আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
39 views
in সালাত(Prayer) by (13 points)
আসসালামু আলাইকুম।
১) পেরেশানি কিংবা অন্যান্য কারণে পূর্ণ মনযোগের সাথে নামাজ (সুন্নত কিংবা ফরজ) পড়তে না পারায় নামাজ শেষে মন খারাপ হয়। অর্থাৎ মনযোগ দিয়ে নামাজ না পড়ায় আফসোস হচ্ছে। এখন ওই নামাজ পূর্ণ মনযোগ দিয়ে পড়ার নিয়তে আবার পড়া যাবে?

২)  মাঝেমধ্যে নামাজে সূরা কিংবা তাশাহুদ কিছুদূর পড়ার পর খেয়াল হয় মনযোগ অন্যদিকে ছিল। ভয় হয় আল্লাহ কবুল হয়তো কবুল করবেন না। তাই ওই সূরা বা তাশাহুদ মনযোগ দিয়ে আবার প্রথম থেকে পড়া যাবে? জন্য কি সাহূ সিজদাহ্ দিতে হবে?

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)

ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্ল-হি ওয়া বারাকা-তুহু।

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/54315/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

নামাজে মনোযোগ বাড়ানোর কিছু পদ্ধতি:

১. নামাজে একাগ্র থাকা। অর্থাৎ এমন ভাবে নামাজ পড়তে হবে যেনো আমি আল্লাহ তায়ালার সামনে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ছি। আর আল্লাহ তায়ালা নামাজ পড়া দেখছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন,

قَالَ مَا الإِحْسَانُ قَالَ " أَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ، فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ فَإِنَّهُ يَرَاكَ ".

আল্লাহর ইবাদত করো এমনভাবে যেন তাঁকে তুমি দেখতে পাচ্ছ। আর যদি দেখতে না পাও, তবে তিনি যেন তোমাকে দেখছেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৫০; মুসলিম, হাদিস: ৮)


অন্য এক হাদীসে এসেছে-

ثُمَّ قَالَ مَنْ تَوَضَّأَ وُضُوئِي هَذَا ثُمَّ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ لاَ يُحَدِّثُ نَفْسَهُ فِيهِمَا بِشَيْءٍ إِلاَّ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ

রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে সুন্দরভাবে অজু করে, অতঃপর মন ও শরীর একত্র করে একাগ্রতার সঙ্গে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে (অন্য বর্ণনায় এসেছে যে নামাজে ওয়াসওয়াসা স্থান পায় না) তার সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়)। ’ (নাসাঈ, হাদিস : ১৫১; বুখারি, হাদিস : ১৯৩৪)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস


২. নামাজের সূরা কেরাত ও দুআগুলো বিশুদ্ধ উচ্চারণে পড়ার চেষ্টা করা ও ধীরে ধীরে তেলাওয়াত করা। বিশেষ করে সূরা ফাতিহা, ছোট ছোট কয়েকটি সূরা ও তাসবিহগুলোর অর্থ বুঝে পড়ার চেষ্টা করা। এগুলো করলে নামাজে মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

أَوْ زِدْ عَلَيْهِ وَرَتِّلِ الْقُرْآنَ تَرْتِيلًا

স্পষ্টভাবে ধীরে ধীরে কোরআন তিলাওয়াত করো।’ (সুরা: মুজ্জাম্মিল, আয়াত: ৪)

রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতিটি সুরা তারতিল সহকারে তিলাওয়াত করতেন। (মুসলিম, হাদিস : ৭৩৩, তিরমিজি, হাদিস : ৩৭৩)


৩. নামাজের মধ্যে আল্লাহ তায়ালার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে নামাজ পড়া এবং খুব বিনয়ের সাথে নামাজে দন্ডায়মান হওয়া। কেননা আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের নির্দেশ দিয়েছেন, وَقُومُوا لِلَّهِ قَانِتِينَতোমরা আল্লাহর সম্মুখে দণ্ডায়মান হও বিনীতভাবে। ’ (সূরা : বাকারা, আয়াত : ২৩৮)

আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন,

وَعَنْ اَبِىْ قَتَادَة قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ أَسْوَأُ النَّاسِ سَرِقَةً الَّذِي يَسْرِقُ مِنْ صَلَاتِه قَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ وَكَيْفَ يَسْرِقُ مِنْ صَلَاتِه قَالَ لَا يُتِمُّ رُكُوعَهَا وَلَا سُجُودَهَا. رَوَاهُ أَحْمَد

আবূ ক্বাতাদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু, আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ চুরি হিসেবে সবচেয়ে বড় চোর হল ঐ ব্যক্তি যে সলাতে (আরকানের) চুরি করল। সহাবীগণ আরয করলেন, হে আল্লাহর রসূল! সলাতের চুরি কিভাবে হয়? নাবী (সাল্লাল্লাহু, আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সলাতের চুরি হল রুকূ’-সাজদাহ্ পূর্ণ না করা। সহীহ : আহমাদ ২২১৩৬, সহীহ আত্ তারগীব ৫২৪।


৪. নামাজ পড়ার সময় এমন ধ্যান খেয়াল রাখা যে, এই নামাজই মনে হয় আমার জীবনের শেষ নামাজ। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে জনৈক ব্যক্তি সংক্ষিপ্ত উপদেশ কামনা করলে তিনি তাকে বলেন, ‘যখন তুমি নামাজে দণ্ডায়মান হবে তখন এমনভাবে নামাজ আদায় করো, যেন এটিই তোমার জীবনের শেষ নামাজ। ’ (ইবনে মাজাহ, মিশকাত)


৫. নামাজের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার কাছে কল্যাণ আশা কামনা করা।

মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন,

وَاسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ ۚ وَإِنَّهَا لَكَبِيرَةٌ إِلَّا عَلَى الْخَاشِعِينَ

তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো।’ (সুরা: বাকারা, আয়াত: ৪৫)


৬. নামাজের মধ্যে নিজের গোনাহের কথা চিন্তা করে একজন অপরাধীর মতো মস্তক অবনত রেখে এবং দৃষ্টিকে সিজদার স্থানের দিকে নিবদ্ধ রেখে নামাজ আদায় করা। দাঁড়ানোর সময় সেজদার দিকে, রুকুর সময় দুই পায়ের মাঝে, বসার সময় কোলের উপর দৃষ্টি রাখা


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!


১. নামাজের মধ্যে উত্তরে উল্লেখিত বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন।  তাহলে দেখবেন নামাজের মধ্যে মনোযোগ আরো বৃদ্ধি পাবে ইনশাআল্লাহ।

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ফজর, আসর ও মাগরীব এভাবে পুনরায় পড়া যাবে না। তবে জহর ও এশার নামাজ পুনরায় পড়ার অবকাশ থাকলেও আপনি চেষ্টা করবেন নামাজ শুরু করার সময় উল্লেখিত বিষয়গুলোর প্রতি।


২. আপনি চেষ্টা করবেন নামাজ শুরু করার সময় উল্লেখিত বিষয়গুলোর প্রতি। তাহলে আশা করা যায় যে, নামাজের মধ্যে মনোযোগ আরো বৃদ্ধি পাবে। এভাবে বারবার পড়া থেকে বিরত থাকবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 1,123 views
...