আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
52 views
in সালাত(Prayer) by (12 points)
আস্সালামু আলাইকুম, উস্তায্।


আমার শশুরবাড়ি দিনাজপুর ,সেখানে তাদের নিজের বাড়ি।


আমি আর আমার হাসব্যান্ড ঢাকা থাকি( ভাড়া বাসা)।ঈদ ছাড়া আমাদের দিনাজপুরে তেমন যাওয়া হয় না।


আমার বাবার বাসা ঢাকা।এখন আমি যদি ঢাকার বাসা থেকে বাবার বাসা ( ঢাকাতে) বেড়াতে আসি তাহলে কসর করতে হবে?

আর শশুরবাড়ি দিনাজপুর গেলেও কি কসর হবে???নাকি যেহেতু আমার হাসব্যান্ড এর নিজের সম্পদ + বাসা সেখানে সে কসর করে না।আমিও কি তার অনুগামী হয়ে কসর ছাড়া সম্পুর্ন সলাত পড়বো?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

ওয়াতনে আসলি তথা স্থায়ী নিবাস বলে এমন স্থানকে-“যেখানে ব্যক্তির বসবাসের জন্য স্থায়ী গৃহ থাকে, স্ত্রী সন্তান নিয়ে যেখানে সর্বদার জন্য থাকার নিবাস হয়”।

فى رد المحتار- (الوطن الاصلى يبطل بمثله) ( قوله إذا لم يبق له بالأول أهل ) أي وإن بقي له فيه عقار قال في النهر : ولو نقل أهله ومتاعه وله دور في البلد لا تبقى وطنا له وقيل تبقى كذا في المحيط وغيره (رد المحتار-كتاب الصلاة، باب صلاة المسافر، مطلب في الوطن الأصلي ووطن الإقامة-2/614)

সারমর্মঃ ওয়াতনে আসলী, ওয়াতনে আসলিত দ্বারা বাতিল হয়ে যায়। ওয়াতনে আসলিতে যদি স্থায়ী আর না থাকার নিয়ত করে,এবং  পরিবার সামানা যদি সেখানে আর না থাকে,তাহলে সেটা আর ওয়াতনে আসলি থাকবেনা। 
অন্যথায় সেটা ওয়াতনে আসলি হিসেবেই থাকবে।  

আরো জানুনঃ

সফরের দুরত্বে তবে,সেখানে যদি ১৫ দিন বা তার চেয়ে বেশি থাকার নিয়ত করে,তাহলে সেই স্থান ওয়াতনে ইকামত বলা হবে।
সেখানে পূর্ণ নামাজই আদায় করতে হবে।   

https://ifatwa.info/36976/ ফতোয়ায় উল্লেখ করা হয়েছেঃ
আয়েশা রাযি. বলেন,

فُرِضَتِ الصَّلَاةُ رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ فِي الْحَضَرِ وَالسَّفَرِ، فَأُقِرَّتْ صَلَاةُ السَّفَرِ، وَزِيدَ فِي صَلَاةِ الْحَضَرِ

মুকিম ও মুসাফির অবস্থায় নামায দু’দু রাক’আত ফরজ করা হয়েছিল। পরে সফরের নামায ঠিক রাখা হল কিন্তু মুকিমের নামাযে বৃদ্ধি করা হল। (বুখারী ১০৪০ মুসলিম ৬৮৫)

অপর হাদিসে এসেছে,

عِيسَى بْنُ حَفْصِ بْنِ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ صَحِبْتُ ابْنَ عُمَرَ فِى طَرِيقٍ – قَالَ – فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَقْبَلَ فَرَأَى نَاسًا قِيَامًا فَقَالَ مَا يَصْنَعُ هَؤُلاَءِ قُلْتُ يُسَبِّحُونَ. قَالَ لَوْ كُنْتُ مُسَبِّحًا أَتْمَمْتُ صَلاَتِى يَا ابْنَ أَخِى إِنِّى صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ – ﷺ – فِى السَّفَرِ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ أَبَا بَكْرٍ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ عُمَرَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَصَحِبْتُ عُثْمَانَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَقَدْ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ (لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ

ইবনে উমর রাযি. বলেন, নিশ্চয় আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ এর সাথে সফর করেছি, তিনি মৃত্যুবরণ করার আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি আবু বকর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও আমরণ সফরে ২ রাকাতই পড়েছেন। আমি উমর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি তিনি মৃত্যু পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি  উসমান রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আর আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আমি তোমাদের জন্য রাসুলুল্লাহ ﷺ এর মাঝে রেখেছি উত্তম আদর্শ। (মুসলিম ১৬১১)

আরো জানুনঃ  

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রথমেই নির্ণয় করতে হবে যে আপনাদের ওয়াতনে আসলি কোনটা?

যদি আপনার স্বামী আজীবন দিনাজপুর বাড়িতে স্ত্রী সন্তান সহ থাকার নিয়ত করে থাকে,
সেক্ষেত্রে দিনাজপুরে গিয়ে আপনারা কসর আদায় করতে পারবেননা।
এক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ নামাজই আদায় করতে হবে।

হ্যাঁ, যদি যদি আপনার স্বামী আজীবন দিনাজপুর বাড়িতে স্ত্রী সন্তান সহ থাকার নিয়ত না করে থাকে,বরং ঢাকাতেই স্ত্রী সন্তান সহ থাকার নিয়ত না করে থাকে,সেক্ষেত্রে দিনাজপুরে গিয়ে ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করলে আপনারা কসর আদায় করবেন।
কেননা আপনারা সেখানে মুসাফির এর হুকুমে।

★ঢাকাতে আপনারা যেখানে থাকেন,সেই বাসা হতে আপনার বাবার বাসা যদি ৭৮+ কিলোমিটার বা তার চেয়েও বেশি দূরত্বে হয়,আর সেখানে গিয়ে ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করেন,সেক্ষেত্রে সেখানে গিয়ে আপনারা কসর আদায় করবেন।

আর যদি আপনার বাবার বাসা ৭৮+ কিলোমিটার দূরত্বে হয়,বরং তার চেয়ে কম হয়,সেক্ষেত্রে সেখানে গিয়ে আপনাদের পূর্ণাঙ্গ নামাজই আদায় করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...