আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
77 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আসসাামুআলাইকুম
আমি একজন নারী। বয়স ৩০ বছর। বর্তমানে আমি প্রথম শ্রেনীর একটি চাকুরি করি। আমার বাবা নেই।আমি দীর্ঘদিন একজনের সাথে রিলেশনশিপে ছিলাম। কিছুদিন আগে পারিবারিকভাবে বিয়ের কথা সব ঠিকঠাক হলেও নানা কারণে বিয়েটা হয়নি। এরইমধ্যে জানতে পারি।
মানুষটা এক আল্লাহ তাআলা কে বিশ্বাস করেন না। ওনার ভাষ্যমতে উনি নাস্তিক নন। উনি এক ইউনিভার্সাল গড এ বিশ্বাসী। সেটা যে একমাত্র আল্লাহ তাআলা এইটা উনি মানেন না। সব ধর্মের উপাসনা কেই তিনি বৈধতা দেন এমনকি মূর্তিপূজা ও। উনি নামায পড়েন কিন্তু এক আল্লাহ কে বিশ্বাস করে নয়। তাঁর দৃষ্টিতে কেউ তো তাকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন নামাজের মাধ্যমে।

তাঁর মা এবং পরিবারের অন্যরা যথেষ্ট মুসলিম সুন্নাহ মেনে চলেন। কেউ তাঁর এই বিশ্বাসের কথা জানেন না। আমাকেও সে কাউ কে বলতে বারণ করেছেন এবং কথা নিয়েছেন যাতে আমার ফ্যামিলিতে ও এই ব্যাপারটা না বলি।

আমি খুবই দুশ্চিন্তায় পরে গেছি।

এমনটাও সম্ভব!!
আমি এখন কি করবো
বিয়ে টা করা কি উচিত হবে??

কুরআন, হাদীসের আলোকে আমাকে পরামর্শ দিলে অনেক উপকৃত হব।

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

জবাব:-

https://ifatwa.info/84052/  নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, শরীয়তের বিধান মতে কোনো নাস্তিককে বিবাহ করা মুসলিমের জন্য জায়েজ নেই। এতে বিবাহই শুদ্ধ হবেনা। তাই প্রশ্নে উল্লেখিত দম্পতির সংসার যেনার সংসার বলে বিবেচিত হবে। তারা অনবরত যেনার গুনাহে লিপ্ত রয়েছে।

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন,

وَلَا تَنْكِحُوا الْمُشْرِكَاتِ حَتَّى يُؤْمِنَّ وَلَأَمَةٌ مُؤْمِنَةٌ خَيْرٌ مِنْ مُشْرِكَةٍ وَلَوْ أَعْجَبَتْكُمْ وَلَا تُنْكِحُوا الْمُشْرِكِينَ حَتَّى يُؤْمِنُوا وَلَعَبْدٌ مُؤْمِنٌ خَيْرٌ مِنْ مُشْرِكٍ وَلَوْ أَعْجَبَكُمْ أُولَئِكَ يَدْعُونَ إِلَى النَّارِ وَاللَّهُ يَدْعُو إِلَى الْجَنَّةِ وَالْمَغْفِرَةِ بِإِذْنِهِ وَيُبَيِّنُ آَيَاتِهِ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَذَكَّرُونَ

অর্থ: তেমারা মুশরিক নারীদের বিয়ে করো না যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। নিঃসন্দেহে একজন মুমিন দাসী যে কোনো মুশরিক নারীর চেয়ে অনেক উত্তম। যদিও এই মুশরিক নারীকে তোমাদের বেশি ভালো লাগে। আর তোমরা (তোমাদের নারীদের) মুশরিক পুরুষদের কাছে বিয়ে দিয়ো না। যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। নিঃসন্দেহে একজন মুমিন দাস যে কোনো মুশরিক পুরুষের চেয়ে অনেক উত্তম। যদিও সেই মুশরিক পুরুষকে তোমাদের বেশি ভালো লাগে। কারণ তারা (মুশরিকরা) সকলে তো জাহান্নামের দিকে ডাকে আর আল্লাহ তার বিধানের মাধ্যমে জান্নাত ও মাগফিরাতের দিকে আহবান করেন। তিনি তার আয়াতসমূহ মানুষের উপকারার্থে স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তারা তা অনুসরণ করতে পারে। (সূরা বাকারা : ২২১)

অন্য আয়াতে ইরশাদ করেন-

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا إِذَا جَاءَكُمُ الْمُؤْمِنَاتُ مُهَاجِرَاتٍ فَامْتَحِنُوهُنَّ اللَّهُ أَعْلَمُ بِإِيمَانِهِنَّ فَإِنْ عَلِمْتُمُوهُنَّ مُؤْمِنَاتٍ فَلَا تَرْجِعُوهُنَّ إِلَى الْكُفَّارِ لَا هُنَّ حِلٌّ لَهُمْ وَلَا هُمْ يَحِلُّونَ لَهُنَّ.. وَلَا تُمْسِكُوا بِعِصَمِ الْكَوَافِرِ

 (তরজমা) হে ঈমানদারগণ! যখন তোমাদের নিকট ঈমানদার নারীগণ হিজরত করে আসে তখন তোমরা তাদের পরীক্ষা কর। আল্লাহ অধিক জ্ঞাত তাদের ঈমানের ব্যাপারে। এরপর তোমরা যদি জানতে পার, তারা (হিজরত করে আসা নারীগণ) মুমিন তাহলে তাদেরকে কাফেরদের কাছে ফিরিয়ে দিও না। তারা (মুমিন নারীগণ) কাফেরদের জন্য বৈধ নয় এবং কাফেরগণও তাদের (মুমিন নারীদের) জন্য বৈধ নয় ... । আর তোমরা কাফের নারীদের সাথে দাম্পত্য সম্পর্ক বজায় রেখো না। (সূরা মুমতাহিনা : ১০)

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্বামী যেহেতু মুসলিম, তাই সে আখেরাতে যেনার শাস্তি ভোগের পর কোনো এক সময় জান্নাতে যাবে। তবে তার স্ত্রী যেহেতু অমুসলিম,তাই সে কোনোদিনই জান্নাতে যাবেনা। সে চীরস্থায়ী জাহান্নামী।

রাসুলুল্লাহ সাঃ উক্ত হাদীসে বলেছেনঃ তোমরা ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)।

বিবাহের ক্ষেত্রে রাসুল সাঃ কুফু মিলাইতে বলেছেন। হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدَّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ»

অর্থ: আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত) চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ, অথবা বংশ-মর্যাদা, অথবা রূপ-সৌন্দর্য, অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)! (সহীহ বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবূ দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ ৯৫২১, ইরওয়া ১৭৮৩, সহীহ আল জামি‘ ৩০০৩।)

কুফু সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ  https://www.ifatwa.info/4541/

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

জ্বী না! জেনেশুনে এমন ছেলেকে বিয়ে করা জায়েয হবে না। যদি ঐ ব্যক্তি এক আল্লাহ কে বিশ্বাস না করে তাহলে সে প্রকৃত মুসলমান না। তার বিশ্বাস শিরকে আকবারের অন্তর্ভূক্ত। শরীয়তের বিধান মতে কোনো মুশরিক, সংশয়বাদী/ নাস্তিককে বিবাহ করা মুসলিমের জন্য জায়েজ নেই। বিধায়, উক্ত ছেলেকে বিবাহ করা জায়েয হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...