আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
47 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (5 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম শায়েখ,

কসমের কাফফারা বিষয়ে অনেক শুনলাম এবং বুঝার চেষ্টা করলাম, সেখানে বলা হয়েছে যে কাফফারা হিসেবে ১০ জন মিসকিনকে ২ বেলা খাবার দিতে হবে অথবা কাপড় দিতে হবে নয়ত একাধারে ৩দিন রোযা রাখতে হবে।

যেহেতু আমার সার্মত্য আছে তাই ৩দিন রোযা আমার জন্য প্রযোজ্য হবে না।

এখন সমস্যা হলো, মিসকিনদের কিভাবে খুজে পাবো?
আমাদের সমাজে যাদের মিসকিন বলে তারা গরীব কিন্তু তাদের অনেকের সন্তান স্বল্প আয় করে। তারপর ও লোকেরা বলে যে তারা মিসকিন খাবার খায়।

আবার অনেকে বলে যে আজকাল মিসকিন তেমন পাওয়া যায় না, তাই অনেকে মাদ্রাসার ছাত্রদের খাবার দিয়ে দেয়।

এখন আমার প্রশ্ন হলো,
১| মাদ্রাসার ছাত্রদের মিসকিন খাবার দিয়ে দিলে কাফফারা আদায় হবে কিনা? কেমন ছাত্রদের দিলে আদায় হবে?

২| আমাদের সমাজে যারা মিসকিন বলে বিবেচিত, হাদীসের ভাষায় তাদের বৈশিষ্ট্যর কিছু কিছু অমিল আবার মিল পাওয়া যায়, তারা গরীব, স্বল্প আয়। এখন তাদের খাবার দিলে কাফফারা আদায় হবে কিনা?
৩| ১০ জন মিসকিনদের খাবার দেয়ার ৫ দিন পর জানা গেল যে এদের ৩ জন মিসকিন নয়, ফকির টাইপের। তখন কি কাফফারা আদায় হয়ে গেছে কিনা, নাকি আবার কাফফারা আদায় করতে হবে?

৪| ফকির আর মিসকিন খুবই কাছাকাছি, মিসকিনের কোন গুণ দেখে বুঝতে পারবো যে সে মিসকিন?

৫| ২বেলার খাবার যদি ১ বেলায় দিয়ে দেই তাহলে সমস্যা হবে?

৬| ৫ জন মিসকিনকে ১ম দিন ২ বেলা খাবার দেয়ার পর, ২য় দিন আবার সেই একই ৫জন মিসকিনকে ২বেলা খাবার দিলে কাফফারা আদায় হবে কিনা? নাকি ১০ জন মিসকিন কে ভিন্ন ভিন্ন হতে হবে?

৭| ১০ জন মিসকিন কে ২ বেলা খাবার দেয়ার যে বর্ণনা আছে, তাতে কি ২ বেলার খাবার এর সমস্ত উপাদানগুলে কি নিজ টাকায় কিনতে হবে নাকি যেমন হলুদ গুড়া, মরিচ গুড়া আমার নানার বাড়ী থেকে এনে দিলে সমস্যা হবে কিনা?

দয়াকরে উত্তর গুলে দিলে অনেক উপকৃত হবো।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/71830/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, 

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলছেন

إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاء وَالْمَسَاكِينِ وَالْعَامِلِينَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغَارِمِينَ وَفِي سَبِيلِ اللّهِ وَابْنِ السَّبِيلِ فَرِيضَةً مِّنَ اللّهِ وَاللّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ

যাকাত হল কেবল (১)ফকির, (২)মিসকীন, (৩)যাকাত উসূলকারী ও (৪)যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদের হক (৫)এবং তা দাস-মুক্তির জন্যে ও (৬)ঋণগ্রস্তদের জন্য, (৭)আল্লাহর পথে জেহাদকারীদের জন্যে এবং(৮) মুসাফিরদের জন্যে, এই হল আল্লাহর নির্ধারিত বিধান।আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।(সূরা আত-তাওবাহ-৬০)

কে যাকাত খেতে পারবে?

وَلَا يُشْتَرَطُ النَّمَاءُ إذْ هُوَ شَرْطُ وُجُوبِ الزَّكَاةِ لَا الْحِرْمَانِ كَذَا فِي الْكَافِي. وَيَجُوزُ دَفْعُهَا إلَى مَنْ يَمْلِكُ أَقَلَّ مِنْ النِّصَابِ، وَإِنْ كَانَ صَحِيحًا مُكْتَسَبًا كَذَا فِي الزَّاهِدِيِّ.

অর্থাৎ-নেসাব পরিমাণ মাল(নামী তথা বাড়ন্ত হোক বা না হোক,শরীয়তে নামী মাল চার প্রকার যথা-স্বর্ণ,রূপা বা টাকা,ব্যবসার মাল,গবাদি পশু)
এর মালিক না হলে যাকাত খাওয়া যাবে যদি প্রয়োজন থাকে।তাই গায়রে নামী বা অবাড়ন্ত মালের নেসাব পরিমাণ কেউ মালিক হলে যদিও তার উপর যাকাত আসবে না তথাপিও সে যাকাতের মাল খেতে পারবে না।আর কোনো প্রকার মালই যদি কারো কাছে নেসাব পরিমাণ না থাকে তাহলে সে সুস্থ উপার্জন স্বক্ষম হওয়া সত্তেও তার জন্য যাকাতের মাল খাওয়া জায়েয আছে।
(ফাতাওয়া হিন্দিয়া-১/১৮৯) 

যে ব্যাক্তি নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক নন,সেই ব্যাক্তি শরীয়তের পরিভাষায় ধনী নয়,সে ফকির।
সুতরাং সেই ব্যাক্তিকে যাকাত দেয়া যাবে।
কাফফারার খাবার/টাকা দেয়া যাবে।

(নেসাব পরিমান সম্পদ বলতে সাড়ে বাহান্ন ভড়ি রুপা বা সমমূল্যের মালিক হওয়া বুঝায়।)

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
এক্ষেত্রে সে ছাত্ররা বালেগ হলে ও নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক না হয়ে থাকলে,সেক্ষেত্রে তাদেরকে দিলে কাফফারা আদায় হবে।

তারা নাবালেগ হলে ও তাদের বাবা নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক না হয়ে থাকলে,সেক্ষেত্রেও সে ছাত্রদের দিলে কাফফারা আদায় হবে।

তবে যদি তারা নাবালেগ হয়,আর তাদের পিতা ধনী হয়,তথা নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক হয়,সেক্ষেত্রে তাদেরকে কাফফারার খাবার দেয়া যাবেনা।

(০২)
তারা যদি নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক না হয়ে থাকেন,সেক্ষেত্রে তাদের খাবার দিলে কাফফারা আদায় হবে।

(০৩)
পুনরায় কাফফারা আদায় করতে হবেনা।

(০৪)
এক্ষেত্রে মিসকিন হওয়া আবশ্যক নয়। 
যে ব্যাক্তি নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক নয়,তাকেই আপনি কাফফারার খাবার দিতে পারবেন।

(০৫)
সমপরিমাণ টাকার খাবার বা সমপরিমাণ টাকা দিয়ে দিলে হবে।

(০৬)
৫ জন মিসকিনকে ১ম দিন ২ বেলা খাবার দেয়ার পর, ২য় দিন আবার সেই একই ৫জন মিসকিনকে ২বেলা খাবার দিলে কাফফারা আদায় হবে।

(০৭)
আপনার নানা যদি সেই হলুদ গুড়া, মরিচ গুড়া ইত্যাদি আপনাকে দিয়ে দেয় তথা আপনাকে এগুলোর মালিক বানিয়ে দেয়,সেক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...