বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
https://ifatwa.info/53468/
নং ফাতওয়াতে আমরা বলেছি যে,
শরীয়তের বিধান হলো যদি
মহিলা অত্যাধিক দুর্বল হয়, যার কারণে গর্ভধারণ তার জন্য আশঙ্কাজনক হয়
এবং গর্ভধারণের মেয়াদ চার মাসের কম হয়। তাহলে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক গর্ভপাত
বৈধ হবে। মেয়াদ চার মাসের অধিক হলে কোনোভাবেই বৈধ হবেনা।
খাদ্য, চিকিৎসা,
বাসস্থান ইত্যাদির অভাবের কারণে সংসারকে সচ্ছল করার নিয়তে, দৈহিক সৌন্দর্য বা ফিগার ঠিক রাখার উদ্দেশ্যে , কন্যাসন্তান
জন্ম নেয়ার ভয়ে (যাতে পরবর্তীতে এদের বিয়ে শাদীর ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়),
অধিক সন্তান নেয়াকে লজ্জার বিষয় মনে করে গর্ভপাত বিশেষত অভাবের কারণে
সংসারকে সচ্ছল করার নিয়তে গর্ভপাত করলে আল্লাহর উপর বিশ্বাস ও ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে।
কেননা রিজিকের মালিক আল্লাহ।
আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,
ولا
تقتلوا أولادكم خشية إملاق، نحن نرزقهم وإيّاكم إنّ قتلهم كان خطأ كبيراً.
দারিদ্রতার ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানকে হত্যা কর না। তাদেরকে
এবং তোমাদেরকে আমিই খাদ্য প্রদান করে থাকি।নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ…’’(সূরা
ইসরা, আয়াত-৩১)
অন্যত্র তিনি বলেন, الشَّيْطَانُ
يَعِدُكُمُ الْفَقْرَ “শয়তান তোমাদের অভাবের
ওয়াদা দেয়।” (সূরা আল-বাক্বারা)
আধুনিক যুগে ভ্রুণহত্যা জাহেলি যুগে কন্যাসন্তানকে জীবন্ত সমাধিস্থ
করার নামান্তর। তখন বাবা নিজ মেয়েকে গর্তে পুঁতে ফেলত; আর এখন আধুনিক যন্ত্রপাতি দ্বারা মায়ের পেটেই শিশুকে মেরে ফেলা
হয়। এ দুই হত্যার মধ্যে বাহ্যত কোনো তফাৎ নেই। এজন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) ভ্রুণহত্যাকে
‘গুপ্তহত্যা’ বলে উল্লেখ করেছেন।
এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘স্মরণ কর ওই দিনকে, যেদিন জীবন্ত সমাধিস্থ
নিষ্পাপ
বাচ্চাকে জিজ্ঞেস করা হবে, তোমাকে কোন অপরাধের কারণে হত্যা করা হয়েছে?’ (সূরা তাকয়ির
:৮)।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!
চার মাসের পূর্বে বিশেষ কিছু কারণে শরীয়ত গর্ভপাতকে অনুমোদন
প্রদান করে থাকে।
(ক) বর্তমানে কোলে দুধের একটি শিশু রয়েছে,
অপরদিকে উক্ত মহিলার গর্ভাশয়ে নতুন সন্তানও উৎপাদিত হচ্ছে। গর্ভের দরুন
দুধ একেবারে শুকিয়ে গেছে। অপরদিকে উক্ত সন্তানকে অন্যকোনো উপায়ে লালনপালন করা যাচ্ছেনা।
মায়ের দুধ ব্যতীত অন্যকিছুতে সে মুখই দিচ্ছে না। এমতাবস্থায় চারমাস হয়নি এমন গর্ভকে
গর্ভপাত করা বৈধ রয়েছে।
(খ) কোনো মুসলমান বিজ্ঞ ডাক্তার উক্ত গর্ভবতী
মহিলাকে পরিদর্শন করে বলে যে, গর্ভপাত না করলে মহিলার জান বা
কোনো অঙ্গ বিনাশের আশঙ্কা রয়েছে।
আরো জানুনঃ
https://ifatwa.info/4441/
https://ifatwa.info/446/
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!
শরীয়তের বিধান হলো যদি
মহিলা অত্যাধিক দুর্বল ও অসুস্থ হয়, যার
কারণে গর্ভধারণ তার জন্য আশঙ্কাজনক বা মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয় এবং গর্ভধারণের মেয়াদ
চার মাসের কম হয়। তাহলে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক গর্ভপাত বৈধ হবে। মেয়াদ
চার মাসের অধিক হলে কোনোভাবেই বৈধ হবেনা।
উল্লেখ্য যে, যদি শুধু সামাজিক কারণে হয় তাহলে প্রশ্নোক্ত
ক্ষেত্রে গর্ভপাত করানো জায়েজ হবে না।