আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
67 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (12 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।
একজন বোনের পক্ষ থেকে প্রশ্ন :

তালাকের বিষয়ে আমি জানতে চাচ্ছিলাম। আমার বিয়ের শুরুতে স্বামীর সাথে অনেক ঝামেলা হতো।
প্রসঙ্গে কোথাও আমি বলতাম, "তালাক দিয়ে দাও", "মুক্তি দাও", "ছেড়ে দাও" এসব। তালাকের ব্যাপারে
আগে জানতাম না, এবং এইভাবে বললে যে এটি বড় গুনাহ, সেটাও জানতাম না। পরে যখন জানতে
পারলাম, তখন খুব ভয় পেয়েছি।

আমার স্বামী কবিননামায় লিখিতভাবে আমাকে তালাকের অধিকার দেননি।কারন উনাকে সেই সময় এই ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেন নি কাজি সাহেব।উনার সাইন করার সময় ১৮ নং জায়গা ফাকা ছিলো। কবিননামায় পরে কাজি নিজে থেকে না জিজ্ঞাসা করে ফিলাপ করেছেন কিনা , তা আমার জানা নেই। কিন্তু আমার স্বামী ঝগড়ার সময় আমাকে বলতো, "তোমাকে ছেড়ে দেব", "মুক্তি দেব" এসব কথা। কিন্তু  "মুক্তি দিলাম" এভাবে হয়তো একবার বলেছেন।  মাঝে মাঝে উনি আমাকেও বলতেন, যদি আমার সাথে ভালো না লাগে, তবে আমি যেন তাকে মুক্তি দিয়ে দিই। এজন্য রাগ করে কয়েকবার আমি আমার স্বামীকে বলেছি, "তালাক দিলাম তোমাকে", "ছেড়ে দিলাম তোমাকে"।

একবার ঝগড়ার সময় আমার স্বামী আমাকে বলেছিল, "তুমি যদি ঘর থেকে বের হও, তাহলে আমাদের সম্পর্ক শেষ হয়ে যাবে।" এটা নাকি উনি আমি না যাওয়ার জন্য বলেছেন।তালাক নিয়ত করেন নি।আমি সেদিন ঘর থেকে বের হয়ে গিয়েছিলাম।আমি যদি জানতাম এই লাইন তালাকের পর্যায়ে যেতে পারে।আমিও যেতাম না।
আর বিয়ের শুরুর দিকে উনি সেপারেশন এ থাকবেন বলেছিলেন।বলেছিলেন আজকে থেকে আমরা সেপারেটেড।পরে ঝামেলা মিটমাট হয়ে যায়।আমার স্বামী আমাকে কখনো তালাক দিলাম /দিবো এভাবে বলেন নি।এই বিষয়ে উনার কাছে জানতে চাইলে উনিও তাই বলেছেন। উনি নাকি তালাক দিবেন এরকম কোনোদিন ভাবেন নি। উনি আল্লাহর কসম করে বলেছেন যে উনি কখনো তালাকের নিয়ত করেন নি যদি করতেন তাইলে উনি সরাসরি তালাক ই বলতেন।
জানি আমার অপরাধ হয়েছে।আমাকে দয়া করে সাহায্য করুন। আমার বৈবাহিক সম্পর্ক ঠিক আছে কিনা একটু বলেন।

1 Answer

0 votes
by (583,410 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
রাগের প্রেক্ষাপট 
وفي حالة الغضب يصدق في جميع ذلك لاحتمال الرد والسب إلا فيما يصلح للطلاق ولا يصلح للرد والشتم كقوله اعتدي واختاري وأمرك بيدك فإنه لا يصدق فيها كذا في الهداية...............  وفي الينابيع ألحق أبو يوسف - رحمه الله تعالى - بالخمسة ستة أخرى وهي الأربعة المتقدمة وزاد خالعتك والحقي بأهلك هكذا في غاية السروجي.
রাগের অবস্থায় স্বামী তালাকের নিয়তকে অস্বীকার করলে স্বামীর উক্ত বক্তব্য-কে সত্যায়ন করা হবে।কেননা সেই শব্দ সমূহে গালিগালাজ ও স্ত্রীর তালাকের আবেদন-কে  ফিরিয়ে দেয়ার অর্থ বিদ্যমান রয়েছে।তবে যেই সমস্ত শব্দাবলীতে শুধুমাত্র তালাকের অর্থ বিদ্যমান রয়েছে।গালিগালাজ বা (স্ত্রীর তালাকের আবেদন) ফিরিয়ে দেয়ার অর্থ বিদ্যমান না থাকে,তাহলে সেই সমস্ত শব্দাবলীর বেলায় স্বামীর অস্বীকার-কে সত্যায়ন করা হবে না।বরং তালাক পতিত হবে।যেমন- তুমি ইদ্দত গণনা করো,তুমি পছন্দ করো,তোমার বিষয় তোমার হাতে, ইত্যাদি।সুতরাং এমন শব্দাবলীর বেলায় স্বামীর অস্বীকারকে সত্যায়ন করা যাবে না,বরং তালাক পতিত হবে।(হেদায়া) ইমাম আবু ইউসুফ রাহ পূর্ববর্তী পাঁচের সাথে আরো দুইটি শব্দ সংযোগ করেন,তখন সর্বমোট ছয়টি শব্দ হয়।সেই দুইটি হল,আমি তোমার সাথে খোলা করলাম,তুমি তোমার পরিবারবর্গের সাথে মিলিত হয়ে যাও।(গায়াতুস-সুরুজী) (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৫)

'গার্জিয়ানকে ডাকো, তোর সাথে আর সংসার করবো না'
এরকম কথাবার্তা কেনায়া তালাকের অন্তর্ভুক্ত। সুতরা এমন কথা স্বামী তালাকের নিয়তে বললে তালাকে বায়েন বায়েন পতিত হবে।এক তালাকের নিয়ত থাকলে এক তালাক,আর তিন তালাকের নিয়ত থাকলে তিন তালাক পতিত হবে।আর ভয়প্রদর্শনের নিয়তে বললে অবশ্যই তালাক পতিত হবে না।(কিতাবুন-নাওয়াযিল-৯/৪৫১) এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1049


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন ও পাঠকবর্গ!
ঝগড়ার সময় স্বামীর কথা- 
"তোমাকে ছেড়ে দেব", "মুক্তি দেব" এসব কথা দ্বারা তো তালাক হবে না। কেননা এগুলো ভবিষ্যত বাচক শব্দাবলী । তাছাড়া  "মুক্তি দিলাম" শব্দ দ্বারাও তালাক হবে না, কেননা প্রশ্নেন বিবরণ থেকে বুঝা যাচ্ছে, এই সব কথা বলার সময় স্বামীর তালাকের কোনো নিয়ত ছিলনা। 

"তুমি যদি ঘর থেকে বের হও, তাহলে আমাদের সম্পর্ক শেষ হয়ে যাবে।" এখানেও তালাকের নিয়ত ছাড়া তালাক হবে না।

সুতরাং প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী আপনার স্বামীর সাথে আপনার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়নি। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...