পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক পদে চাকরি কি হালাল?

Question

আসসালামু আলাইকুম,
আমার জন্য একটা বিয়ের প্রস্তাব এসেছে, ছেলে সরকারি চাকুরীজীবি। পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক এ হেলথ্ ডিপার্টমেন্টে পদে করেন। উনার কাজ হচ্ছে মাঠ পর্যায়ে যারা কাজ করে তাদেরকে পরিদর্শন করা। তারা ঠিকঠাক কাজ করে কি না। এই চাকরি নিয়ে উলামায়ে কোরামের অনেক মতবাদ শুনেছি। কেউ এই চাকরি কে হারাম বলেছেন কেউ সন্দেহ পূর্ণ বলপছেন। চাকরি কি হালাল/হারাম/ নাকি সন্দেহজনক হারাম।

একটা হাদিসে দেখেছিলাম রাসুল ﷺ বলেন, ‘হালাল সুস্পষ্ট এবং হারামও সুস্পষ্ট। আর উভয়ের মধ্যে অনেক সন্দেহজনক বিষয় বা বস্তু রয়েছে। যেগুলো হালাল নাকি হারাম এ সম্পর্কে অনেকেই জানে না। এরূপ ক্ষেত্রে যে ব্যক্তি সন্দেহের বস্তুকে পরিহার করে চলবে, তার দ্বীন ও ঈমান পবিত্র থাকবে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি সন্দেহজনক কাজে জড়িয়ে পড়বে, সে অচিরেই হারামে লিপ্ত হয়ে পড়বে.......!। (বুখারি : ২০৯০)

তাই আমি সবসময় হারাম তো দূরের কথা হারামের সন্দেহ হলেই সেটা ছেড়ে দেই। আর বিয়ের পর তো আমার হাসবেন্ডের উপর ই আমাকে নির্ভর করতে হবে। তাই এটা সম্পর্কে স্পষ্ট জানতে চাচ্ছি। আমাকে এই দুটো প্রশ্নের একটা পরামর্শ দিন।
১। এই চাকরিটাকি হালাল
২। এই প্রস্তাবে কি আগানো উচিত হবে? যেহেতু আমি হালাল/ হারাম খুব বেশিই মেইনটেইন করে চলি। সন্দেহপূর্ণ জিনিস থেকেও দূরে থাকি। তাছাড়া ছেলেকেও আমার তেমন পছন্দ হয়নি, ছবি দেখেছি। আমার পরিবারের মানুষ সরকারি চাকরি দেখে এগিয়ে যেতে পারে, কিন্তু আমার পছন্দের ও যথেষ্ট গুরুত্ব দেন। আমি একটু এগিয়ে আসলেই বিয়ে টা হয়ে যাবে। প্রস্তাব আসার পর থেকেই ইস্তেখারা করেছি কিন্তু কেমন যেন অশান্তি লাগছে এর পর থেকেই। ইস্তেখারা করার পরই আজ জানতে পারলাম এই পেশাটা নাকি হারাম,  এরপর আরেকজন আমার বায়োডাটা কিনেছি দেেখলা, এখনো প্রস্তাব পাঠায়নি,  কাল রাত ১১ টার দিকে কিনেছে, আজ হয়তো যোগাযোগ করবে। এটা কি আমার ইস্তেখারার ফলাফল ভাববো? যেহেতু ইস্তেখারা করার পরই মনে অশান্তি লাগছে তারপর জানতে পারলাম এই পেশাটা সন্দেহজনক আরেকজন আমার বায়োডাটা ও কিনেছে। পরিবারের লোকরাও তেমন কোনো পরামর্শ দিবে না, ওরা সরকারি চাকুরীজীবি প্রস্তাবে আগাতেই বলবে। ওরা আমার মতের উপরই সব ঠিক করবে। আমি হ্যা বললে আগাবে না করলে না করে দিবে। তাই আমি কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নিতে চাচ্ছি না। কি করবো বুঝতে পারছি না, আমায় একটা পরামর্শ দিন আমি কি এ প্রস্তাবে আগাবো?

Answer 1

জবাবঃ-

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 

بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)

https://ifatwa.info/25914/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ  

হারাম কাজ করতে হয়, এমন কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা ইসলাম অনুমোদন করে না।

পক্ষান্তরে যদি প্রতিষ্ঠানটি এমন কোনো কাজ করে যা মূলগতভাবে হারাম নয় কিন্তু মানুষ এটাকে মন্দ বা হারাম কাজে ব্যবহার করে, এধরণের প্রতিষ্ঠানে

চাকরি করা বৈধ। 

জন্ম নিয়ন্ত্রনের সমস্ত ছুরত যেহেতু হারাম নয়,তাই ঢালাওভাবে জন্ম নিয়ন্ত্রণকে হারাম বলা যায়না,এটা নিয়ন্ত্রন কারীর নিয়ত ইত্যাদির উপর ডিপেন্ড করে।

,    

আরো জানুনঃ

https://ifatwa.info/4441/

সুতরাং পরিবার পরিকল্পনাতে চাকুরী বৈধ হবে।

তবে সর্বদায় খেয়াল রাখতে হবে যে শরীয়ত বহির্ভুত কোনো কাজ যেনো না হয়। 

শরীয়তের আওতায় থেকে কথা বলতে হবে,শরীয়ত বহির্ভুত কোনো দিক নির্দেশনা ইত্যাদি দেওয়া যাবেনা। 

عَنْ عَبْدِ اللّٰهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «طَلَبُ كَسْبِ الْحَلَالِ فَرِيضَةٌ بَعْدَ الْفَرِيضَةِ». رَوَاهُ الْبَيْهَقِىُّ فِىْ شُعَبِ الْإِيْمَانِ

 ‘আব্দুল্লাহ ইবনু মাস্‘ঊদ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অন্যান্য ফরয কাজ আদায়ের সাথে হালাল রুযী-রোজগারের ব্যবস্থা গ্রহণ করাও একটি ফরয। 

(শু‘আবুল ঈমান ৮৩৬৭, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১১৬৯৫.মিশকাতুল মাসাবিহ ২৭৮১)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 

পরিবার পরিকল্পনাতে চাকুরী বৈধ হবে।

ইনকাম হালাল হবে।

তবে সর্বদায় খেয়াল রাখতে হবে যে শরীয়ত বহির্ভুত কোনো কাজ যেনো না হয়। 

শরীয়তের আওতায় থেকে কথা বলতে হবে,শরীয়ত বহির্ভুত কোনো দিক নির্দেশনা ইত্যাদি দেওয়া যাবেনা। 

(০২)

পরিস্থিতি বিবেচনা করে এই প্রস্তাবে না আগানোর পরামর্শ থাকবে। 

আরো জানুনঃ- 

https://ifatwa.info/88873/