আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
65 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
اَلسَّلاَمْ عَلَيْـــــــــــكُمْ وَ رَحْمَةُ اللہِ وَبَرَكَاتُهُ


একটা স্বপ্ন এর ব্যাখ্যা জানতে চাচ্ছিলাম।  স্বপ্নে দেখছি যে আমি কিমচি (একধরনের খাবার) বানাচ্ছিলাম। রাতে। ভাইয়া দরজা খুলে বাইরে গেলো আর ওমনি বাইরে প্রচন্ড বিদ্যুৎ চমকানোর মতো আলো হলো। আমি দ্রুত সেখানে গিয়ে দেখি ভাইয়ার কিছু হয়নি। সে তাড়াতাড়ি ঘরে ঢুকলো এবং মনে হচ্ছিলো একটা সুইচে স্পার্কিং এর জন্য এমন হলো। তাই আমি তাড়াতাড়ি সব সুইচ অফ করি। তখন নামাজের উদ্দেশ্যে অজু করে এসে জোরে জোরে আয়তুল কুরসি পড়ছি। আমি মনে হয় "লা তা' খুযুহু সিনাতুও ওয়ালা নাওম" অংশটুকু ২ বার পড়েছি। কিন্তু দুআটি তে কোথাও একটা ছোট্টো ভুল হওয়ায় আমি আবার আয়তুল কুরসি পড়তে শুরু করি। এবার দরজায় এসে জোরে জোরে পড়তে শুরু করি যেনো খারাপ কিছু থাকলে তা থেকে আল্লাহ হেফাজত করেন। আর বাথরুমের দরজা খোলা থাকায় ভাইয়াকে বকছিলাম। দুআটি পড়া শেষ না হতে ই খুবই ভয়ানক আর অদ্ভুত কিছু দেখি আকাশে। কালো আকাশে দুইটা চাঁদ। তাদের পাশে ছোট একটা তারা বা কিছু আছে। চাঁদ দুইটা কাস্তে আকৃতির,  আর জ্বলন্ত সূর্যের মত কিছুটা লাল লাল রং। একটা চাঁদ আরেকটা চাঁদকে গিলে খাচ্ছে মনে হচ্ছে।  যেই চাঁদটাকে গিলে খাওয়ার মত করছে সেটা আস্তে আস্তে ঢেউ এর মত করে আকৃতি পরিবর্তন করছে, আর স্পার্কিং হচ্ছিলো। দেখে খুব বেশি ভয় লাগছিলো। আমি ভাইয়াকে ভিডিও করতে বলি আর আমার ফোনে ভিডিও করি। চাঁদটা বারবার একই কাজ রিক্যাপ এর মত করে করছে। আমার খুব ভয় করছিলো। ভাইয়া বলছিলো যে " এটা কিছু না। এমন হবে বলেছে আগেই" এমন। আমার তবুও খুব ভয় করছিলো।  হঠাৎ ই এই সময়ের দিকে আমার ঘুম ভেঙে যায়।
এর কি কোনো ব্যাখ্যা আছে?

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

জবাব,

ইসলামী দৃষ্টিতে স্বপ্ন তিন প্রকার।

১. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাহকে দেখানো হয় যা কল্যানকর হয়।

২. শয়তানের পক্ষ হতে দেখানো হয় যাতে মানুষ খারাপ, মন্দ ভয়ংকর কিছু দেখে থাকে।

তবে শয়তান স্বপ্ন দেখানোর দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারেনা।

 ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই। শয়তান মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্যই এমন সব আজব আজব জিনিস দেখায়। এমনটা দেখলে ঘুম থেকে জেগে বাম দিকে থুথু ফেলে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়।

৩. মানুষের কল্পনা। অর্থাৎ মানুষ যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা দেখতে পায়।

হাদীস শরীফে এসেছে 

خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ يَقُوْلُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلميَقُوْلُ الرُّؤْيَا مِنْ اللهِ وَالْحُلْمُ مِنْ الشَّيْطَانِ فَإِذَا رَأٰى أَحَدُكُمْ شَيْئًا يَكْرَهُه“فَلْيَنْفِثْ حِينَ يَسْتَيْقِظُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ وَيَتَعَوَّذْ مِنْ شَرِّهَا فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّه“وَقَالَ أَبُو سَلَمَةَ وَإِنْ كُنْتُ لأَرَى الرُّؤْيَا أَثْقَلَ عَلَيَّ مِنَ الْجَبَلِ فَمَا هُوَ إِلاَّ أَنْ سَمِعْتُ هٰذَا الْحَدِيثَ فَمَا أُبَالِيهَا.

আবূ ক্বাতাদাহ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছিঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, আর মন্দ স্বপ্ন হয় শয়তানের তরফ থেকে। সুতরাং তোমাদের কেউ যদি এমন কিছু স্বপ্ন দেখে যা তার কাছে খারাপ লাগে, তা হলে সে যখন ঘুম থেকে জেগে ওঠে তখন সে যেন তিনবার থুথু ফেলে এবং এর ক্ষতি থেকে আশ্রয় চায়। কেননা, তা হলে এটা তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না।

আবূ সালামাহ বলেনঃ আমি যখন এমন স্বপ্ন দেখি যা আমার কাছে পাহাড়ের চেয়ে ভারি মনে হয়, তখন এ হাদীস শোনার ফলে আমি তার কোন পরোয়াই করি না। [বুখারী ৫৭৪৭ মুসলিম পর্ব ৪২/হাঃ ২২৬১, আহমাদ ২২৭০৭]

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

উক্ত স্বপ্নে অনিষ্টতা থেকে আল্লাহ তায়ালার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করবেন। বাহ্যিক ভাবে মন্দ কিছু বিষয়ের আলামত পাওয়া গেলেও এতে বিচলিত হওয়ার কারণ নেই। বরং আপনার আমল বাড়িয়ে দিতে হবে, দ্বীনদার লোকদের সাথে উঠাবসা করতে হবে, পবিত্র হালতে থাকতে হবে, অহংকার থেকে বেঁচে থাকতে হবে। বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত, যিকির আযকার, ফরজসহ নফল নামাজ পড়তে হবে। সাধ্যানুযায়ী দান ছদকাহ করতে হবে। স্বপ্নের কথা কাউকে বলা যাবেনা। যাদের বিষয়ে স্বপ্ন দেখেছেন তাদেরকেও উক্ত নেক আমল করতে দাওয়াত প্রদাণ করুন। আশা রাখি কোন ক্ষতি হবে না ইনশাআল্লাহ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...