আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
66 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (7 points)
আসসালামু আলাইকুম। কারোর যদি ফোনে এক তালাক হয়,  এবং স্বামী প্রবাসে থাকে, তবে কি ফোনের মাধ্যমেই তালাক বাতিল করা সম্ভব?

কারন, ইদ্দতের মাঝে তো স্বামী-স্ত্রী একসাথে থাকা সম্ভব না। মৌখিকভাবে কি তালাক ক্যান্সেল করে একত্রে থাকা সম্ভব?

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

তালাক এটি খুবই মারাত্মক একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

এ শব্দটি নিয়ত থাকুক বা না থাকুক রাগে বলুক আর এমনিতেই বলুক স্ত্রীকে উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ দিয়ে এ শব্দ বের হলেই তালাক পতিত হয়ে যায়। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

তালাক পতিত হওয়ার ক্ষেত্রে স্ত্রীকে শুনিয়ে দেওয়া জরুরি নয়।
মুখ থেকে উচ্চারণ হয়ে গেলেই তালাক পতিত হয়ে৷ যায়।
(এক্ষেত্রে ভুলে/ঠাট্রা মূলক মুখ দিয়ে উচ্চারন হলেও তালাক হবে।)
(ফাতাওয়ায়ে রশিদিয়্যাহ ৪৭৭
ফাতাওয়ায়ে দারুল উলুম ৯/৪২
আযিযুল ফাতওয়া ১/২৫২)
,   
أما رکن الطلاق فہو ہذہ اللفظۃ الصادرۃ من الزوج۔ (الفتاویٰ التاتارخانیۃ ۴؍۳۷۷ رقم: ۶۴۷۱ زکریا)
সারমর্মঃ
তালাকের রুকন হলো এই শব্দ গুলো স্বামী থেকে বের হওয়া।

https://ifatwa.info/52124/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
শরীয়তের বিধান হলো, স্পষ্ট বাক্যে এক তালাক বা দুই তালাক দেয়ার পর স্বামীর অধিকার থাকে, স্ত্রীকে ইদ্দত তথা তিন হায়েজ অতিক্রান্ত হওয়ার আগে রাজআত করা তথা স্ত্রীকে স্ত্রী হিসেবে ফিরিয়ে আনা। এতে কোন কিছুর প্রয়োজন নেই। 

কিন্তু যদি তিন হায়েজ অতিক্রান্ত হওয়ার আগে স্ত্রীকে ফিরিয়ে না আনা হয়, তাহলে স্ত্রীকে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে নতুন করে মোহর ধার্য করে বিবাহ করা আবশ্যক। নতুবা স্বামী স্ত্রী হিসেবে উভয়ের বসবাস করা জায়েজ নয়। (ফাতওয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ-৯/৪৪১,২৪৫)

এক্ষেত্রে স্বামীর অধিকার আছে যে, স্ত্রীকে ইদ্দত তথা তিন হায়েজ অতিক্রান্ত হওয়ার আগে রাজআত করা (মৌখিক ভাবে বা স্বামীসুলভ আচরনের মাধ্যমে) তথা স্ত্রীকে স্ত্রী হিসেবে ফিরিয়ে আনা। এতে কোন কিছুর প্রয়োজন নেই। 
,
তাই যদি ইদ্দত কাল শেষ না হয়ে থাকে,তাহলে স্বামী এক্ষেত্রে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে পারবে। 
,
কিন্তু যদি তিন হায়েজ অতিক্রান্ত হওয়ার আগে স্ত্রীকে ফিরিয়ে না আনা হয়, তাহলে স্ত্রীকে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে নতুন করে মোহর ধার্য করে বিবাহ করা আবশ্যক। নতুবা স্বামী স্ত্রী হিসেবে উভয়ের বসবাস করা জায়েজ হবেনা।
,
এক তালাকের পর ফিরিয়ে নেওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে জানুনঃ 

সুরা বাকারার ২২৯ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে-

الطَّلَاقُ مَرَّتَانِ فَإِمْسَاكٌ بِمَعْرُوفٍ أَوْ تَسْرِيحٌ بِإِحْسَانٍ وَلَا يَحِلُّ لَكُمْ أَنْ تَأْخُذُوا مِمَّا آَتَيْتُمُوهُنَّ شَيْئًا إِلَّا أَنْ يَخَافَا أَلَّا يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا فِيمَا افْتَدَتْ بِهِ تِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ فَلَا تَعْتَدُوهَا وَمَنْ يَتَعَدَّ حُدُودَ اللَّهِ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ (229)

"এ তালাক দু'বার, অতঃপর স্ত্রীকে হয় বিধিসম্মতভাবে রাখবে অথবা সদয়ভাবে বিদায় দেবে। আর স্ত্রীকে দেয়া কোন কিছু ফেরৎ নেয়া তোমাদের পক্ষে উচিত নয়। তবে যদি তাদের উভয়ের আশংকা হয় যে তারা আল্লাহর সীমারেখা রক্ষা করে চলতে পারবে না এবং তোমরা যদি আশংকা কর যে তারা আল্লাহর সীমারেখা রক্ষা করে চলতে পারবে না, তবে (সে অবস্থায়) স্ত্রী কোন কিছুর বিনিময়ে (স্বামী থেকে) নিষ্কৃতি পেতে চাইলে তাতে (স্বামী-স্ত্রীর) কারো কোনো পাপ নেই। এসব আল্লাহর সীমারেখা। কাজেই তা লংঘন কর না। যারা আল্লাহর (নির্দিষ্ট) সীমারেখা লংঘন করে তারাই অত্যাচারী।" (২:২২৯)
,    
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
তালাক দেয়ার পর তাহা আর বাতিল করা যায়না। তবে শরীয়ত সম্মত পন্থায় স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়া যায়।

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্বামী যদি স্পষ্ট বাক্যে (তথা তালাক শব্দ বলে) তালাক দেয়,তাহলে এক তালাকে রজয়ী পতিত হবে।

সেক্ষেত্রে তালাকের পর কোন সময় অতিবাহিত না হতে দিয়ে সাথে সাথে আবার ঘর সংসার শুরু করা জায়েজ।
সমস্যা নেই।
এভাবে রজয়াত হবে।

আর যদি বায়েন তালেক হয়,তথা কেনায়া (অস্পষ্ট বাক্য) তালাকের নিয়তে বলে,তাহলে বায়েন তালাক হওয়ায় নতুন ভাবে বিবাহ পড়িয়ে নেয়া ব্যাতিত এভাবে ঘর সংসার করা জায়েজ হবেনা।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,   
স্ত্রীকে স্পষ্ট বাক্যে এক তালাক দিলে সেক্ষেত্রে ইদ্দতকাল অতিবাহিত হওয়ার হওয়ার আগেই ফিরিয়ে নিতে চাইলে ফোনের মাধ্যমে ফিরিয়ে নেয়া যাবে।
স্বামী ফোনে তাকে বলনে যে আমি তোমাকে স্ত্রী হিসেবে ফিরিয়ে নিলাম।

আর যদি স্ত্রীর ইদ্দতকাল অতিবাহিত হওয়ার পর ফিরিয়ে নিতে চায়,সেক্ষেত্রে ফোনের মাধ্যমে দেশে কাউকে নিজের বিবাহের ইজাবের উকিল বানিয়ে সেই উকিল যদি সেই স্ত্রীর সাথে তার বিবাহ সম্পাদন করে,তাহলে এ পদ্ধতিতেও স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়া সম্ভব।

মোবাইলের মাধ্যমে বিবাহ সংক্রান্ত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...