আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
94 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (15 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমি বিবাহিত আলহামদুলিললাহ। বিয়ে হয়েছে ১ বছর ১মাস। তবে আমার স্বামী বিয়ের ৪ দিন পরেই বিদেশে চলে যান। আমাকেও নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা আছে। কয়েক মাস আগের কথায় বলি। আমি অনেকবার স্বপ্ন দেখেছি আমাকে সাপে কামড়াচ্ছে এবং পরবর্তিতে হাজিরার মাধ্যমে জানতে পারি আমাকে এবং আমার স্বামীকে খুব খারাপ কালো জাদু করা হয়েছে। যাই হোক সেই জাদু কাটানো হয়েছে। এরপর এখন এমন অবস্থা যে সব কাজ হয়ে আসে কিন্তু শেষে গিয়ে কোনো না কোনো কারণে আটকে আছে। সেটা উনার দেশে আসা হোক বা আমার উনার কাছে যাওয়া হোক। আবার আমাদের একটা ফ্ল্যাট নেওয়া হইসে সেটার কাজ ও ঠিক মত হচ্ছিলো কিন্তু এখন আবার বন্ধ।
আমি আজকে রাতে ফজরের আগে স্বপ্ন দেখলাম যে, আমি একজনের সাথে বসে আছি। সে একটা খাতা খুলে দেখতেছে যেখানে মানুষের নাম লিখা। বলতেসে এই মানুষটার সব প্রয়োজন আল্লাহ্ পূরণ করসেন। আমার নাম লিখা একটা পেজ আসছে সেখানে খালি ঘর দেখলাম মানে আমার দুআ গুলোর জবাব আল্লাহ্ দেননি। এরপর আমি নিজেই বলে উঠলাম যে আল্লাহ্ যখন ইচ্ছা তার বান্দাদের প্রয়োজন পূরণ করেন। এরপরেই আমার ঘুম ভেংগে গেল।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে আমি কি এখন হাজিরা দেখবো আবার আগের মতন কোনো সমস্যা হয়েছে কিনা জাদু জনিত? আমি এর মধ্যে সাপ সম্পর্কিত কোনো স্বপ্ন দেখিনি আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু আমি এই সমস্যা গুলো নিয়ে খুবই পেরেশানিতে আছে আছি হুজুর।

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

জবাব,

https://ifatwa.info/97240/   নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,

ইসলামী দৃষ্টিতে স্বপ্ন তিন প্রকার,

১. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাহকে দেখানো হয় যা কল্যানকর হয়।

২. শয়তানের পক্ষ হতে দেখানো হয় যাতে মানুষ খারাপ, মন্দ ভয়ংকর কিছু দেখে থাকে। তবে শয়তান স্বপ্ন দেখানোর দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারেনা।

 ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই। শয়তান মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্যই এমন সব আজব আজব জিনিস দেখায়। এমনটা দেখলে ঘুম থেকে জেগে বাম দিকে থুথু ফেলে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়। 

৩. মানুষের কল্পনা। অর্থাৎ মানুষ যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা দেখতে পায়। 

হাদীস শরীফে এসেছে,  

خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ يَقُوْلُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلميَقُوْلُ الرُّؤْيَا مِنْ اللهِ وَالْحُلْمُ مِنْ الشَّيْطَانِ فَإِذَا رَأٰى أَحَدُكُمْ شَيْئًا يَكْرَهُه“فَلْيَنْفِثْ حِينَ يَسْتَيْقِظُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ وَيَتَعَوَّذْ مِنْ شَرِّهَا فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّه“وَقَالَ أَبُو سَلَمَةَ وَإِنْ كُنْتُ لأَرَى الرُّؤْيَا أَثْقَلَ عَلَيَّ مِنَ الْجَبَلِ فَمَا هُوَ إِلاَّ أَنْ سَمِعْتُ هٰذَا الْحَدِيثَ فَمَا أُبَالِيهَا.

আবূ ক্বাতাদাহ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছিঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, আর মন্দ স্বপ্ন হয় শয়তানের তরফ থেকে। সুতরাং তোমাদের কেউ যদি এমন কিছু স্বপ্ন দেখে যা তার কাছে খারাপ লাগে, তা হলে সে যখন ঘুম থেকে জেগে ওঠে তখন সে যেন তিনবার থুথু ফেলে এবং এর ক্ষতি থেকে আশ্রয় চায়। কেননা, তা হলে এটা তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। 

আবূ সালামাহ বলেনঃ আমি যখন এমন স্বপ্ন দেখি যা আমার কাছে পাহাড়ের চেয়ে ভারি মনে হয়, তখন এ হাদীস শোনার ফলে আমি তার কোন পরোয়াই করি না। [বুখারী ৫৭৪৭ মুসলিম পর্ব ৪২/হাঃ ২২৬১, আহমাদ ২২৭০৭] 

https://ifatwa.info/30990/  ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ  

ইবনে সিরিন রহঃ বলেন,

فإن رأى حية تمشي خلفه فإنّ عدوه يريد أن يمكر به فإن مشت بين يديه أو دارت حوله فإنّهم أعداء يخالطونه

যদি কেউ স্বপ্নে সাপ দেখে যে,তার পিছু পিছু ছুটছে,তাহলে এর অর্থ হল,ঐ ব্যক্তির শত্রুরা তার সাথে শত্রুতা করা জন্য চেষ্টা করতেছে।আর যদি কেউ দেখে যে তার হাতের সামনে বা তার আশপাশে সাপ ঘুর ঘুর করতেছে,তাহলে এর অর্থ হলো,ঐ ব্যক্তির শুত্রুরা তার পাশেই রয়েছে ঘনিষ্টজনদের মধ্যে। (তাফসিরুল আহলাম-ইবনে সিরান-২/৪)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ! ও প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

১. আপনি সাপ স্বপ্নে দেখেছেন,এর অর্থ হলো, আপনার ঘনিষ্টজনদের মধ্য থেকে কেউ আপনার সাথে শুত্রতার চেষ্টা করতেছে। যেহেতু সাপ আপনাকে কামড় দিয়ে দিতে পারেনি, তাই শত্রুরা আপনার ক্ষতি করতে পারবেনা, ইনশাআল্লাহ। 

তবে আপনার প্রতি নসিহা হল, আপনি ফরয ওয়াজিব বিধানকে গুরুত্বসহকারে পালন করবেন। সামর্থ্যানুযায়ী গরীব-মিসকিনকে কিছু দান করবেন। আর নিম্নোক্ত দুআ পড়বেন: আল্লাহুম্মা ইন্না নাজআলুকা ফি নুহুরিহিম, ওয়া নাউযুবিকা মিন শুরুরিহিম।

২. স্বপ্নের কারণে বিচলিত ও পেরেশান হওয়ার কারণ নেই। ঘুমানোর পূর্বে অজু করে সুন্নাত তরিকায় বিছানায় শয়ন করবেন। আপনি উক্ত স্বপ্নের অনিষ্টতা বা ক্ষতি থেকে আল্লাহ তায়ালার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করুন। সেই সাথে আপনার আমল বাড়িয়ে দিতে হবে, দ্বীনদার লোকদের সাথে উঠাবসা করতে হবে, পবিত্র হালতে থাকতে হবে, অহংকার থেকে বেঁচে থাকতে হবে। বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত, যিকির আযকার, ফরজসহ নফল নামাজ পড়তে হবে। সাধ্যানুযায়ী দান ছদকাহ করতে হবে। স্বপ্নের কথা কাউকে বলা যাবেনা। আরো জানুনঃ- https://ifatwa.info/8929/

তবে আপনি প্রয়োজনে কোন রুক্বইয়াহ শরইয়্যাহ স্পেশালিস্ট কোন রাক্বীর সাথেও পরামর্শ করতে পারেন ইনশাআল্লাহ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...