আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
81 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (20 points)
السلام عليكم ورحمة الله وبركاته

এক বোনের প্রশ্ন, তিনি বিবাহ নিয়ে ইস্তিখারা করেছিলেন। কিন্তু যেদিন রাতে এই স্বপ্নটি দেখলেন সেদিন ইস্তেখারা করেননি।

আমার হবু স্বামী যার সাথে বিয়ে হবে, সব ঠিকঠাক। আজকে এই মাত্র-ই আমি স্বপ্ন দেখলাম তাকে কেন্দ্র করে। তিনি তার অতীত প্রেমিকার হঠাৎ আগমনে, কেমন যেন হয়ে উঠেছেন। একদিন তাকে নক দেয়, তিনি তারপর কী করেন তা দেখিনি কিন্তু মাঝ পথে দেখলাম যে ওই মেয়ে আর আমাকে নিয়ে একটা ম্যাসেনজারে গ্রুপ খুলেন। আর আস্তে আস্তে ওই মেয়ের পক্ষপাতীত্ব করা শুরু করেন। আমাকে বিয়ে করার কথা থেকে ওই মেয়েকে বিয়ে করার দিকে কনভার্ট হয়ে যান। বাস্তবে ওই মেয়ের সাথে তার সম্পর্ক ২/৪ মাস ছিল সর্বোচ্চ আর ওনার মতে আমাকে তিনি যতটা চান তার কিছু ই নেই ওখানে, এমনেই ভ্রম ছিল। কিন্তু একবার মানে একদম কথার শুরুতে তিনি এটাও একবার বলেছেন যে শাড়িতে তাকে অনেক সুন্দর লাগতো, ইত্যাদি ইত্যাদি। স্বপ্নে ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ খোলার পর আমি একটা কথাও স্বস্তিতে বলিনি। আমি শুধু অবাক আর মৃত্যু চাচ্ছিলাম কোনো মতে। যাইহোক তিনি ফ্রি দুইজনের সাথে। আমার আর এত কিছু খেয়াল নেই তিনজনের কথা। কিন্তু শেষ দিকে তার এসব আচরণ দেখে আমি সোজা বদদোয়া করলাম, অনেক চিৎকার করে আল্লহকে ডেকে ডেকে সব বললাম। সাথে সাথে ঘুম ভেঙ্গে যায়।

আমি আপনাকে অনুভূতি বুঝাতেই পারিনি। আমার কলিজা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছে। শরীরে জ্বর উঠবে এমন লাগছে। আমি সকালের ৭ টা ১৭/১৮ তেই দেখেছি। এখন ই আপনাদের জানাচ্ছি। সময় নিয়ে বিলম্ব না করে।

ওই বোন বিষয়টা নিয়ে খুবই পেরেশানিতে রয়েছেন আমি উনাকে ইস্তিখারার পরামর্শ দিয়েছি। উনি চাচ্ছেন ওই ভাইকে বিষয়টা অবগত করতে এবং সত্যিটা জানতে। এখন এমনটা ঠিক হবে কিনা? আমি নিষেধ করেছিলাম। এমন স্বপ্নের কী মানে হতে পারে, ওই বোনের এখন করণীয় কী?

1 Answer

0 votes
by (56,910 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/100414/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الرُّؤْيَا الْحَسَنَةُ مِنَ الرَّجُلِ الصَّالِحِ جُزْءٌ مِنْ سِتَّةٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ ".

আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নেককার লোকের ভাল স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ। (বুখারী শরীফ ৬৫১২)


حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى ـ هُوَ ابْنُ سَعِيدٍ ـ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الرُّؤْيَا مِنَ اللَّهِ، وَالْحُلْمُ مِنَ الشَّيْطَانِ ".

আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) ... আবূ কাতাদা (রাঃ) সূত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে আর অশুভ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। (৬৫১৩)


حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، حَدَّثَنِي ابْنُ الْهَادِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خَبَّابٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ رُؤْيَا يُحِبُّهَا فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ اللَّهِ، فَلْيَحْمَدِ اللَّهَ عَلَيْهَا، وَلْيُحَدِّثْ بِهَا، وَإِذَا رَأَى غَيْرَ ذَلِكَ مِمَّا يَكْرَهُ، فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَلْيَسْتَعِذْ مِنْ شَرِّهَا، وَلاَ يَذْكُرْهَا لأَحَدٍ، فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّهُ ".

আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, যখন তোমাদের কেউ এমন স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে, তাহলে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর উপর আল্লাহর প্রশংসা করে এবং অন্যের কাছে তা বর্ণনা করে। আর যদি এর বিপরীত অপছন্দনীয় কিছু দেখে, তাহলে তা শয়তানের পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর অনিষ্টতা থেকে আল্লাহর আশ্রয় চায়। আর কারো কাছে যেন তা বর্ণনা না করে। তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি সাধন করবে না। (বুখারী শরীফ ৬৫১৪)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,


উপরোক্ত হাদীসের আলোকে দুঃস্বপ্ন দেখলে আমাদের যা যা করতে হবেঃ

১) দুঃস্বপ্নের ক্ষতি ও অনিষ্ট থেকে আল্লাহ তাআলার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে। এভাবে সকল প্রকার ক্ষতি থেকে আল্লাহ তাআলার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা উচিত।

২) শয়তানের অনিষ্ট ও কুমন্ত্রণা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে। এবং এর জন্য আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজীম পড়তে হবে। কারণ, খারাপ স্বপ্ন শয়তানের কুপ্রভাবে হয়ে থাকে।

৩) ঘুম ভাঙার পর বাঁ দিকে তিনবার থুথু নিক্ষেপ করতে হবে। এটা করতে হবে শয়তানের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ ও তার চক্রান্তকে অপমান করার জন্য।

৪) যে দিক ফিরে দুঃস্বপ্ন দেখেছে তা পরিবর্তন করে অন্য দিক ফিরে ঘুমাতে হবে। অবস্থাকে বদলে দেয়ার ইঙ্গিত স্বরূপ এটা করতে বলা হয়েছে।

৫) খারাপ স্বপ্ন দেখলে কারো কাছে বলা যাবে না। আর নিজেও এর ব্যাখ্যা করতে চেষ্টা করা থেকে বিরত থাকতে হবে।


হাদিসে এসেছে, নবী করিম সা. এর কাছে এক ব্যক্তি এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি স্বপ্নে দেখেছি, আমার মাথা কেটে ফেলা হয়েছে। এ কথা শুনে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেসে ফেললেন। আর বললেন, ঘুমের মধ্যে শয়তান তোমাদের কারো সাথে যদি দুষ্টুমি করে, তবে তা মানুষের কাছে বলবে না। (মুসলিম শরীফ)


সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি উক্ত স্বপ্ন কাহারো কাছে বলবেননা। আল্লাহর কাছে উক্ত স্বপ্নের অনিষ্টতা থেকে পানাহ চাইবেন। ইবাদতের প্রতি মনোযোগ দিবেন। বিশেষত ৫ ওয়াক্ত নামাজ, নেক আমলের উপর গুরুত্ব দিবেন।


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে এই বিয়েতে অগ্রসর না হওয়াই উত্তম হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (10 points)
السلام عليكم ورحمة الله وبركاته

শায়েখ, যে বোনের প্রশ্ন ছিলো তিনি আরো বেশি ট্রমাটাইজড হয়ে গিয়েছেন।الحمد الله على كل حال তিনি অনুরোধ করেছেন প্রশ্নটি যেন ডিলিট করে দেওয়া হয়। যাতে পরবর্তীতে উনার সামনে না পড়ে। উনি এটার কোন স্মৃতি রাখতে চান না। মেহেরবানী করে প্রশ্নটি ডিলেট করে দিন।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...