আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
92 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (3 points)
আমি স্বপ্নে দেখলাম আমার থেকে একটা লোক (সম্ভবত আমার ছোট বয়সে) এসে আমার থেকে চেয়ে কিছু একটা নিয়ে যাচ্ছে এমন অবস্থা, তো এক পর্যায়ে আমিও তার সাথে যাচ্ছি, কোনো কাজ এর জন্য। , এবং অচেনা রাস্তা একটার পর আরেকটা গাড়ি বদলাতে গিয়ে ই হঠাৎ লোক টা কে হারিয়ে ফেলি। এবং আমিও অচেনা রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে একটা বিল্ডিং এর সামনে এসে পড়ি এবং আম্মা আমাকে বলে এটা নাকি আমাদের ই বাসা। বিল্ডিং এর চারপাশ আমি ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম, তারপর দেখি ওখানে আমাদের বাকি চাচা জেঠা রাও নিজের মতো রুম নিয়ে আছে। এমন সময় কিছু বাচ্চা বা ১৬/১৭ বছর এর মেয়ে আসে কয়েকজন,ওরা দেখতে খুব ই সুন্দর ছিলো, লাল চুল ওয়ালা। । ওরা পরিচয় দেয় ওরা নাকি আমার আব্বার পুরোনো আত্মীয়, দেখা করতে আসছে। এর পর আমি এক পর্যায়ে নিচে নামতে নামতে জানালা দিয়ে দেখি রাতের আকাশ এ সূর্য উদয় হয়েছে এবং আমার এক জেঠা কে দেখি ওজু করতে।
(এরকম সূর্য এর আগে ও দেখেছিলাম তখন সূর্য টা সম্পুর্ন উজ্জ্বল ছিলো তবে তাপ কম ছিলো মানে শীতকালের সূর্যের মতো।)

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي عُمَرَ الْمَكِّيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ، عَنْ أَيُّوبَ السَّخْتِيَانِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا اقْتَرَبَ الزَّمَانُ لَمْ تَكَدْ رُؤْيَا الْمُسْلِمِ تَكْذِبُ وَأَصْدَقُكُمْ رُؤْيَا أَصْدَقُكُمْ حَدِيثًا وَرُؤْيَا الْمُسْلِمِ جُزْءٌ مِنْ خَمْسٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ وَالرُّؤْيَا ثَلاَثَةٌ فَرُؤْيَا الصَّالِحَةِ بُشْرَى مِنَ اللَّهِ وَرُؤْيَا تَحْزِينٌ مِنَ الشَّيْطَانِ وَرُؤْيَا مِمَّا يُحَدِّثُ الْمَرْءُ نَفْسَهُ فَإِنْ رَأَى أَحَدُكُمْ مَا يَكْرَهُ فَلْيَقُمْ فَلْيُصَلِّ وَلاَ يُحَدِّثْ بِهَا النَّاسَ "
মুহাম্মাদ ইবনু আবূ উমার আল-মাক্কী (রহঃ) ..... আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন যুগ ও সময় (কিয়ামাতের) সন্নিকটে হয়ে আসবে তখন প্রায়শ (খাঁটি) মুসলিমের স্বপ্ন মিথ্যা ও ভ্রান্ত হবে না। তোমাদের (মাঝে) অধিক সত্যভাষী লোক সর্বাধিক সত্য (ও বাস্তব) স্বপ্নদ্রষ্টা হবে। আর মুসলিমের স্বপ্ন নুবুওয়াতের পয়তাল্লিশ ভাগের এক ভাগ। আর স্বপ্ন তিন (প্রকার)- ভাল স্বপ্ন আল্লাহর তরফ হতে সুসংবাদ (বাহক)। আর (এক ধরনের) স্বপ্ন শাইতানের পক্ষ হতে দুর্ভাবনা তৈরি করে। আর (এক ধরনের) স্বপ্ন যা মানুষ তার মনের সাথে কথা বলে (এবং ভাবনা-চিন্তা করে) তা থেকে (উদ্ভূত)।

অতএব তোমাদের কেউ যদি এমন কিছু (স্বপ্ন) দর্শন করে- যা সে পছন্দ করে না, তাহলে সে যেন (ঘুম থেকে) উঠে দাঁড়ায় এবং সলাত (সালাত/নামাজ/নামায) আদায় করে আর মানুষের নিকট সে (স্বপ্নের) কথা গোপন রাখে।
(মুসলিম ৫৭৯৮, (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৭০৮, ইসলামিক সেন্টার ৫৭৪০)

ইসলামী দৃষ্টিতে স্বপ্ন তিন প্রকার। 
,
১. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাহকে দেখানো হয় যা কল্যানকর হয়।

২. শয়তানের পক্ষ হতে দেখানো হয় যাতে মানুষ খারাপ, মন্দ ভয়ংকর কিছু দেখে থাকে।
তবে শয়তান স্বপ্ন দেখানোর দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারেনা।
,
ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই। শয়তান মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্যই এমন সব আজব আজব জিনিস দেখায়। এমনটা দেখলে ঘুম থেকে জেগে বাম দিকে থুথু ফেলে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়। 

৩. মানুষের কল্পনা। অর্থাৎ মানুষ যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা দেখতে পায়। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الرُّؤْيَا الْحَسَنَةُ مِنَ الرَّجُلِ الصَّالِحِ جُزْءٌ مِنْ سِتَّةٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ ".

আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নেককার লোকের ভাল স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ।
(বুখারী শরীফ ৬৫১২)

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى ـ هُوَ ابْنُ سَعِيدٍ ـ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الرُّؤْيَا مِنَ اللَّهِ، وَالْحُلْمُ مِنَ الشَّيْطَانِ ".

আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) ... আবূ কাতাদা (রাঃ) সূত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে আর অশুভ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে।
(৬৫১৩)

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، حَدَّثَنِي ابْنُ الْهَادِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خَبَّابٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ رُؤْيَا يُحِبُّهَا فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ اللَّهِ، فَلْيَحْمَدِ اللَّهَ عَلَيْهَا، وَلْيُحَدِّثْ بِهَا، وَإِذَا رَأَى غَيْرَ ذَلِكَ مِمَّا يَكْرَهُ، فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَلْيَسْتَعِذْ مِنْ شَرِّهَا، وَلاَ يَذْكُرْهَا لأَحَدٍ، فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّهُ ".

আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, যখন তোমাদের কেউ এমন স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে, তাহলে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর উপর আল্লাহর প্রশংসা করে এবং অন্যের কাছে তা বর্ণনা করে। আর যদি এর বিপরীত অপছন্দনীয় কিছু দেখে, তাহলে তা শয়তানের পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর অনিষ্টতা থেকে আল্লাহর আশ্রয় চায়। আর কারো কাছে যেন তা বর্ণনা না করে। তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি সাধন করবে না।
(বুখারী শরীফ ৬৫১৪)

আবু সা’ঈদ্ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:

إِذَا رَأَى أَحَدُكُـمْ الرُّؤْيَا يُحِبُّهَا ، فَإِنَّهَا مِنَ اللهِ ، فَلْيَحْمَدِ اللهَ عَلَيْهَا ، وَلْيُحَدِّثْ بِهَا ، وَإِذَا رَأَى غَيْرَ ذَلِكَ مِمَّا يَكْـرَهُ ، فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ الشَّيْطَانِ ، فَلْيَسْتَعِذْ مِنْ شَرِّهَا، وَلاَ يَذْكُرْهَا لِأَحَدٍ ، فَإِنَّهَا لَنْ تَضُرَّهُ

‘‘তোমাদের কেউ কোন ভালো স্বপ্ন দেখলে তা অবশ্যই আল্লাহ্ তা’আলার পক্ষ থেকে। অতএব সে যেন এ ব্যাপারে আল্লাহ্ তা’আলার প্রশংসা করে এবং তা কাউকে বলে। আর যদি সে এর বিপরীত তথা খারাপ স্বপ্ন দেখে তা হলে তা অবশ্যই শয়তানের পক্ষ থেকে। অতএব সে যেন উহার অনিষ্ট থেকে আল্লাহ্ তা’আলার নিকট আশ্রয় কামনা করে এবং তা কাউকে না বলে। কারণ, এ জাতীয় স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না’’।
(বুখারী, হাদীস ৬৯৮৫, ৭০৪৫)

ভালো স্বপ্ন দেখলে তা শুধুমাত্র প্রিয়জনকেই বলবে এবং খারাপ স্বপ্ন দেখলে শয়তান ও তার অনিষ্ট থেকে আল্লাহ্ তা’আলার নিকট আশ্রয় চাবে এবং তিন বার থুতু ফেলবে। উপরন্তু তা কাউকে বলবে না।

আবু ক্বাতাদাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ আমি কখনো কখনো খারাপ স্বপ্ন দেখে রোগাক্রান্ত হয়ে পড়তাম। অতঃপর আমি রাসূল (সা.) কে বলতে শুনেছি তিনি বলেন:

الرُّؤْيَا الْـحَسَنَةُ مِنَ اللهِ ، فَإِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ مَا يُحِبُّ فَلاَ يُحَدِّثْ بِهِ إِلاَّ مَـنْ يُحِبُّ ، وَإِذَا رَأَى مَا يَكْرَهُ فَلْيَتَعَوَّذْ بِاللهِ مِنْ شَرِّهَا وَمِنْ شَـرِّ الشَّيْطَانِ ، وَلْيَتْفِلْ ثَلاَثًا ، وَلاَ يُحَدِّثْ بِهَا أَحَدًا ، فَإِنَّهَا لَنْ تَضُرَّهُ

‘‘ভালো স্বপ্ন আল্লাহ্ তা’আলার পক্ষ থেকে। সুতরাং তোমাদের কেউ ভালো স্বপ্ন দেখলে সে যেন তা শুধুমাত্র তার প্রিয়জনকেই বলে। আর যদি সে খারাপ স্বপ্ন দেখে তা হলে সে যেন তার ও শয়তানের অনিষ্ট থেকে আল্লাহ্ তা’আলার নিকট আশ্রয় কামনা করে এবং তিনবার থুথু ফেলে। উপরন্তু তা কাউকে না বলে। কারণ, এ জাতীয় স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না’’।
(বুখারী, হাদীস ৭০৪৪)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!
পারিবারিক বা সমাজের কোনো বিষয়ের নেতৃত্ব আপনার মিলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 
সর্বপরি স্বপ্নটি ভালো,আলহামদুলিল্লাহ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...