আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
78 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (12 points)
السلام عليكم ورحمة الله وبركاته

১)এক বোনের প্রশ্ন, ব্যক্তিগতভাবে আমার সাধ্যের ভেতর যতোটুকু পারি ইন্ডিয়ার পণ্য করার চেষ্টা করছি।আমার ভাইয়া কদিন পর ইন্ডিয়া থেকে আসবে ইনশাআল্লাহ। আসার সময় কিছু আনবে কিনা জিজ্ঞেস করলে আমি বলি ইন্ডিয়ার প্রডাক্ট আমি ব্যবহার করব না।ভাইয়া সেটা শুনে বলল সে ইন্ডিয়ায় মুসলিম ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কিনে আনবে।যেহেতু সেখানে মুসলিমরা বেশি নির্যাতিত তাই এই অবস্থায় তার মনে হয়েছে তার জন্য এখন ইন্ডিয়ার পণ্য বয়কট না করে বরং দেশে আসার সময় ইন্ডিয়ার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বেশি করে কিনে নিয়ে আসবে।এক্ষেত্রে কোনটা অপেক্ষাকৃত ভালো?পণ্য না কেনা নাকি মুসলিমদের কাছ থেকে কেনা?

২)নবীজি ﷺ এর আযাদকৃত গোলাম যায়েদ বিন হারিসা রাযি. ছাড়া আর কেউ ছিলেন?
৩) আমার মেয়ে কবিতা শুনতে ভালোবাসে। আমার দাদি কবিতা বলে আরও বাড়ির অন্যান্য সদস্যরাও কবিতা বলে শুনলে আমার মেয়ে নাচে, এটা দেখে আমার কষ্ট হয়, গজল কবিতা যায় বাজুক তাতেই সে নাচে, এখন কি করা যায় তবে আমি কোরআন তেলওয়াত করি শুনাই,  কী করবো? মেয়ের ১৬ মাস।

৪)একটা বিষয়ে ইস্তেখরা করেও কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারছি না কি করা উচিত বুঝতে পারছি না ।আমার বিয়ে হয়েছে ৮ বছর চলছে । আড়াই বছরের ১টি মেয়ে আছে । আমার শ্বশুড় বাড়ির কেউ দ্বীনদার না , বেদ্বীন পরিবেশ , ইসলামের জ্ঞান নাই বললেই চলে । আমার স্বামী সাউথ আফরিকা থাকেন । উনার ফরয পরিমান ইলম নেই , মন চাইলে নামাজ পড়ে বেশির ভাগই নামাজ পড়ে না , পর্ণগ্রাফি , হস্তমৌথন , অন্য নারীর প্রতি আকর্ষণ , সিগারেটের নেশা , গান , ছবি , মিথ্যা কথা বলা ইত্যাদি গুনাহের সাথে জড়িত । আমি উনাকে দ্বীন মেনে চলার জন্য দাওয়াহ দিয়েছি , তার দ্বীন পালনের প্রতি তেমন আগ্রহ নেই ।আলহামদুলিল্লাহ আমি ৫ বছর ধরে দ্বীন মেনে চলার চেষ্টা করতেছি । দ্বীন মেনে চলতে গিয়ে প্রতি নিয়ত আমাকে বাধার সম্মুখীন হতে হয় । এমন প্রতিকুল পরিবেশে থাকতে থাকতে আমার মনে হয় আমি দ্বীন থেকে দূরে সরে যাচ্ছি । একদিকে পরিপূর্ণ দ্বীন মেনে না চলতে পেরে প্রায় সময় মানসিক স্ট্রেস এ থাকি । অন্যদিকে যৌথ ফ্যামিলি হওয়ায় সংসার সামলিয়ে শারীরিক স্ট্রেসে থাকি । এভাবে দিন দিন অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি কিছুই ভালো লাগে না । প্রায় সময় মনে হয় এভাবে আমার স্বামীর সাথে সংসার করতে পারবো না । উনার থেকে তালাক নিয়ে নিবো মন মনে হয় । এখন আমার কি করা উচিত অনুগ্রহ করে , এ বিষয়ে আমাকে পরামর্শ দিবেন ইনশাআল্লহ।

1 Answer

0 votes
by (60,240 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/94718/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,

لَا بَأْسَ بِأَنْ يَكُونَ بَيْنَ الْمُسْلِمِ وَالذِّمِّيِّ مُعَامَلَةٌ إذَا كَانَ مِمَّا لَا بُدَّ مِنْهُ

মুসলমান ও অমুসলমানের মধ্যে মু'আমালা তথা ক্রয়-বিক্রয় ও লেনদেন সংগঠিত হওয়াতে কোনো সমস্যা নাই, যদি এছাড়া অন্য কোনো রাস্তা না থাকে। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৩৪৮) এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/94704


ইসলামের দিক-নিদের্শনা হচ্ছে বিবাহের পরে স্বামীর প্রথম কতর্ব্য হলো স্ত্রীর জন্য এমন একটি বাসস্থানের ব্যবস্থা করা যেখানে স্ত্রী মানুষের দৃষ্টি থেকে নিরাপদ থাকবে। কেননা পর্দা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধান। আর এই বিধান পালন করার জন্য স্বামীর কতর্ব্য স্ত্রীকে সাহায্য করা। সেই সাথে অন্যান্য সকল কষ্ট থেকে স্ত্রীর আরামের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে স্ত্রীকে শ্বশুর ও শাশুড়ির সাথেই থাকতে হবে এমন বাধ্যও করা যাবে না। কেননা এমন কোন অধিকার স্বামীর নেই। তবে এই ক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রী উভয়কে সামাজিক অবস্থার উপর বিবেচনা করেও কিছু কাজ করতে হবে।


যদি কোন স্বামী তার স্ত্রীকে স্বামীর পরিবারের সাথে অথবা অন্য আত্মীয়ের সাথে থাকার কথা বলে কিন্তু স্ত্রী কারো সাথে থাকার কথা রাজি না হয় তাহলে স্ত্রীকে আলাদা রাখার ব্যবস্থা করা স্বামীর কতর্ব্য। কেননা স্ত্রীর সকল কিছু রক্ষা করা ও নিরাপদে বসবাস করার দায়িত্ব স্বামীর।


ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে রয়েছে-

تجب السكني لها عليه في بيت خال

মর্থার্থ: স্ত্রীর জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করা স্বামীর উপর আবশ্যক। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াত, ১/৬০৪)

আরো বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/46394/    

আরো জানুন-   https://ifatwa.info/26113/


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!


১. মুসলমান কোম্পানীর তৈরী করা প্রোডাক্টস ক্রয় করা বা ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন।

২. জ্বী হ্যাঁ, ছিলেন।

৩. ধীরে ধীরে কৌশলে এটা বন্ধ করানোর চেষ্টা করবেন। তাকে বিভিন্ন জিনিস দিতে পারেন। সে না নাচলে। হয়তো সে লোভেও নাচ থেকে বিরত থাকতে পারে। এখন সে তো অনেক ছোট আছে। হয়তো একটু বড় হয়ে গেলে ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। তাই আল্লাহর কাছে দুআ করতে থাকুন।


৪. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার স্বামীর সামর্থ্য থাকলে আপনার জন্য আলাদা বাসস্থান ব্যবস্থা করা আপনার স্বামীর উপর আবশ্যক এবং আলাদা বাসস্থানে থাকা আপনার জন্য জরুরী হয়ে পড়েছে। তাই আপনি ও আপনার স্বামী আলাদা বাসস্থানে থাকাতে আপনাদের কোনো গোনাহ হবে না। তবে তবুও তাদের সাথে একটু যোগাযোগ ও ভালো ব্যবহার করবেন এবং তাদের একটু খোজ খবর নিবেন।


বোন, প্রথমত আমাদের পরামর্শ থাকবে যে, আপনি আপনার পরিবারের মুরুব্বী ও তাদের পরিবারের মুরুব্বীদের মাঝে বিষয়টি জানিয়ে সমাধান করার চেষ্টা করতে পারেন এবং আল্লাহ তায়ালার কাছে খুব বেশী বেশী দুআ করতে থাকবেন। বিশেষ করে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে। অন্তরকে পরিবর্তন করে দেওয়ার মালিক তো একমাত্র আল্লাহ তায়ালা।

তারপরও যদি তারা পরিবর্তন না হয় এবং আপনার ওপরে জুলুম, অত্যাচার ও নির্যাতন করতে থাকে তাহলে আপনি আপনার পরিবারের লোকদের সাথে পরামর্শ ক্রমে আবার ইস্তেখারা করে ডিভোর্স বা অন্য কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...