আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
130 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (33 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ
হুজুর আমার স্বামীর সাথে গতকাল আমার ঝগড়া হয়েছিলো খুব। আমি যখন  কান্না  করছিলাম  সে আমাকে থামানোর জন্য  ,  ১ সংখ্যা  উচ্চারণ  করেন। আমি ভয় পেয়ে গেলে সে আমাকে বলে তুমি না থামলে এখন ওই শব্দ উচ্চারণ করবো (তালাক) শব্দটি। পরে আমি থেমে গেলে সে আর কিছু বলেনি৷ তখন পরিস্থিতি ঠান্ডা হলে আমি তাকে জিজ্ঞেস করি, তুমি কেন ১ সংখ্যা উচ্চারণ করছো তুমি কি ওটা (তালাক)  বুঝানোর জন্য  বলছো?  তখন সে বললো, হ্যা আমি ওটাই বুঝাতে চাইছি। কিন্তু থেমে গেছো তাই আর তালাক শব্দ উচ্চারণ করিনি। পরে আমি যখন বার বার জিজ্ঞেস করি, সে বলে আমি ১ দিয়ে কি তালাক শব্দ উচ্চারণ করেছি??  আমি তোমাকে ভয় লাগানোর জন্য ১ বলেছি।  আমি যখন তখন বললাম আল্লাহ!! আমাদের  ডিভোর্স হয় গেছে, তখন সে রাগ করে বললো হলে হয়ছে যাও। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে ,
১/ স্বামীকে জিজ্ঞেস করার সময় যে বললে তুমি ১ সংখ্যা উচ্চারণ করে কি বুঝাতে চাইছো? তুমি কি ওটা
(তালাক)  বুঝাইছো? সে যে উত্তরে বললো, হ্যা আমি ওটাই বুঝাতে চাইছি  কিন্তু তুমি থেমে যাওয়াতে  আর বলিনি -এতে কি আমার তালাক হয়ে গেছে??
২/ আমাকে আমার স্বামী বললো আমি তোমাকে বললে ও ১ তালাক  বললেও ওটা ঠান্ডা করার জন্য বলতাম ! কিন্তু আমি তো তালাক শব্দ উচ্চারণ করিনাই। শুধু সংখ্যা বলে তোমার কান্না থামানোর জন্য। এই যে বললে আমি বললেও তোমাকে ১ তালাক বলতাম। এটায় কি সমস্যা হবে??
৩/ আমার স্বামী আমাকে ২ তালাক দিয়ে দিয়েছে ১ তালাক ১ তালাক বলে ২ সময়ে গতকাল রাতে সে আমাকে বললো তোমাকে তো এর আগে ও আমি ১ তালাক ২ তালাক বলছি। কিন্তু সে এভাবে কখনো  বলেনাই। আমাকে এভাবে বলাতে কি তালাক হয়ে যাবে?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ سَمِعَ ابْنَ شِهَابٍ يَقُولُ فِي الرَّجُلِ يَقُولُ لِامْرَأَتِهِ بَرِئْتِ مِنِّي وَبَرِئْتُ مِنْكِ إِنَّهَا ثَلَاثُ تَطْلِيقَاتٍ بِمَنْزِلَةِ الْبَتَّةِ قَالَ مَالِك فِي الرَّجُلِ يَقُولُ لِامْرَأَتِهِ أَنْتِ خَلِيَّةٌ أَوْ بَرِيَّةٌ أَوْ بَائِنَةٌ إِنَّهَا ثَلَاثُ تَطْلِيقَاتٍ لِلْمَرْأَةِ الَّتِي قَدْ دَخَلَ بِهَا وَيُدَيَّنُ فِي الَّتِي لَمْ يَدْخُلْ بِهَا أَوَاحِدَةً أَرَادَ أَمْ ثَلَاثًا فَإِنْ قَالَ وَاحِدَةً أُحْلِفَ عَلَى ذَلِكَ وَكَانَ خَاطِبًا مِنْ الْخُطَّابِ لِأَنَّهُ لَا يُخْلِي الْمَرْأَةَ الَّتِي قَدْ دَخَلَ بِهَا زَوْجُهَا وَلَا يُبِينُهَا وَلَا يُبْرِيهَا إِلَّا ثَلَاثُ تَطْلِيقَاتٍ وَالَّتِي لَمْ يَدْخُلْ بِهَا تُخْلِيهَا وَتُبْرِيهَا وَتُبِينُهَا الْوَاحِدَةُ قَالَ مَالِك وَهَذَا أَحْسَنُ مَا سَمِعْتُ فِي ذَلِكَ

মালিক (রহঃ) বলেনঃ তিনি ইবন শিহাব (রহঃ)-কে বলিতে শুনিয়াছেন, যে ব্যক্তি তাহার স্ত্রীকে বলিলঃ “আমার তোমা হইতে দায়িত্বমুক্ত হইয়াছি। তুমিও আমা হইতে দায়িত্বমুক্ত।” ইহা দ্বারা তালাকাই আল-বাত্তা-এর মতো তিন তালাক প্রযোজ্য হইবে।

যে ব্যক্তি নিজের স্ত্রীকে বলিলঃ (أَنْتِ خَلِيَّةٌ أَوْ بَرِيَّةٌ) “তুমি দায়মুক্ত” (أَنْتِ بَائِنَةٌ) “তুমি আমা হইতে পৃথক।” মালিক (রহঃ) বলেনঃ সে স্ত্রী যাহার সঙ্গে সহবাস করা হইয়াছে এইরূপ হইলে তবে তাহার স্বামীর উপরিউক্ত বাক্যগুলির দ্বারা তাহার উপর তিন তালাক বর্তাইবে। আর যদি সেই স্ত্রী এমন হয় যাহার সহিত সহবাস করা হয়নি, তবে ধর্মত স্বামীকে বিশ্বাস করা হইবে এবং তাহার নিকট জিজ্ঞাসা করা হইবে-সে উপরিউক্ত বাক্যগুলি দ্বারা এক তালাক উদ্দেশ্য করিয়াছে, না তিন তালাক। যদি সে এক তালাক উদ্দেশ্য করিয়াছে বলিয়া প্রকাশ করে তাহা হইলে এই বিষয়ে সেই ব্যক্তিকে হলফ দেওয়া হইবে। (যেহেতু স্বামীর উক্তির দ্বারা স্ত্রীর প্রতি এক তালাক বায়েন প্রযোজ্য হইয়াছে, তাই পুনর্বিবাহ ছাড়া স্বামী সেই স্ত্রীকে গ্রহণ করিতে পারবে না) তাই সে বিবাহের প্রস্তাবকারী হিসাবে অন্য লোকদের মতো একজন বলিয়া পণ্য হইবে। ইহার কারণ এই যে, যে স্ত্রীর সহিত সঙ্গম করা হইয়াছে সেই স্ত্রী তিন তালাক ছাড়া দায়িত্বমুক্ত বা স্বামী হইতে পৃথক হইবে না। আর যাহার সহিত সঙ্গম হয় নাই সেই স্ত্রী এক তালাক দ্বারা দায়িত্বমুক্ত ও পৃথক হইয়া যায়।

মালিক (রহঃ) বলিয়াছেনঃ এ বিষয়ে যাহা আমি শুনিয়াছি তন্মধ্যে ইহাই আমার নিকট উত্তম।
(মুয়াত্তা মালিক ১১৬৫)

আরো জানুনঃ- 

ফাতাওয়ার কিতাব সমূহে আছেঃ-

فتاوى قاضيخان علی ھامش الھندیة"(1/ 464):

"رجل قال لامرأته: ترايكي أو قال: تراسه، قال الصدر الشهيد رحمه ﷲ تعالى :طلقت ثلاثاً ولو قال: تويكي أو قال :توسه، قال أبو القاسم رحمهﷲتعالى: لا يقع الطلاق ،قال مولانا رضي ﷲ تعالى عنه: وينبغي أن يكون الجواب على التفصيل :إن كان ذلك في حال مذكرة الطلاق أو في حالة الغضب يقع الطلاق وإن لم يكن لا يقع إلا بالنیة كما لو قال بالعربية: أنت واحدة".
সারমর্মঃ-
কোনো স্বামী তার স্ত্রীকে বলেছে, তোমাকে এক অথবা বলেছে তোমাকে তিন। তাহলে যদি তালাকের মজলিসে হয় অথবা রাগের হালতে হয়,তাহলে তালাক পতিত হয়ে যাবে।
অন্যথ্যায় নিয়ত ছাড়া তালাক হবেনা।
 
"فتاوى قاضيخان علی ھامش الھندیة" (1/ 460):

"رجل قال لامرأته: تراسه ،ذكر في النوازل أنها لا تطلق وقال الصدر الشهيد رحمهﷲتعالى :عندي أنها تطلق،قال لامرأته: أنت واحدة ونوى به الطلاق يقع واحدة،أعرب الواحدة أو لم يعرب ولو قال لامرأته :توبسه في حال مذاكرة الطلاق أو الغضب  ،طلقت ثلثا".
সারমর্মঃ-
কোনো স্বামী যদি স্ত্রীকে বলে, তুমি এক।
এবং এর দ্বারা তালাকের নিয়ত করে,তাহলে এক তালাক পতিত হয়ে যাবে।

"رد المحتار" (3/ 275):
"ولو قال لامرأته: أنت بثلاث، قال ابن الفضل: إذا نوى يقع ،أنه يقع هنا إذا نوى. وفيها أيضا إذا قال: طالق فقيل: من عنيت ؟فقال: امرأتي طلقت ولو قال: أنت مني ثلاثا طلقت إن نوى أو كان في مذاكرة الطلاق، وإلا قالوا: يخشى أن لا يصدق اهـ وكذا نقل الرحمتي عبارة الخانية الأولى ثم قال: والظاهر أن قوله "هكذا "مثل قوله بثلاث. اهـ.
সারমর্মঃ-
কোনো স্বামী যদি স্ত্রীকে বলে, তুমি তিন।
এবং এর দ্বারা তালাকের নিয়ত করে,তাহলে
তিন তালাক পতিত হয়ে যাবে।

"رد المحتار" (3/ 303):
"وذكر في الفتح هناك: لو قال أنت بثلاث وقعت ثلاث إن نوى؛ لأنه محتمل لفظه، ولو قال:لم أنو، لا يصدق إذا كان في حال مذاكرة الطلاق؛ لأنه لا يحتمل الرد وإلا صدق".
সারমর্মঃ-
কোনো স্বামী যদি স্ত্রীকে বলে, তুমি তিন।
এবং এর দ্বারা তালাকের নিয়ত করে,তাহলে
তিন তালাক পতিত হয়ে যাবে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(১.২)
এক্ষেত্রে আপনার উপর এক তালাক পতিত হয়েছে।

(০৩)
আপনার স্বামী যদি সত্যিই পূর্বে ১ তালাক, দুই তালাক বলে থাকে,তথা তার এই স্বীকারোক্তি যদি সত্য হয়,সেক্ষেত্রে এর দরুন ২ তালাক পতিত হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...