আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
101 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (8 points)
reshown by
আস সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ, একটু আর্জেন্ট উত্তর চাচ্ছিলাম ।
উস্তায, বিয়ের আগেই পাত্র আমার কাছে ২য় বিবাহের অনুমতি চাচ্ছে, সম্ভব হলে পরে আরো ২টা করবে । তার কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন যে, উনার মেসেজটা নিচে দেয়া হলো:

❝বর্তমান সময়ে একের অধিক বিয়ে করা এই বিষয়টা নেই বললেই চলে । অনেক মেয়ের বিয়েই হচ্ছে না বিয়ে কঠিন হওয়ার কারণে । বিধবা + ডিভোর্সি । আমার এগুলো নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে আছে । কোনো অসহায় নারীর রিজিকের ব্যবস্থা হলে আপনিও (স্ত্রী) সওয়াবের অংশীদার হবেন❞

উপরোক্ত লিখাটা তিনি বলেছেন । আমি আব্বু আম্মুর একমাত্র মেয়ে, আব্বু কখনোই উনার মাসনা সাপোর্ট করবেনা - বরং উনি মাসনা করলে আব্বু বড় রকমের ঝামেলা তৈরি করার আশংকা রয়েছে । আমিও ব্যক্তিগতভাবে সতীন গ্রহণ করতে মোটেও আগ্রহী না ।
১) উস্তায আমার কি করণীয়? তাকে রিজেক্ট করবো? (সে পরিপূর্ণ দ্বীনদার)
২) সতীন গ্রহণে সম্মতি না থাকায় আমি কি গুনাহগার হবো?
৩) উনি বহুবিবাহ বাদ দিয়ে যদি আমাকে বিয়েও করেন, উনার অবস্থা এমন যে পরে উনি অবশ্যই মাসনা করবেন । এমতাবস্থায় আমার কি তাকে বিয়ে করা উচিত?

আপনার উপদেশ চাচ্ছিলাম ইং শা আল্লহ ।
উস্তায আমি একটু টেনশনে, ৩টা প্রশ্নেরই উত্তর দিলে মুনাসিব হতো ইং শা আল্লহ

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)

ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্ল-হি ওয়া বারাকা-তুহু।

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/14042/ নং ফাতওয়াতে আমরা বলেছি যে,

শরীয়তের বিধান মতে একাধিক স্ত্রীর মাঝে যদি ইনছাফ করতে পারে, তাহলে প্রয়োজনের স্বার্থে স্বামী একাধিক বিবাহ করতে পারবে।

এক্ষেত্রে ১ম স্ত্রীর অনুমতির প্রয়োজন নেই।  


আল্লাহ তায়ালা বলেন

فانكحوا ما طاب لكم من النساء مثنى وثلاث ورباع

তোমরা বিবাহ করবে নারীদের মধ্যে যাকে তোমার ভালো লাগে—দুই, তিন অথবা চার। আর যদি আশঙ্কা করো যে সুবিচার করতে পারবে না, তাহলে একজনকে (বিয়ে করো)...।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৩)


এক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালা প্রথম স্ত্রী থেকে অনুমতি নিতে হবে বলে শর্ত দেননি। বরং শর্ত দিয়েছেন যে যদি সকলের মাঝে ইনছাফ করতে পারো। 

তবে একাধিক বিবাহ করতে চাইলে বাংলাদেশী আইনে স্ত্রীর অনুমতি নিতে হবে। না নিলে প্রথম স্ত্রী মামলা করলে জেল হয়ে যাবে।


ইসলামী আইনে প্রথম স্ত্রীর অনুমতির প্রয়োজন পড়ে না। তবে, বিয়ের সময় এমন শর্ত থাকলে অনুমতির প্রয়োজন পড়ে। দ্বিতীয় বিয়ে করার ইসলামী শর্ত বেশ কঠিন অনেক কড়া।

আগের স্ত্রীর সব ধরনের হক আদায়ের পর নতুন বিয়ের পরেও সমান তালে সব অধিকার পালন করার আত্মবিশ্বাস থাকলেই কেবল যৌক্তিক কারণে দ্বিতীয় বিয়ে করা যায়।

قال اللہ تعالی:فإن خفتم ألا تعدلوا فواحدة الآیة (سورہ نسا، آیت:۳)

 আল্লাহতায়ালা বলেন, একাধিক বিয়ের সুবিধা যাদের আছে, তারা যদি সম অধিকার বজায় রাখার ক্ষেত্রে ভীত হও, তাহলে এক বিয়ে পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাক।


হাদীস শরীফে এসেছে -

وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِىِّ ﷺ قَالَ : «إِذَا كَانَتْ عِنْدَ الرَّجُلِ امْرَأَتَانِ فَلَمْ يَعْدِلْ بَيْنَهُمَا جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَشِقُّه سَاقِطٌ». رَوَاهُ التِّرْمِذِىُّ وَأَبُوْ دَاودَ وَالنَّسَائِىُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِىُّ

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কোনো পুরুষের দু’জন সহধর্মিণী থাকে আর সে তাদের মধ্যে যদি ন্যায়বিচার না করে, তবে সে কিয়ামতের দিন একপাশ ভঙ্গ (অঙ্গহীন) অবস্থায় উঠবে। (সহীহ : তিরমিযী ১১৪১, আবূ দাঊদ ২১৩৩, ইবনু মাজাহ ১৯৬৯, নাসায়ী ৩৯৪২, আহমাদ ৭৯৩৬, সহীহ আল জামি‘ ৭৬১, সহীহ আত্ তারগীব ১৯৪৯।)


কাবিননামায় ২য় বিয়ে করা যাবে না এমন শর্ত দেওয়া জায়েজ নেই।

এমন শর্ত দিলেও প্রয়োজনের তাগিদে ইনছাফ কায়েম করার নিমিত্তে উক্ত শর্ত মানা শরীয়তের দৃষ্টিকোন থেকে স্বামীর উপর জরুরী নয়।

তাই এই শর্ত দেওয়ার পরও উনি ২য় বিবাহ করলে স্ত্রী শরীয়তের দৃষ্টিকোন থেকে স্বামীর বিরুদ্ধে একশন নিতে পারবেন না।

আরো জানুনঃ

https://ifatwa.info/6683/


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!


১. এটা আপনার ও আপনার পরিবারের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। তাই যেটা ইচ্ছা তা আপনারা করতে পারেন। সুতরাং আপনি আপনার পরিবারের সাথে আলোচনা করতে পারেন।

২. শরীয়তের বিধান মতে একাধিক স্ত্রীর মাঝে যদি ইনছাফ করতে পারে, তাহলে প্রয়োজনের স্বার্থে স্বামী একাধিক বিবাহ করতে পারবে।

এটা আল্লাহ তায়ালার একটা বিধান।

৩. এটা আপনার ও আপনার পরিবারের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। তাই যেটা ইচ্ছা তা আপনারা করতে পারেন।

সুতরাং আপনি আপনার পরিবারের সাথে আলোচনা করতে পারেন।

তবে বিয়ের পরবর্তীতে স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করলে শরীয়তের দৃষ্টিকোন থেকে স্বামীর বিরুদ্ধে একশন নিতে পারবেন না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...