারগন অনলাইনে পুরুষ উস্তাযের নিকট পড়ার অনুমতি প্রদান করে থাকেন। 


সুতরাং পুরুষ টিচার ব্যাতিত কুরআন শিখার কোনো উপায় না থাকে, তাহলে ফিতনার আশংকা না থাকলে পরিপূর্ণ পর্দা মেনে উপরে উল্লেখিত শর্ত সাপেক্ষে পড়া জায়েজ আছে।  তবে এক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় কোনো কথা বলবেননা। 


আরো জানুন: https://ifatwa.info/105761/ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...