আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
2,422 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (47 points)
edited by
স্বামী  স্ত্রীকে তার বাবার বাড়ি যেতে নিষেধ করল। স্ত্রী অমান্য করে বাবার বাড়ি গেল আর  স্বামী রাগ করে তার স্ত্রীকে বলে তর গার্জিয়ানকে ডাক তর সাথে সংসার করবনা, গুনাহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-

আলহামদুলিল্লাহ!


মোগল সাম্রাজ্য কর্তৃত রচিত অনবদ্য ও সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য ফেকহি কিতাব "ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া) তে বর্ণিত রয়েছে,

 لا يقع بها الطلاق إلا بالنية أو بدلالة حال كذا في الجوهرة النيرة. ثم الكنايات ثلاثة أقسام (ما يصلح جوابا لا غير) أمرك بيدك، اختاري، اعتدي (وما يصلح جوابا وردا لا غير) اخرجي اذهبي اعزبي قومي تقنعي استتري تخمري (وما يصلح جوابا وشتما) خلية برية بتة بتلة بائن حرامٌ

কেনায়া শব্দাবলী দ্বারা নিয়ত ব্যতীত বা তালাকের ব্যাপারে ইশরা ইঙ্গিত ব্যতীত তালাক পতিত হয় না।

কেনায়া তালাক তিন প্রকার যথাঃ-

(১)যে সমস্ত শব্দাবলী দ্বারা তালাক ব্যতীত ভিন্ন কিছু বুঝা যায় না।যেমন,তোমার বিষয় তোমার হাতে,তুমি পছন্দ করো,তুমি গণনা করো। 

(২) যে সমস্ত শব্দাবলী দ্বারা তালাক হওয়া এবং না হওয়া উভয়টি বুঝায়।যেমন,তুমু বের হও,তুমি চলে যাও,তুমি আমার কওম থেকে দূরে চলে চাও,তুমি নেকাব পরিধান করো,তুমি পর্দার আড়ালে চলে যাও,তুমি উড়না পরিধান করো। 

(৩) যা তালাক এবং গালির উভয়টির সম্ভাবনা রাখে। হারাম,বায়িন,মুক্ত,দায়মুক্ত, বাত্তাহ,বাতলাহ ইত্যাদি শব্দাবলি।



পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপট তিন প্রকারঃ যথাঃ- 

والأحوال ثلاثة (حالة) الرضا (وحالة) مذاكرة الطلاق بأن تسأل هي طلاقها أو غيرها يسأل طلاقها (وحالة) الغضب

পরিবেশ ও পরিস্থিতি তিন প্রকার। (১) হালতে রেযা- খুশির হালত (২) তালাকের শব্দাবলী উচ্ছারণের হালত(৩) রাগান্বিত অবস্থা।


(১) হালতে রেযা বা খুশির প্রেক্ষাপট 

ففي حالة الرضا لا يقع الطلاق في الألفاظ كلها إلا بالنية والقول قول الزوج في ترك النية مع اليمين 

খশির হালতে নিয়ত ব্যতীত কেনায়া শব্দাবলী দ্বারা তালাক পতিত হবে না।নিয়ত না থাকার বিষয়ে স্বামীর কথাই কসমের সাথে গ্রহণযোগ্য। 


(২) মুযাকারায়ে তালাক বা তালাকের আবেদন/আলোচনার প্রেক্ষাপট 

 وفي حالة مذاكرة الطلاق يقع الطلاق في سائر الأقسام قضاء إلا فيما يصلح جوابا وردا فإنه لا يجعل طلاقا كذا في الكافي 

মুযাকারায়ে তালাকের মুহূর্তে সকল প্রকার কেনায়া তালাকের শব্দ দ্বারা (কাযা'আন) তালাক পতিত হবে,(তবে দিয়ানাতান তালাক হবে না)। হ্যা, যে শব্দগুলো তালাকের আবেদনের জবাব এবং প্রত্যাহার উভয়টা বুঝাবে,সে সব শব্দ দ্বারা তালাক পতিত হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৫)


প্রশ্ন জাগে,মুযাকারায়ে তালাক কাকে বলে? এ বিষয়ে রদ্দুল মুহতারে বর্ণিত রয়েছে,

"(قَوْلُهُ: وَهِيَ حَالَةُ مُذَاكَرَةِ الطَّلَاقِ) أَشَارَ بِهِ إلَى مَا فِي النَّهْرِ مِنْ أَنَّ دَلَالَةَ الْحَالِ تَعُمُّ دَلَالَةَ الْمَقَالِ قَالَ: وَعَلَى هَذَا فَتُفَسَّرُ الْمُذَاكَرَةُ بِسُؤَالِ الطَّلَاقِ أَوْ تَقْدِيمِ الْإِيقَاعِ كَمَا فِي اعْتَدِّي ثَلَاثًا وَقَالَ قَبْلَهُ الْمُذَاكَرَةُ أَنْ تَسْأَلَهُ هِيَ أَوْ أَجْنَبِيٌّ الطَّلَاقَ".( كتاب الطلاق، بَابُ الْكِنَايَاتِ، ٣ / ٢٩٧)

মুযাকারায়ে তালাকের অর্থ হল, স্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বামীর নিকট তালাকের আবেদন করা ,অথবা তৃতীয় কোনো ব্যক্তির পক্ষ থেকে স্বামীর নিকট তালাকের আবেদন এবং তামান্না করা। এই উভয় প্রকারকে 'মুতালাবায়ে তালাক বা মুযাকারায়ে তালাক' নামে অভিহিত করা হয়।তাছাড়া স্বামী যদি ইতিপূর্বে স্ত্রীকে এক বা দুই তালাক দিয়ে থাকে,তাহলে এদ্বারাও মুযাকারায়ে তালাক প্রমাণিত হবে।এই তৃতীয় প্রকারকে  তাকদীমূল ঈ'কা বলা হয়ে থাকে।(রদ্দুল মুহতার-৩/২৯৭) দেখুন- (দারুল ইফতা বিন্নুরী, পাকিস্তান,ফাতাওয়া নং- 144106200277)


(৩)রাগের প্রেক্ষাপট 

وفي حالة الغضب يصدق في جميع ذلك لاحتمال الرد والسب إلا فيما يصلح للطلاق ولا يصلح للرد والشتم كقوله اعتدي واختاري وأمرك بيدك فإنه لا يصدق فيها كذا في الهداية...............  وفي الينابيع ألحق أبو يوسف - رحمه الله تعالى - بالخمسة ستة أخرى وهي الأربعة المتقدمة وزاد خالعتك والحقي بأهلك هكذا في غاية السروجي.

রাগের অবস্থায় স্বামী তালাকের নিয়তকে অস্বীকার করলে স্বামীর উক্ত বক্তব্য-কে সত্যায়ন করা হবে।কেননা সেই শব্দ সমূহে গালিগালাজ ও স্ত্রীর তালাকের আবেদন-কে  ফিরিয়ে দেয়ার অর্থ বিদ্যমান রয়েছে।তবে যেই সমস্ত শব্দাবলীতে শুধুমাত্র তালাকের অর্থ বিদ্যমান রয়েছে।গালিগালাজ বা (স্ত্রীর তালাকের আবেদন) ফিরিয়ে দেয়ার অর্থ বিদ্যমান না থাকে,তাহলে সেই সমস্ত শব্দাবলীর বেলায় স্বামীর অস্বীকার-কে সত্যায়ন করা হবে না।বরং তালাক পতিত হবে।যেমন- তুমি ইদ্দত গণনা করো,তুমি পছন্দ করো,তোমার বিষয় তোমার হাতে, ইত্যাদি।সুতরাং এমন শব্দাবলীর বেলায় স্বামীর অস্বীকারকে সত্যায়ন করা যাবে না,বরং তালাক পতিত হবে।(হেদায়া) ইমাম আবু ইউসুফ রাহ পূর্ববর্তী পাঁচের সাথে আরো দুইটি শব্দ সংযোগ করেন,তখন সর্বমোট ছয়টি শব্দ হয়।সেই দুইটি হল,আমি তোমার সাথে খোলা করলাম,তুমি তোমার পরিবারবর্গের সাথে মিলিত হয়ে যাও।(গায়াতুস-সুরুজী) (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৫)



'গার্জিয়ানকে ডাকো, তোর আর সাথে সংসার করবো না'

এরকম কথাবার্তা কেনায়া তালাকের অন্তর্ভুক্ত। সুতরা এমন কথা স্বামী তালাকের নিয়তে বললে তালাকে বায়েন বায়েন পতিত হবে।এক তালাকের নিয়ত থাকলে এক তালাক,আর তিন তালাকের নিয়ত থাকলে তিন তালাক পতিত হবে।আর ভয়প্রদর্শনের নিয়তে বললে অবশ্যই তালাক পতিত হবে না। (কিতাবুন-নাওয়াযিল-৯/৪৫১)


সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!

রাগ শয়তানের প্ররোচনা থেকে আসে,সুতরাং রাগ থেকে আমাদের সবাইকে বেঁচে থাকতে হবে।অযথা কেউ তালাকের নিয়তে বললে,তালাক তো পতিত হয়েই যাবে।তবে স্বামী গোনাহগার হবে।হ্যা বিনা প্রয়োজনে যদি এমন কথা দ্বারা স্ত্রীকে কেউ ভয়প্রদর্শন করে, তাহলে এটা স্বামীর জন্য উচিৎ হবে।এমনকি ক্ষেত্রভেদে গোনাহ হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (25 points)
হ্যা বিনা প্রয়োজনে যদি এমন কথা দ্বারা স্ত্রীকে কেউ ভয়প্রদর্শন করে, তাহলে এটা স্বামীর জন্য উচিৎ হবে?? নাকি উচিৎ হবে না??
by (597,330 points)
কি রকম কথা একটু পরিস্কার করে উল্লেখ করবেন।
by
সালাম মুহতারাম।হিদায়া তে আছে ইমাম কুদুরী বলছেন দিয়ানাতানে নিয়াত ছাড়া তালাক হবে না তালাকের মজলিসে কেনায়া শবদ দিয়ে।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
আপনার what's app a হিদায়ার ছবি পাঠাচ্ছি
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
by (597,330 points)
জ্বী, ইমাম কুদুরি বলেছেন। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...