আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
98 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (3 points)
১/আমার মামা আমার মামিকে ১ বছর আগে জগড়া হওয়ার সময় ১ তালাক দিয়েছে, মুখে উচ্চারণ করে।তার ১ সপ্তাহ কম বেশি সময় পর তারা আবার আগের মতো সংসার করা শুরু করে।১ বছর পর এখন আবার জগড়া হওয়ার পর আমার মামা আমার মামিকে মুখে উচ্চারণ করে বলছে ২ তালাক। এক্ষেত্রে কি তাদের তালাক হয়ে গেছে নাকি,ফিরিয়ে নেয়ার কোনো সুযোগ আছে?

২/রেজয়ী তালাক কাকে বলে বাইন তালাক কাকে বলে?

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)

 

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

প্রথম ও দ্বিতীয় তালাকের পর রাজআত করা যায়। তথা ইদ্দতের ভিতর স্বামী তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে।এরজন্য কোনো আনুষ্টানিকতার প্রয়োজন নেই।

রাজআতের পদ্ধতি সম্পর্কে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় উল্লেখ করা হয়,

الرجعة إبقاء النكاح على ما كان ما دامت في العدة كذا في التبيين وهي على ضربين: سني وبدعي (فالسني) أن يراجعها بالقول ويشهد على رجعتها شاهدين ويعلمها بذلك فإذا راجعها بالقول نحو أن يقول لها: راجعتك أو راجعت امرأتي ولم يشهد على ذلك أو أشهد ولم يعلمها بذلك فهو بدعي مخالف للسنة والرجعة صحيحة وإن راجعها بالفعل مثل أن يطأها أو يقبلها بشهوة أو ينظر إلى فرجها بشهوة فإنه يصير مراجعا عندنا إلا أنه يكره له ذلك ويستحب أن يراجعها بعد ذلك بالإشهاد كذا في الجوهرة النيرة.

রাজআত হল, ইদ্দতের ভিতরে বিয়েকে টিকিয়ে রাখা, স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। রাজআত দুই প্রকার

(ক) সুন্নাহ সম্মত- এর ব্যখ্যা হল, কথার মাধ্যমে রাজআত করা হবে।এবং রাজআত করার সময় দুইজন সাক্ষীকে উপস্থিত রাখা হবে।এবং তাদেরকে রাজাতের বিষয় সম্পর্কে অবগত করা হবে।যখন কথার মাধ্যমে রাজআত করা হবে,তখন স্বামী বলবে-আমি তোমাকে ফিরিয়ে নিলাম,বা বলবে,আমি আমার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিলাম।

(খ) যদি দুজন সাক্ষীর অনুপস্থিতিতে বা উপস্থিত তবে তাদেরকে অবগত না করে কেউ রাজআত করে নেয়,তাহলে এটা রাজাত হবে।তবে বিদআত হবে।

 

যদি কেউ কথার পরিবর্তে কাজের মাধ্যমে রাজআত করে নেয়।যেমন স্বামী তার ঐ স্ত্রীর সাথে সহবাসে লিপ্ত হয়ে গেল,বা তাকে চুমু দিয়ে দিল,বা তার লজ্জাস্থানের দিকে কামভাব নিয়ে থাকিয়ে রইলো,তাহলে এমতাবস্থায়ও রাজআত হয়ে যাবে।তবে হানাফি মাযহাব মত এমনটা করা মাকরুহ।

মুস্তাহাব হল,তালাক পরবর্তী দুইজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে রাজ'আত করা।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া ১/৪৬৮)

তৃতীয় তালাকের পর স্ত্রীকে আর ফিরিয়ে আনা যাবে না। চায় অনেক বৎসর পরই দেয়া হোক না কেন।

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/2579

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১. আপনার প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী  বিগত এক বছর পূর্বে তাদের মাঝে এক তালাকে রজঈ  হয়েছিল।  এবং তারা  পুনরায় সংসার করেছে। এতে কোন সমস্যা নেই।  বর্তমানে স্বামী স্ত্রীকে দ্বিতীয় তালাক দেওয়ায় দুই তালাকে রজঈ পতিত হয়েছে ।  বিধায়  আপনার মামা  ইদ্দতের মধ্যেই  আপনার মামীকে  ফেরত নিতে পারবেন। তবে  স্বামী হিসেবে তিনি আর এক তালাক  দেওয়ার অধিকার রাখেন। যদি আরেকবার  এক তালাক দিয়ে দেয় তাহলে তারা পরস্পরে একে অপরের জন্য  হারাম হয়ে যাবে।  তাদের জন্য সংসার করা  বৈধ হবে না।

বি:দ্র: তালাকে রজঈ এর পর  ফেরত নেওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে উপরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

২. আর শরীয়তে  এক তালাকে রজয়ীর বিধান হলো তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীর ইদ্দতের সময়কাল তথা গর্ভবতী হলে সন্তান জন্মদান ও গর্ভবতী না হলে তিন হায়েজ/পিরিয়ড অতিবাহিত হওয়ার পূর্বে ফিরিয়ে নেয়ার অবকাশ দিয়েছে। এবং ইদ্দতের সময়কাল শেষ হয়ে যাওয়ার পর  উক্ত তালাকটি বায়েন তালাক হয়ে যায়। তখন নতুন করে বিবাহ করা ব্যতীত স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়া যায় না।

অর্থাৎ  তালাকে রজঈ এর  পরে  বিবাহ ছাড়াই   ইদ্দতের মধ্যে ফেরত নেওয়া যায়।  কিন্তু  তালাকে বায়েনের পর  বিবাহ ছাড়া  স্বামী স্ত্রীকে  ফেরত নিতে পারবে না। সুতরাং এক তালাক বা দুই তালাকে বায়েন (তিন তালাকে বায়েন ব্যতীত) দেওয়ার পর ইদ্দতের আগেই স্বামী-স্ত্রী চাইলে পুনরায় নতুন করে মহর নির্ধারণ করে  আযাদ প্রাপ্ত বয়স্ক বিবেকবান দু’জন মুসলিম পুরুষ অথবা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলা স্বাক্ষীর উপস্থিতিতে বিয়ে করতে পারবে। এতে কোনো সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...