আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
62 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (23 points)
আসসালামু আলাইকুম,
আমি ইসলামী ব্যাংকে সঞ্চয় করতে চাই। কিন্তু সুদের বিষয়টা নিয়ে আতঙ্কে আছি। আজকে এদের সাপোর্ট সেন্টারে কল দিয়েছিলাম। তারা বলল ইসলামী ব্যাংক নাকি সুদ দেয় না, মুনাফা দেয়। আমার জমানো টাকায় যারা ব্যবসা করবে তাদের লাভ করা অংশ থেকে কিছু অংশ আমাকে দেবে। এই লভ্যাংশ নাকি নির্দিষ্ট নয়। মুনাফার পরিমাণ তারা কমও দিতে পারে আবার বেশিও দিতে পারে।

এক্ষেত্রে আমি কি ইসলামী ব্যাংকে সঞ্চয় করতে পারবো?? দয়া করে নির্দিষ্ট করে বলবেন, এখানে সঞ্চয় করতে পারবো কি না!!

1 Answer

0 votes
by (56,250 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

জবাব,

https://ifatwa.info/3158/   নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,

ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খোলা, এবং মুনাফা গ্রহন বিষয়ে  উলামায়ে কেরামদের মাঝে ২ টি মত রয়েছে।

এক পক্ষ বলেন যে ইসলামী ব্যাংক গুলো তাদের কার্যক্রম নিয়ে যেসব দাবী করে থাকেন,তা যদি সঠিক হয়,তাহলে সেখানে একাউন্ট খোলা জায়েজ আছে,এবং মুনাফা গ্রহনও জায়েজ আছে।  

আরেক পক্ষ বলেন যে,বাংলাদেশে কোন ব্যাংকই সঠিক পদ্ধতিতে ইসলামীক রুলস মেনে ব্যাংকিং করছে না। তাই একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ব্যাংকে টাকা না রাখা ভাল। কিন্তু প্রয়োজন হওয়ার কারণে কারেন্ট একাউন্ট খোলা জায়েজ। ডিপোজিট এ জাতীয় দীর্ঘমেয়াদী কোন একাউন্ট খোলা জায়েজ হবে না।

عبد الله بن مسعود عن أبيه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لعن الله آكل الربا وموكله وشاهديه وكاتبه

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-“যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়, তার সাক্ষী যে হয়, আর দলিল যে লিখে তাদের সকলেরই উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নং-৪৯৮১)

তবে যেহেতু বর্তমানে ইসলামী ব্যাংক ছাড়া বাকি ব্যাংকগুলো আমভাবে সুদী কারবার করে থাকে। শরয়ী বিধানের কোন তোয়াক্কাই করে না। সেই হিসেবে ইসলামী ব্যাংকগুলো শরয়ী বিধান পালনের কিছুটা হলেও চেষ্টা করে থাকে। যদিও পূর্ণাঙ্গ শরয়ী রুলস তারাও অনুসরণ করে না বলেই আমরা জানি। কিন্তুর মন্দের ভাল অবশ্যই। তাই অন্য ব্যাংকে একাউন্ট খোলার তুলনায় ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খোলা নিরাপদ বলেই মনে হয়। বাকি আল্লাহ তাআলাই ভাল জানেন।

আর যদি কারেন্ট একাউন্ট খোলা সম্ভব না হয়, তাহলে বাধ্য হলে ডিপোজিট ও দীর্ঘমেয়াদী একাউন্টও জায়েজ আছে। তবে তার মুনাফাটি  সওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করে দিবে।

فَمَنِ اضْطُرَّ غَيْرَ بَاغٍ وَلَا عَادٍ فَلَا إِثْمَ عَلَيْهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ [٢:١٧٣

অবশ্য যে লোক অনন্যোপায় হয়ে পড়ে এবং নাফরমানী ও সীমালঙ্ঘনকারী না হয়, তার জন্য কোন পাপ নেই। নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহান ক্ষমাশীল, অত্যন্ত দয়ালু। (সূরা বাকারা-১৭৩)

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

সতর্কতামূলক ইসলামী ব্যাংকসহ কোনো ব্যাংকেই একাউন্ট না খোলাই ভালো। তবে বিশেষ প্রয়োজনে আপনাকে যদি একাউন্ট খুলতেই  হয়, তাহলে  আপনি ইসলামী ব্যাংকে মুদারাবা একাউন্ট খুলতে পারেন।

আপনাকে যে বিষয় খেয়াল রাখতে  হবে সেটা হলোঃ আপনার আসলে কতটাকা জমা করছেন, সেটা কোথাও লিখে রাখবেন। আপনি যদি ব্যাংকে টাকা জমা করার সাথে সাথেই আপনার টাকা উত্তোলন করেন,তাহলে তো কোনো সমস্যাই নেই। এক্ষেত্রে আপনি শুধু আপনার মুল টাকাটাই পাবেন।

আর যদি আপনি পরবর্তীতে তা উত্তোলন করেন,তাহলে আপনি দেখবেন যে আপনাকে যত টাকা দেওয়া হয়েছে,তা থেকে আপনার মুল টাকা বাদ দিলে কতটাকা থাকে,অর্থাৎ আপনি আগে আপনার মুনাফার সংখ্যা বের করবেন,যদি আপনি নিজে সেটা সম্পর্কে কোনোভাবেই অবগত হতে না পারেন,তাহলে ব্যাংকের যার কাছ থেকে টাকা তুলবেন,তার সহায়তা নিতে পারেন । তিনিই আপনাকে এই বিষয়ে সাহায্য করতে পারেন।

তবে আপনি যদি আপনার মুল টাকা হিসেব করে রাখেন, তাহলে এটাই উত্তম হবে। আপনার মুল টাকা বাদ দিয়ে যত টাকা থাকে, সেটা আপনি গরীব মিসকিদের মাঝে ছওয়াবের নিয়ত ছাড়াই দান করে দিবেন। সতর্কতা মূলক এই পদ্ধতি অবলম্বন করাই  সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...