ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া
বারাকাতুহু
বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম
জবাব,
হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ
তাকী উসমানী দামাতবারকাতুহুম তার সদ্য লেখা এ ফতওয়ায় চেয়ারে বসে নামায আদায় করার
ক্ষতির দিকগুলো আলোচনাকরতে গিয়ে বলেন,
‘জমিনে বসে
নামায আদায় করার শক্তি থাকা সত্ত্বেও চেয়ারে বসার যে প্রচলন দেখা যায় তাতে বিভিন্ন
দিক থেকে আপত্তি রয়েছে।
(১)মাযুর ব্যক্তিদের জন্য জমিনে বসে নামায আদায় করাই উত্তম ও মাসনূন তরীকা।এর উপরই সাহাবায়েকেরাম
রাযিয়াল্লাহু আনহুম এবং পরবর্তীদের আমল চলে
আসছে। চেয়ারে বসে নামায আদায় করার রেওয়াজ কেবল শুরু হয়েছে।খায়রুল কুরূনে এর নযীর
নেই। অথচ সে যুগে মাযুরও ছিল চেয়ারও ছিল।
(২) যে ব্যক্তি শরীয়তের দৃষ্টিতে মাযুর নয়, অর্থাৎ কিয়াম,রুকু সিজদা করতে সক্ষম, তার জন্য জমিনে বা চেয়ারে বসে ফরয এবং ওয়াজিব নামায আদায়
করাই জায়েয নেই। অথচ কখনো কখনো দেখা যায় এ ধরণের সুস্থ ব্যক্তিও সামনে চেয়ার পেয়ে
চেয়ারে বসে নামায আদায় করে নেয়। ফলে তার নামাযই হয় না।
(৩) চেয়ারের ব্যবহারের কারণে কাতার সোজা করা ও সোজা রাখার ক্ষেত্রে
অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। অথচ মিলে মিলে দাড়ানো ও কাতার সোজা করার বিষয়েহাদীস শরীফে
জোর তাকীদ এসেছে।
(৪) বিনা প্রয়োজনে মসজিদে চেয়ারের অধিক্যের কারণে তা নাসারাদের
গির্জা ও ইহুদীদের উপাসনালয়ের সাদৃশ দেখা যায়। তারা গির্জায় চেয়ার ও বেঞ্চে বসে
উপাসনা করে। আর দ্বীনী বিষয়ে ইহুদী নাসারা ও অন্যান্য জাতিরসাদৃশ্য থেকেহ নিষেধ করা
হয়েছে।
(৫)নামায তো এমন ইবাদত যা আদায় করতে হয়বিনয়াবনত হয়ে বিগলিতচিত্তে।
আর চেয়ারে বসে নামায আদায় করার চেয়ে জমিনে বসে নামায আদায়ের মাঝে তা পূর্ণমাত্রায়
পাওয়া যায়।
(৬) কোন কোন যুবক ও সুস্থ ব্যক্তি নামাযের পর মসজিদে রাখা চেয়ারে
বসে আরাম করে। কখনো কখনো চেয়ার নিয়ে গোল হয়ে বসে আলাপচারিতায় লিপ্ত হয়। এটা মসজিদের
পবিত্রতা, মার্যাদা ও আদবের খেলাফ।
(৭)মসজিদে চেয়ারের ব্যবহারের কারণে কোন কোন ছুরতে কুরআনে কারীম
এবং মুরববী নামাযীদের আদবও এহতেরামের ব্যত্যয় ঘটে।’’
(নমুনা স্বরূপ আপত্তির এ সাতটি দিক উল্লেখ করার পর হযরত লেখেন
:)
اس لئے اشارہ سے
نماز پرهنے كے
لئے بهى حتى
الامكان كرسيوں كے
استعمال سے بچنا
چاہئے اور ان
كے استعمال كى
حوصلہ شكنى كرنى
چاہئے، اور ان
كا استعمال صرف
ان حضرات كى
حد تك محدود كرنا
چاہئے جو زمين
پر بيٹهكر نماز
ادا كرنے پر
قادر نہ ہوں.
‘‘...এ জন্যই ইশারায় নামায আদায় করার জন্য ও যথাসম্ভব চেয়ারের
ব্যবহার না করা চাই। চেয়ার ব্যবহারের প্রতি নিরুৎসাহিত করা চায় এবং এর ব্যবহার কেবল
মাত্র ঐ সকল ব্যক্তির মাঝে সিমাবদ্ধ করা উচিত,যারা জমিনে বসে নামায
আদায় করতে সক্ষম নয়।’’
এই স্পষ্ট বক্তব্য সত্ত্বেও
হযরত আবার এটাও লিখেছেন যে, রুকু সিজদা করতে অক্ষম
ব্যক্তিগণ জমিনের উপরবসে ইশারায় নামায আদায় করতে সক্ষম হওয়ার পরও যদি চেয়ারে বসে
নামায আদায় করে থাকেন, তাহলে সেটাও জায়েয, কিন্তু অনুত্তম কাজ। আর দারুল উলূমদেওবন্দের ফতওয়ায় এটাকে
শুধু অনুত্তমই বলা হয়নি বরং বলা হয়েছে,
তা বিভিন্ন কারণে ‘কারাহাত’
মুক্ত নয়। (সংগৃহীত)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী
দ্বীনী ভাই/বোন!
১. কোনো ব্যক্তি যদি দাঁড়াতে
ও বসতে পারে কিন্তু রুকু করতে না পারে তাহলে সে দাঁড়ানো অবস্থায় ইশারা করে রুকু করবে এবং
বসা অবস্থা থেকে নিয়ম
অনুযায়ী সেজদা আদায় করবে। সুতরাং আপনি চেয়ারে
না বসে দাড়িয়ে ইশারা করে রুকু করবেন ইনশাআল্লাহ।
২. নফল নামায কোনো ওজর ছাড়াও বসে পড়া জায়েয। তবে বসে পড়লে দাঁড়িয়ে
পড়ার তুলনায় অর্ধেক সওয়াব হবে। তাই দাঁড়িয়ে রুকু সেজদা করে নামায আদায় করাই উত্তম। তবে শরয়ী ওযরবশত বসে আদায় করলে পূর্ণ ছওয়াব পাবে।
হাদীস শরীফে এসেছে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বসে নামায পড়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, এতে দাঁড়িয়ে নামায পড়ার তুলনায় অর্ধেক সওয়াব হবে। (মুসনাদে আহমাদ,
হাদীস : ৬৮৮৩; আলমুহীতুল বুরহানী ২/২২১;
ফাতহুল কাদীর ১/৪০০; আলবাহরুর রায়েক ২/৬২)
রুকুর নিয়তে ঝুকলেই হবে, নিতম্ব মাটি থেকে আলগা হওয়া জরুরূ নয়। তবে রুকুর জন্য সেজদার তুলনায় একটু কম ঝুকবে। আরো জানুন: https://ifatwa.info/16753/