আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
62 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (11 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু,
১/বাবা মেয়েকে আল্লাহর কসম দিয়েছে ফোন না ধরার জন্য।কিন্তু দ্বীন শিক্ষাসহ অন্যান্য কাজে ফোন ধরা দরকার।এই বলে কসম দিয়েছে, আল্লাহর কসম এই ফোন ধরবি না।বাবা কসম তুলবেও না হয়তো।এখন মেয়ের কী করণীয়?
২/একটা নির্দিষ্ট আমল প্রতিদিন এতবার করব বলে আল্লাহর কসম করেছিলাম।কিন্তু ২ দিন ঘুমের জন্য করতে পারি নি।এর কাফফারা কি?২ দিনের জন্য কি ২ টা কাফফারা?
৩/এলাকায় মহিলাদের তালিমের পয়েন্টে যেতে ইচ্ছুক।তালিমে একসাথে মুনাজাত,মাথা নিচু করে একসাথে দরুদ পাঠ করা হয়।এগুলো কোনোটা কি বিদআত?
আর ফাজায়েলে আমাল বই থেকে আলোচনা করা হয় পুরোনোটা,বর্তমানে সবাই কমবেশি জানি,বর্তমান নতুন সংস্করণে অনেক ভুল সংশোধন করা হয়েছে।কিন্তু আলোচনা হয় যেহেতু পুরোনো বই থেকে সেহেতু অনেক জইফ হাদিস/মিথ্যা হাদিসও বর্ণনা শুনা হয়ে থাকে।এর জন্য  মন খুতখুত করে।মানে জাল/যইফ হাদিস/বর্ননাযোগ্য নয় এমন হাদিস শুনলে/তার উপর আমল করলে গুনাহ হবে কি না?
আমি যেতে ইচ্ছুক কিন্তু উল্লিখিত কিছু কারণে মন খুতখুত করে।
৪/আমার ওয়াসওয়াসা সহ মানসিক অসুস্থতা, এছাড়াও ইমানে,আমলে দুর্বলতা অনুভব করি।সবমিলিয়ে আমার খুব ইচ্ছা হয়,মাদ্রাসা মাদীনাহ লীল বানাতে যেতে।ওখানে ইমানে পরিবেশে অন্তত আমার ওয়াসওয়াসার সমস্যাটা নিশ্চয়ই যাবে আশা রাখি।এচাড়াও ইমান,আমলের উন্নতি হবে।একা একা দ্বীনের পথে চলা খুব কষ্টকর হয়ে যায়।তার সাথে ওয়াসওয়াসা,দৃঢ়তার অভাব,অলসতা সবরকম আছে।এখন পরিবার রাজি না।আমার জোর করছি,কখনো খারাপ ব্যবহারও করে ফেলছি।তাদের বারণ না শুনে যদি জোর করে আমি যেতে চাই মাদ্রাসাতে এতে কি আমার আদোও ভালো হবে?
তবে এর আগে আমি ওয়াসওয়াসার জন্য মানসিকভাবে প্রচুর অসুস্থ হয়ে গিয়েছিলাম।এখন সুস্থ অনেকটা।কিন্তু আবার যাতে ঐ অবস্থাতে না পড়ি এর জন্য+নিজের ইমান,আমল বাড়ানোর উদ্দেশ্যে চাচ্ছি যেতে।আপনার পরামর্শ চাচ্ছি।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
এক্ষেত্রে মেয়ে ফোন ধরলে কাহারো উপরেই কোনো কাফফারা আবশ্যক হবেনা।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০২)
এক্ষেত্রে পূর্বে কাফফারা আদায় না করে থাকলে এখন একটি কাফফারা আদায় করাই যথেষ্ট। 

এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 

(০৩)
আল্লাহ তা'আলা বলেন,

فَلَا تَدْعُ مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آخَرَ فَتَكُونَ مِنَ الْمُعَذَّبِينَ

অতএব, আপনি আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যকে আহবান করবেন না। করলে শাস্তিতে পতিত হবেন।

وَأَنذِرْ عَشِيرَتَكَ الْأَقْرَبِينَ

আপনি নিকটতম আত্মীয়দেরকে সতর্ক করে দিন।

وَاخْفِضْ جَنَاحَكَ لِمَنِ اتَّبَعَكَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ

এবং আপনার অনুসারী মুমিনদের প্রতি সদয় হোন।

فَإِنْ عَصَوْكَ فَقُلْ إِنِّي بَرِيءٌ مِّمَّا تَعْمَلُونَ

যদি তারা আপনার অবাধ্য করে, তবে বলে দিন, তোমরা যা কর, তা থেকে আমি মুক্ত।

وَتَوَكَّلْ عَلَى الْعَزِيزِ الرَّحِيمِ

আপনি ভরসা করুন পরাক্রমশালী, পরম দয়ালুর উপর,(২১৪-২১৭)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
ফাযাইলে আ'মল কিতাব খানাতে অনেক যঈফ হাদীস রয়েছে।তবে আ'মল ও তারগিবের জন্য যঈফ হাদীসের উপর আ'মল করা বৈধ রয়েছে।

ইমাম আহমাদ সহ অন্যান্য মুহাদ্দিসীনে কেরাম বলেন-

ﺇﺫﺍ ﺭﻭﻳﻨﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﺤﻼﻝ ﻭﺍﻟﺤﺮﺍﻡ ﺷﺪﺩﻧﺎ ﻭﺇﺫﺍ ﺭﻭﻳﻨﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﻔﻀﺎﺋﻞ ﻭﻧﺤﻮﻫﺎ ﺗﺴﺎﻫﻠﻨﺎ

অর্থঃ যখন আমরা হালাল – হারামে রেওয়ায়েত করি (সনদে খুব) কড়াকড়ি করি। আর যখন ফযীলাত ইত্যাদির ক্ষেত্রে রেওয়ায়েত করি শিথিলতা করি।(হাফেয সুয়ূতী, তাদরীবুর রাবী ১/২৯৮)

মুহাদ্দিসিনে কেরামের নীতি অনুযায়ী বলা যায়, যে ফাযাইলে আ'মালের ক্ষেত্রে যঈফ হাদীসকে বর্ণনা করা ও তার উপর আ'মল করা জায়েয রয়েছে।তবে মাওযু(বানোয়াট/মিথ্যা)বর্ণনার ভিত্তিতে আ'মল করা জায়েয হবে না।

যঈফ হাদীসের উপর আ'মল করা সম্পর্কে জারাহ- তা'দিল এর ইমাম 'ইবনুস সালাহ রাহ,' বলেন,

ﻳﺠﻮﺯ ﻋﻨﺪ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﻭﻏﻴﺮﻫﻢ ﺍﻟﺘﺴﺎﻫﻞ ﻓﻲ ﺍﻷﺳﺎﻧﻴﺪ ، ﻭﺭﻭﺍﻳﺔ ﻣﺎ ﺳﻮﻯ ﺍﻟﻤﻮﺿﻮﻉ ﻣﻦ ﺃﻧﻮﺍﻉ ﺍﻷﺣﺎﺩﻳﺚ ﺍﻟﻀﻌﻴﻔﺔ، ﻣﻦ ﻏﻴﺮ ﺍﻫﺘﻤﺎﻡ ﺑﺒﻴﺎﻥ ﺿﻌﻔﻬﺎ، ﻓﻴﻤﺎ ﺳﻮﻯ ﺻﻔﺎﺕ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻭﺃﺣﻜﺎﻡ ﺍﻟﺸﺮﻳﻌﺔ ﻣﻦ ﺍﻟﺤﻼﻝ ﻭﺍﻟﺤﺮﺍﻡ ﻭﻏﻴﺮﻫﻤﺎ . ﻭﺫﻟﻚ ﻛﺎﻟﻤﻮﺍﻋﻆ، ﻭﺍﻟﻘﺼﺺ، ﻭﻓﻀﺎﺋﻞ ﺍﻷﻋﻤﺎﻝ، ﻭﺳﺎﺋﺮ ﻓﻨﻮﻥ ﺍﻟﺘﺮﻏﻴﺐ ﻭﺍﻟﺘﺮﻫﻴﺐ، ﻭﺳﺎﺋﺮ ﻣﺎ ﻻ ﺗﻌﻠﻖ ﻟﻪ ﺑﺎﻷﺣﻜﺎﻡ ﻭﺍﻟﻌﻘﺎﺋﺪ، ﻭﻣﻤﻦ ﺭﻭﻳﻨﺎ ﻋﻨﻪ ﺍﻟﺘﻨﺼﻴﺺ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺘﺴﺎﻫﻞ ﻓﻲ ﻧﺤﻮ ﺫﻟﻚ : ( ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺑﻦ ﻣﻬﺪﻱ ) ، ﻭ ( ﺃﺣﻤﺪ ﺑﻦ ﺣﻨﺒﻞ ) ، ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ

মুহাদ্দিসিনে কেরামদের নিকট মাওযু ব্যতীত যঈফ তথা সনদের দুর্বলতা সম্ভলিত হাদীস সমূহ কে  বর্ণনা করা জায়েয রয়েছে।এক্ষেত্রে দুর্বলতা কে জনসমক্ষে প্রকাশ করা জরুরী নয়।

তবে শর্ত হল,উক্ত যঈফ হাদীস আল্লাহর সিফাত এবং হালাল-হারাম বা আক্বাঈদ সম্ভলিত হতে পারবে না।সুতরাং ওয়াজ,পূর্ববর্তী ঘটনা,এবং ফাযাইলে আ'মাল ও  সকল উৎসাহ প্রদাণ মূলক বিষয়ে যঈফ হাদীসকে বর্ণনা করা যাবে এবং তার ভিত্তিতে আ'মল করা যাবে। যেমন আব্দুর রহমান ইবনে মাহদি রাহ, আহমদ ইবনে হাম্বল রাহ থেকে হাদীস বর্ণনা করা যাবে।

(মু'আক্বাদাহ ইবনে সালাহ)

বিস্তারিত জানুনঃ 
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
উক্ত তালিমের পয়েন্ট এ যাওয়া বিদ'আত নয়।

যইফ হাদিস হাদিস শুনলে/তার উপর আমল করলে গুনাহ হবেনা।
বরং তার উপর আমল করা যাবে।

(০৪)
উক্ত মাদ্রাসায় আসলে আপনার উপকার হবে,ইনশাআল্লাহ। 

তবে পরিবারের অমতে মাদ্রাসায় না আসার পরামর্শ থাকবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

No related questions found

...