আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
87 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (2 points)
السلام عليكم ورحمه الله وبركاته


(শুরুতেই বলে নিচ্ছি: বিষয়টা যথেষ্ট ঝামেলার তাই ভেঙে লিখার কারণে বড় হয়ে গেছে, আফওয়ান।)


শারীয়াহ অনুযায়ী— একজন অবিবাহিত মানুষ একবার যিনা করলে তার শাস্তি '১০০ বেত্রাঘাত'।

এবং, একজন বিবাহিত মানুষ একবার যিনা করলে তার শাস্তি 'রজম'।


বর্তমান আধুনিক প্রযুক্তির যুগে এমন এক / একাধিক প্রযুক্তি-পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়েছে, যার মাধ্যমে শক্তিশালী রেডিয়েশনের সাহায্যে + আরও কিছু কাজ করে মানুষের মস্তিষ্ককে অথবা তার দেহকে নিয়ন্ত্রণ করে মানুষকে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে কন্ট্রোল করা সম্ভব। আমি বেশি কিছু না বলে যিনার প্রেক্ষাপটেই একটা উদাহরণ দিয়ে ভেঙে বলি ইন শা আল্লহ।


১৯-২১ বছর বয়সী একজন মানুষ। শারীয়াহ মোতাবেক সে এখন প্রাপ্তবয়ষ্ক + বিবাহিত। সাথে সন্তানেরও জনক/জননী।

এই মানুষটার মস্তিস্ককে অথবা তার দেহকে উপরোক্ত প্রযুক্তির সাহায্যে কন্ট্রোল করে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক তাকে দিয়ে যিনা করানো হয়েছে। সে ছিল পুরোপুরিভাবে এটার বিরুদ্ধে। কিন্তু তার পক্ষে কিছু করা / প্রতিরোধ করা সম্ভব ছিল না। সে না চাইলেও তাকে এটা করতে বাধ্য করা হয়েছে / তাকে দিয়ে করানো হয়েছে।


এ ক্ষেত্রে এই পরিস্থিতিটা দুইরকম হতে পারে। এক: সে সজ্ঞানে ছিল, সবকিছু বুঝতে পারছিল, কিন্তু অদৃশ্যভাবে তার হাত পা বাঁধা থাকায় সে কিছু করতে পারেনি। এবং দুই: সে সজ্ঞানে ছিল না। তার মনকে অবচেতন করা হয়েছে এবং দেহকে ইচ্ছেমতো কন্ট্রোল করা হয়েছে। (প্রযুক্তি সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা রেখেই কথাগুলো বলা। তারপরও ভুল কিছু বললে রব্বুল ইজ্জত ﷻ আমায় মাফ করুন।)


এখন আমার প্রশ্ন— এই মানু্ষটার ক্ষেত্রে শারীয়াহ'র বিধান কী হবে? যেহেতু নিজের ওপর তার কোনো রকম নিয়ন্ত্রণ ছিল না, তাকে দিয়ে সম্পূর্ণ তার অনিচ্ছায় / অবচেতন ভাবে তাকে এ কাজে বাধ্য করা হয়েছে। তার ওপরও কী 'রজম' এর বিধান আরোপিত হবে? অথবা তার কি শাস্তি হবে? হলে কী রকম?


এবং এই প্রযুক্তি যদি প্রাপ্তবয়স্ক + অবিবাহিত কারো উপর প্রয়োগ করে তাকে দিয়ে যিনা করানো হয়, তাহলে কী তার উপরও '১০০ বেত্রাঘাত' এর বিধান আরোপিত হবে নাকি না?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/84010/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 

بَاب إِذَا اسْتُكْرِهَتْ الْمَرْأَةُ عَلَى الزِّنَا فَلاَ حَدَّ عَلَيْهَا فِي قَوْلِهِ تَعَالَى {وَمَنْ يُكْرِهْهُنَّ فَإِنَّ اللهَ مِنْ بَعْدِ إِكْرَاهِهِنَّ غَفُورٌ رَحِيمٌ} 

যখন কোন মহিলাকে ব্যভিচারে বাধ্য করা হয় তখন তার উপর কোন ‘হদ’ আসে না। কেননা, আল্লাহ্ বলেনঃ তবে কেউ যদি তাদেরকে বাধ্য করে সে ক্ষেত্রে জবরদস্তির পর আল্লাহ্ তো তাদের প্রতি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। (সূরাহ আন্-নূর ২৪/৩৩)

وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي نَافِعٌ أَنَّ صَفِيَّةَ بِنْتَ أَبِي عُبَيْدٍ أَخْبَرَتْهُ أَنَّ عَبْدًا مِنْ رَقِيقِ الإِمَارَةِ وَقَعَ عَلَى وَلِيدَةٍ مِنْ الْخُمُسِ فَاسْتَكْرَهَهَا حَتَّى اقْتَضَّهَا فَجَلَدَهُ عُمَرُ الْحَدَّ وَنَفَاهُ وَلَمْ يَجْلِدْ الْوَلِيدَةَ مِنْ أَجْلِ أَنَّهُ اسْتَكْرَهَهَا قَالَ الزُّهْرِيُّ فِي الأَمَةِ الْبِكْرِ يَفْتَرِعُهَا الْحُرُّ يُقِيمُ ذَلِكَ الْحَكَمُ مِنْ الأَمَةِ الْعَذْرَاءِ بِقَدْرِ قِيمَتِهَا وَيُجْلَدُ وَلَيْسَ فِي الأَمَةِ الثَّيِّبِ فِي قَضَاءِ الأَئِمَّةِ غُرْمٌ وَلَكِنْ عَلَيْهِ الْحَدُّ

লায়স (রহ.) ... নাফি‘ (রহ.)-এর সূত্রে বর্ণনা করেন যে, সফীয়্যাহ বিন্ত আবূ ‘উবায়দ তাকে সংবাদ দিয়েছেন যে, সরকারী মালিকানাধীন এক গোলাম গনীমতের পঞ্চমাংশে পাওয়া এক দাসীর সঙ্গে জবরদস্তি করে যিনা করে। তাতে তার কুমারীত্ব মুছে যায়। ‘উমার (রাঃ) উক্ত গোলামকে কশাঘাত করলেন ও নির্বাসন দিলেন। কিন্তু দাসীটিকে সে বাধ্য করেছিল বলে কশাঘাত করলেন না। যুহরী (রহ.) কুমারী দাসীর ব্যাপারে বলেন, যার কুমারীত্ব কোন আযাদ ব্যক্তি ছিন্ন করে ফেলল, বিচারক ঐ কুমারী দাসীর মূল্য অনুপাতে তার জন্য ঐ আযাদ ব্যক্তির নিকট হতে কুমারীত্ব মুছে ফেলার দিয়াত গ্রহণ করবেন এবং ওকে কশাঘাত করবেন। আর বিবাহিতা দাসীর ক্ষেত্রে ইমামদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোন জরিমানা নেই। কিন্তু তার উপর ‘হদ’ জারি হবে।
(বুখারী ৬৪৮০)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি আসলেই বাধা দেয়ার মতো তার হাত পা কাজ না করে,এবং বাধ্য হয়ে যেনায় পতিত হয়,নিজের ওপর বিন্দুমাত্র নিয়ন্ত্রণ না থাকে,বেহুশ হয়ে যায়,তখন সে কি করেছে,তাহা পরবর্তীতে আর বলতে না পারে,সেক্ষেত্রে তার উপর যেনার শাস্তি আরোপিত হবেনা।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: رُفِعَ الْقَلَمُ عَنْ ثَلَاثَةٍ: عَنِ النَّائِمِ حَتَّى يَسْتَيْقِظَ وَعَنِ الصَّبِيِّ حَتَّى يَبْلُغَ وَعَنِ الْمَعْتُوهِ حَتَّى يعقل

‘আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিন ব্যক্তি (কিয়ামত দিবসে) দায়-দায়িত্বমুক্ত। ঘুমন্ত ব্যক্তি জেগে না ওঠা পর্যন্ত, অপ্রাপ্তবয়স্ক বালেগ না হওয়া পর্যন্ত এবং নির্বোধ ব্যক্তি (বুদ্ধি-বিবেচনার) জ্ঞান ফিরে না আসা পর্যন্ত।
(সহীহ : তিরমিযী ১৪২৩, আবূ দাঊদ ৪৪০৩।)

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا, عَنْ النَّبِيِّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «رُفِعَ الْقَلَمُ عَنْ ثَلَاثَةٍ: عَنِ النَّائِمِ حَتَّى يَسْتَيْقِظَ, وَعَنِ الصَّغِيرِ حَتَّى يَكْبُرَ, وَعَنِ الْمَجْنُونِ حَتَّى يَعْقِلَ, أَوْ يَفِيقَ».

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- তিন ব্যক্তি থেকে কলম উঠিয়ে রাখা হয়েছেঃ ঘুমন্ত ব্যক্তি যতক্ষণ না সে জাগ্রত হয়, নাবালেগ, যতক্ষণ না সে বালেগ হয় এবং পাগল, যতক্ষণ না সে জ্ঞান ফিরে পায় বা সুস্থ হয়।

(আবূ দাউদ ৪৩৯৮, নাসায়ী ৩৪৩২, ইবনু মাজাহ ২০৪১, আহমাদ ২৪১৭৩, ২৪১৮২, দারেমী ২২৯৬।)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...