আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
37 views
in সাওম (Fasting) by (16 points)
আসসালামু আলাইকুম উস্তায।
১)আমার নানু অনেক অসুস্থ। অসুস্থতার কারণে উনার এই বছর ১৪টা কাজা রোজা রয়েছে। কিন্তু উনি এতটা অসুস্থ যে সেগুলো কাজা আদায় করতে সমর্থ নন। এই অবস্থায় উনার কাজা রোজাগুলোর কাফফারা কি হবে? বর্তমান প্রেক্ষিতে টাকার হিসাবে কত টাকা আসবে প্রতি রোজার জন্য?
২বেশ কয়েকবছর আগে যখন আমার আম্মুর দ্বীনের বুঝ কম ছিল,  তখন রমজানের রোজার সময় ঘরের কাজ করার জন্য প্রতি বছর ২/৩টা করে রোজা ইচ্ছাকৃতভাবে ভেঙে ফেলত। এই ইচ্ছাকৃত ভেঙে ফেলা রোজার কাফফারা কিভাবে আদায় করতে হবে?
৩)আমি হানাফি মাজহাব ফলো করি। মাঝে মাঝে কাজের বাহানায়/অলসতার কারণে বিতরের নামাজ ১রাকাত আদায় করি। এভাবে ১রাকাত নামাজ আদায় করা জায়েজ কিনা?

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)

ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্ল-হি ওয়া বারাকা-তুহু।

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/14154/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

ফরজ রোযা রাখা অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে হোক বা অনিচ্ছায় হোক, কোনো খাবার খেলে,বা পান করলে, বা সহবাস করলে কাফফারা ওয়াজিব হবে।

তবে শুধু ভুলক্রমে এমনটি করলে রোযা ভেঙ্গে যাবেনা।

  من نسي وهو صائم فأكل أو شرب فليتم صومه، فإنما أطعمه الله وسقاه

যে ব্যক্তি ভুলে আহার করল বা পান করল সে যেন তার রোযা পূর্ণ করে। কারণ আল্লাহই তাকে পানাহার করিয়েছেন।-সহীহ মুসলিম ১/২০২


রোযার কাফ্ফারা সম্পর্কে হাদীসে বর্ণিত রয়েছে।  হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন

عن أبي هُرَيْرَةَ رَضِي اللَّهُ عَنْهُ قَالَ : ( بَيْنَمَا نَحْنُ جُلُوسٌ عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذْ جَاءَهُ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلَكْتُ قَالَ مَا لَكَ قَالَ وَقَعْتُ عَلَى امْرَأَتِي وَأَنَا صَائِمٌ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هَلْ تَجِدُ رَقَبَةً تُعْتِقُهَا قَالَ لا قَالَ فَهَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تَصُومَ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ قَالَ لا فَقَالَ فَهَلْ تَجِدُ إِطْعَامَ سِتِّينَ مِسْكِينًا قَالَ لا قَالَ فَمَكَثَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَبَيْنَا نَحْنُ عَلَى ذَلِكَ أُتِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِعَرَقٍ فِيهَا تَمْرٌ وَالْعَرَقُ الْمِكْتَلُ ( وهو الزنبيل الكبير ) قَالَ أَيْنَ السَّائِلُ فَقَالَ أَنَا قَالَ خُذْهَا فَتَصَدَّقْ بِهِ فَقَالَ الرَّجُلُ أَعَلَى أَفْقَرَ مِنِّي يَا رَسُولَ اللَّهِ فَوَ اللَّهِ مَا بَيْنَ لابَتَيْهَا يُرِيدُ الْحَرَّتَيْنِ أَهْلُ بَيْتٍ أَفْقَرُ مِنْ أَهْلِ بَيْتِي فَضَحِكَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى بَدَتْ أَنْيَابُهُ ثُمَّ قَالَ أَطْعِمْهُ أَهْلَكَ

আমরা রাসূলুল্লাহ সাঃ এর পাশে বসা ছিলাম, তখন একব্যক্তি এসে বলল, হে রাসূলুল্লাহ সাঃ আমি ধংস হয়ে গেছি। রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন, তোমার কি হয়েছে? তিনি বললেন, আমি রোযা অবস্থায় স্ত্রী সহবাস করে ফেলেছি। তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন, তুমি কি কোনো গোলাম পাবে যাকে তুমি কাফ্ফারা হিসেবে আযাদ করবে? সাহাবী বললেন, আমি সক্ষম নই। তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন, তাহলে কি তুমি ধারাবাহিক দুই মাস রোযা রাখতে পারবে? তিনি বললেন, না, এতে ও আমি সক্ষম নই। তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ আবার তাকে জিজ্ঞাসা করলেন,তাহলে কি তুমি ষাটজন মিসকিন আহার করাতে পারবে? তখন তিনি বললেন,না, এতে ও আমি সক্ষম নই। রাসূলুল্লাহ সাঃ স্বস্থানেই নিরবে বসে থাকলেন। রাবী আবু হুরায়রা রাযি বলেন, আমরা এভাবেই আমরা স্ব স্ব স্থানে বসে রইলাম। তৎক্ষনাৎ রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট এক আ'রাক্ব পরিমাণ খেজুর আসল,তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন, প্রশ্নকারী কোথায়?সাহাবী বললেন, জ্বী হুজুর এই তো আমি। তুমি এগুলো নাও, এবং সদকাহ করো। তখন ঐ সাহাবী বললেন হে রাসূলুল্লাহ সাঃ আমি কি আমার থেকে মুহতাজ ব্যক্তিকে সদকাহ করবো? আল্লাহর কসম! মদিনা বাসীদের মধ্যে আমার থেকে গরীব লোক আর কেউ নেই। এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাঃ হেসে ফেললেন, এমনকি উনার দাত বেড়িয়ে পড়ল। অতপর রাসূলুল্লাহ সাঃ ঐ সাহাবীকে বললেন তাহলে তুমি তোমার পরিবারবর্গকে আহার করাও। {সহীহ বুখারী (ফতহুল বারী নসখা)-১৯৩৬ সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৬৭১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৬৯৪৪, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-১১০৭, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-১৯৪৯, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৩৫২৭}


কেহ যদি রোযার কাফফারা স্বরুপ লাগাতার ৬০ টি রোযা রাখতে শক্তি না রাখে, তাহলে সে ৬০ জন মিসকিনকে খাবার খাওয়াবে।

নতুবা একজন মিসকিনকে ৬০ বেলা খাবার খাওয়াবে।

বা ৬০ টি ছদকায়ে ফিতর আদায় করবে।


আরো জানুনঃ

https://www.ifatwa.info/102

https://ifatwa.info/1752/


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!


১. তিনি ঐ রোজাগুলো কাযাই আদায় করার চেষ্টা করবেন। অর্থাৎ যখন সুস্থ হবেন তখন কাযা আদায় করবেন। আর যদি এমন হয় যে, আর কখনো সুস্থ হওয়ার সম্ভবনা নেই তখন প্রত্যেকটি রোজার জন্য একটি ফিতরা পরিমান টাকা ফিদিয়া দিয়ে দিবেন।

বর্তমান সময়ে একটা ফিদিয়ার সর্বনিম্ন হলো ১২০/১৩০ টাকার মত। আর যারা যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত ব্যক্তি তাদেরকে উক্ত ফিদিয়া দিতে পারবেন। এতে কোনো সমস্যা নেই। আরো বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/41445/

আরো জানুন - https://ifatwa.info/42210/

২. যদি এমন হয়ে থাকে যে, আপনার আম্মু ঐ রোজাগুলো রাখেনি। তাহলে শুধু কাযা রোজা রাখলেই হবে। আর যদি এমন হয় যে, ঐ রোজাগুলো রাখার পর ইচ্ছকৃত ভেঙ্গে ফেলেছেন। তাহলে কাফফারা দিতে হবে।

কাফফারা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন - https://ifatwa.info/87157/

৩. তিন রাকাত বিতির পড়বেন।

বিতির নামাজের কাযা সংক্রান্ত আরো জানুন

https://ifatwa.info/2053/

বিতির নামাজ ৩ রাকাত

https://ifatwa.info/4372/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 279 views
...