বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।
জবাবঃ
https://ifatwa.info/9185/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنِ
النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّم الْحَلَالُ بَيِّنٌ وَالْحَرَامُ بَيِّنٌ وَبَيْنَهُمَا مُشْتَبِهَاتٌ
لَا يَعْلَمُهُنَّ كَثِيرٌ مِنَ النَّاسِ فَمَنِ اتَّقَى الشُّبْهَاتِ استبرَأَ
لدِينهِ وعِرْضِهِ ومَنْ وقَعَ فِي الشبُّهَاتِ وَقَعَ فِي الْحَرَامِ كَالرَّاعِي
يَرْعَى حَوْلَ الْحِمَى يُوشِكُ أَنْ يَرْتَعَ فِيهِ أَلَا وَإِنَّ لِكُلِّ
مَلِكٍ حِمًى أَلَا وَإِنَّ حِمَى اللهِ مَحَارِمُهُ أَلَا وَإِنَّ فِي الْجَسَدِ
مُضْغَةً إِذَا صَلَحَتْ صَلَحَ الْجَسَدُ كُلُّهُ وَإِذَا فَسَدَتْ فَسَدَ
الْجَسَدُ كُله أَلا وَهِيَ الْقَلْبُ.
নু’মান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
‘হালাল এবং হারাম সুস্পষ্ট, আর ঊভয়ের মধ্যে অনেক
সন্দেহজনক বিষয় বা বস্তু আছে। (যেগুলি হালালের অন্তর্ভুক্ত না হারামের অন্তর্ভুক্ত,) সে সম্পর্কে
অনেকেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এরূপ ক্ষেত্রে যেই ব্যক্তি সন্দেহের বস্তুকে পরিহার
করে চলবে, তার দ্বীন এবং আবরু-ইজ্জত, মান-সম্মান পাক-পবিত্র
থাকবে। পক্ষান্তরে যেই ব্যক্তি সন্দেহের কাজে লিপ্ত হবে, সে অচিরেই হারামেও
লিপ্ত হয়ে পড়বে। (ফলে তার দ্বীন এবং মান-সম্মান কলুষিত হবে।) যেমন যেই রাখাল তার পশুপালকে
নিষিদ্ধ এলাকার সীমার ধারে চরাবে,
খুব সম্ভব তার পশু নিষিদ্ধ এলাকার ভিতরেও মুখ ঢুকিয়ে দিবে। তোমরা
ম্মরণ রেখো প্রত্যেক বাদশাই নিজ পশুপালের চারণভুমি (নিষিদ্ধ এলাকা) বানিয়ে রাখেন। তদ্রূপ
(সকল বাদশাহর বাদশাহ) আল্লাহ তা’আলার চারণভূমি তাঁর হারাম বস্তুসমূহকে নির্ধারিত করে
রেখেছেন। ‘মনে রেখো মানুষের দেহের ভিতরে একটি গোশতের টুকরা রয়েছে, যা সঠিক থাকলে
সমস্ত দেহই সঠিক থাকে। আর সেই অংশের বিকৃতি ঘটলে সম্পূর্ণ দেহেরই বিকৃতি ঘটে। সেই গোশতের
টুকরাটি হল অন্তর’ (বুখারী, মুসলিম,
মিশকাত হা/২৭৬২)।
মেয়েদের প্রসাধন সামগ্রী, কসমেটিকস -এ এ্যালকোহল, হারাম কিছুর ব্যবহার করা হয় মর্মে শুনা যায়। এক্ষেত্রে মাসআলা হল,
যে সমস্ত এলকোহল খেজুর বা আঙ্গুর দ্বারা বানানো হয়নি, তেমন বস্তু নেশা
না আসা পর্যন্তের জন্য ব্যবহার জায়েজ ইমাম আবু হানীফা রহঃ এবং ইমাম আবু ইউসুফ রহঃ এর
মতানুসারে। {ফাতহুল কাদীর-৮/১৬০, ফাতওয়ায়ে আলমগীরী-৫/৪১২, আল বাহরুর রায়েক-৮/২১৭-২১৮, ফাতওয়ায়ে মাহমুদিয়া-২৭/২১৯}
বর্ণিত হয়েছে-
والمحرم
منها أربعة ) أنواع الأول ( الخمر وهي النيء من ماء العنب إذا غلى واشتد وقذف
بالزبد وحرم قليلها وكثيرها ) بالإجماع ( و ) الثاني ( الطلاء وهو العصير يطبخ حتى
يذهب أقل من ثلثيه وقيل ما طبخ من ماء
العنب حتى ذهب ثلثاه وبقي ثلثه ) وصار مسكرا ( وهو الصواب ونجاسته كالخمر ) به
يفتي ( و ) الثالث ( السكروهو النيء ماء الرطب )
বর্ণিত হয়েছে-
(
و ) الرابع ( نقيع الزبيب وهو النيء من ماء الزبيب ) بشرط أن يقذف بالزبد بعد
الغليان ( والكل ) أي الثلاثة المذكورة ( حرام إذا غلي واشتد ) وإلا لم يحرم
اتفاقا وإن قذف حرم اتفاقا وظاهر كلامه فبقية المتون أنه اختار ها هنا
قولهما(تنوير الأبصار مع الدر المختار-
كتاب الأشربة -2/259
যার সারমর্ম হলো খেজুর বা আঙ্গুর দ্বারা বানানো হলে,বা নেশা তৈরী
কারী হলেই কেবল সেটা হারাম হবে। অন্যথায় নয়।
বিভিন্ন সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি যে, বর্তমানে এলকোহল
খেজুর বা আঙ্গুর থেকে বানানো হয় না। তাই এটি ব্যবহার করা জায়েজ হবে। তবে যদি জানা যায়
যে, এসব আঙ্গুর বা খেজুর থেকে বানানো হয়, তাহলে তা ব্যবহার
করা জায়েজ নয়।
আর হারাম কোন বস্তু যেমন শুকর ইত্যাদির যদি এমনভাবে রিফাইন করা
হয় যে, এসবের কোন মৌলিকত্ব বাকি না থাকে, তাহলেও উক্ত
বস্তু ব্যবহার করা জায়েজ আছে। আর যদি সেসব হারাম বস্তুর মৌলিকত্ব বাকি থাকে, তাহলে উক্ত বস্তু
যাতে মিশ্রিত করা হবে, তা ব্যবহার করা জায়েজ হবে না। {নিহায়াতুল মুহতাজ
লির রামালি-৮/১২}
বর্ণিত হয়েছে-
أما
(الخمر) إذا خلله بعلاج بالملح أو بغيره يحل عندنا (الفتاوى الهندية،كتاب الأشربة
وفيه بابان الباب الأول في تفسير الأشربة
والأعيان التي تتخذ منها الأشربة وأسماؤها وماهياتها وأحكامه-5/410
অনুবাদ- মদকে যখন লবন বা অন্য
কিছু দ্বারা সির্কা বানিয়ে ফেলা হয়, তখন তা হালাল হয়ে যায়। {ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৪১০, মাজমাউল আনহুর-৪/২৫১, ফাতওয়ায়ে মাহমুদিয়া-২৭/২১৮}
এ মূলনীতির উপর ভিত্তি করে বুঝে নিন মেয়েদের প্রসাধন সামগ্রী,বিদেশী পণ্য
ও বডি স্প্রে, পারফিউম,কসমেটিকস শেম্পু ইত্যাদি
ব্যবহার করার বিধান। যদি ওসব বস্তুতে খেজুর বা আঙ্গুরের তৈরী এ্যালকোহল ব্যবহার করা
হয়, তাহলে তা ব্যবহার জায়েজ নয়। নতুবা তা নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা
থাকলে জায়েজ নয়। সম্ভাবনা না হলে জায়েজ।
আর যদি অন্য কোন হারাম বস্তু মিশ্রিত হয়, আর মিশ্রিত করার
আগে তাকে এমনভাবে প্রসেসিং করে যে, হারাম বস্তুটির মৌলিকত্ব বাকি থাকে না, তাহলে তা ব্যবহার
করা জায়েজ হবে, আর যদি মৌলিকত্ব বাকি থাকে তাহলে তা ব্যবহার করা জায়েজ হবে না।
যদি হারাম বস্তু মিশ্রিত করা হল কি না? জানা নেই। তাহলেও
উক্ত প্রসাধন সামগ্রী পারফিউম,
বডি স্প্রে ব্যবহারে কোন সমস্যা নেই।
في
التتارخانية: من شك في إنائه أو في ثوبه أو بدن أصابته نجاسة أو لا فهو طاهر ما لم
يستيقن، وكذا الآبار والحياض والجباب الموضوعة في الطرقات ويستقي منها الصغار
والكبار والمسلمون والكفار؛ وكذا ما يتخذه أهل الشرك أو الجهلة من المسلمين كالسمن
والخبز والأطعمة والثياب اهـ ملخصا.(رد المحتار، كتاب الطهارة، قبيل مطلب فى ابحاث
الغسل-1/283، الفتاوى التاتارخانية، كتاب الطهارة، نوع آخر فى مسائل الشك-1/146،
الأشباه والنظائر، القاعدة الثلاثة، اليقين لا يزول بالشك
যার সারমর্ম হলোঃ যদি
সন্দেহ থাকে,তাহলে তাহলে সেটাকে পাক বলেই ধরে নিতে হবে।
★ সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
মৌলিক ভাবে কসমেটিকস বিক্রয়
করা জায়েজ আছে। তবে যদি কারোর ব্যাপারে আপনি নিশ্চিত ভাবে জানেন যে, সে এগুলো ক্রয়
করে হারাম প্রদর্শনী করবে। তখন তার কাছে আপনি বিক্রয় করবেন না।
আর যদি এ ব্যাপারে নিশ্চিত
ভাবে জানা না যায় যে, সে কী কাজে ব্যবহার করবে। তাহলেও তার কাছে বিক্রয় করা জায়েজ হবে।
এতে কোনো সমস্যা নেই। এই ক্ষেত্রে হারাম প্রদর্শনীতে সে ব্যবহার করলে গোনাহ তার হবে।