আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
90 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (5 points)
edited by
১/আসসালামু আলাইকুম, আইওএম -এ রুকাইয়া কোর্স করেছি এখন, আলহামদুলিল্লাহ রুকাইয়ার কমন প্রায় সব গুলোই মুখস্থ করেছি। এখন পিরিয়ড অবস্থায় কি এগুলো মুখস্ত পড়েই সব ধরনের রুকাইয়া করতে পারব? কোনো সমস্যা হবে কি?

২/আমাদের একজন প্রতিবেশি বয়স্কা মহিলা কুফুরি করে।আগে জানতাম না।কিছুদিন আগে আমার বদনজর ও জাদুর রুকাইয়া করার, পর পর ২দিন আমি স্বপ্নে দেখি ওনি আমাকে জাদু করার জন্য কিসের যেন ধোঁয়া ছড়াচ্ছে। এর কিছু দিন হয়তো ২/৩ মাস  পর আমার আম্মুও স্বপ্ন দেখেন ঐ মহিলা আম্মুকে কুফুরি করছে। (আমার আম্মুর আগে জাদু সমস্যা ছিল রুকাইয়া করার পর গেছে, আলহামদুলিল্লাহ?)বি:দ্র: আমি আগে কখনো জানতাম না ঐ মহিলা এসব করে, কখনো ভাবিওনি এরকম।তবে,আল্লাহর কাছে দোয়া করতাম যে এসব করে তাকে যেন চিনতে পারি।এখন আমার ও আমার আম্মুর একই স্বপ্ন দেখা কারন কি হতে পারে ??..

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/34732/ নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, শরীয়তের বিধান হলো মহিলাদের হায়েজ অবস্থায় কুরআন শরিফ স্পর্শ করা, তেলাওয়াত করা জায়েজ নেই।

হায়েজ,নেফাস,গোসল ফরজ থাকা অবস্থায় কুরআনে কারীম পড়া হারাম।  তবে যিকির,দোয়া সম্বলিত আয়াত,দ্বীনি কিতাব সমুহ পড়তে কোনো সমস্যা নেই।   (কিতাবুন নাওয়াজেল ৩/১১০)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  

عن ابن عمر : عن النبي صلى الله عليه و سلم قال لا تقرأ الحائض ولا الجنب شيئا من القرآن (سنن الترمذى، ابواب الطهارات، باب ما جاء في الجنب والحائض : أنهما لا يقرأن القرآن، رقم الحديث-131

অনুবাদ-হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-ঋতুবতী মহিলা এবং গোসল ফরজ হওয়া ব্যক্তি কোরআন পড়বে না। (সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং-১৩১, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-৯৯১, মুসনাদুর রাবী, হাদীস নং-১১, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১০৯০, মুসন্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-৩৮২৩)

ولا بأس لحائض وجنب بقراء ۃ أدعیۃ ومسہا وحملہا وذکر اللّٰہ عز وجل وتسبیح۔ (درمختار ۱؍۲۹۳ کراچی، ۱؍۴۸۸ زکریا، الفتاویٰ التاتارخانیۃ ۱؍۴۸۱ زکریا)

হায়েজাহ মহিলার জন্য কুরআনের দোয়ার আয়াত তেলাওয়াত করা,সেটা স্পর্শ করা,উঠানো,আল্লাহর যিকির তাসবিহ জপা জায়েজ। এতে কোনো সমস্যা নেই।

আয়াতুল কুরসি দোয়া মূলক, তিন কুল দোয়া মূলক ,আমানার রসুল দোয়া মূলক, মঞ্জিল এর ৩৩ আয়াত দোয়া, মোনাজাত মূলক আয়াতসমূহ -এসবও পড়া যাবে। এগুলোও দোয়া মূলক আয়াত।

  قال فى المراقي (مع حاشية الطحطاوي كتاب الطهارة باب الحيض والنفاس والاستحاضة ص 141-142) : ويحرم بالحيض والنفاس ثمانية أشياء : ..... قراءة آية من القرآن إلا بقصد الذكر إذا اشتملت عليه لا على حكم أو خبر اهـ وفي حاشية الطحطاوي : قوله : "إلا بقصد الذكر" إي : أو الثناء أو الدعاء إن اشتملت عليه فلا بأس به في أصح الروايات" قال فى العيون : ولو أنه قرأ الفاتحة على سبيل الدعاء أو شيئا من الآيات التي فيها معنى الدعاء ولم يرد به القرآن فلا بأس به اهـ واختاره الحلواني وذكر في غاية البيان أنه المختار كما فى البحر والنهر ..... اهـ

সারমর্মঃ যিকির,দোয়ার নিয়তে কুরআনের আয়াত পড়া যাবে। এমনকি যে যদি সুরা ফাতেহা দোয়া মূলক পড়া হয়,তাহলে তাও পড়া যাবে। 

 সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১. পিরিয়ডে এমন সব আয়াত পড়া যাবে যেসব দোয়ার অর্থ প্রকাশ করে। অথবা আল্লাহর জিকির, প্রশংসা, বড়ত্ব বুঝায়। এ অবস্থায় এমন কোন আয়াত পড়া যাবেনা যা দ্বারা আল্লাহর নির্দেশ এবং নিষেধাজ্ঞা, পূর্বের অথবা ভবিষ্যতের কোন ঘটনা অথবা ঘটনা সম্পর্কিত তথ্য বুঝায়। মোটকথা, এ অবস্থায় সাধারণ তেলাওয়াতের উদ্দেশ্যে কোরআন পড়া যাবেনা।

উল্লেখিত মূলনীতি অনুসারে, আপনি যদি নিয়ত রাখেন আল্লাহর প্রশংসাপূর্ণ আয়াতের মাধ্যমে জিন এবং শয়তানের ক্ষতি থেকে সুরক্ষার জন্য পিরিয়ডের সময় ঘুমানোর আগে আয়াতুল কুরসি, তিনকুল (সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস) পড়বেন, তাহলে দোয়া হিসেবে এটা পড়া যাবে। কিন্তু সুরা কাফিরুন পড়তে পারবেন না কারণ এটা উপরের উল্লেখিত শর্ত পূরণ করে না।

 রুকইয়ার গোসলের জন্য যেহেতু বেশ ভালো পরিমাণেই তিলাওয়াত করতে হয়। তাই এসব সুরা নিজে না পড়ে, অন্য কারও সহায়তা নিতে হবে। অর্থাৎ অন্য কেউ তেলাওয়াত করবেন আর আপনি শ্রবণ করবেন। অথবা শুধু দোয়াগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দিয়ে গোসল করতে হবে। ইনশাআল্লাহ, এতেই উপকার হবে।  কোরআন শোনার জন্য পবিত্রতা শর্ত না। আয়েশা রা. এই সময়ে তিলাওয়াত শুনেছেন বলে জানা যায়। তবে যত বেশি পবিত্র থাকবেন, রুকইয়ার তত বেশি ইফেক্ট হবে। তাই সম্ভব হলে রুকইয়াহ করার আগে একবার ওযু করে নিন।

২. উভয় স্বপ্নের অনিষ্টতা থেকে আল্লাহ তায়ালার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করুন। হেফাজতের দোয়াগুলো নিয়মিত পাঠ করবেন এবং স্বপ্নের কথা কাউকে বলা যাবে না। ইনশাআল্লাহ সে আপনাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...