ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া
বারাকাতুহু
بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
বসবাসের জন্য ঘর-বাড়ি
আল্লাহ তাআলার পক্ষ এক বড় নিয়ামত। মানুষের মৌলিক প্রয়োজনের মধ্যে বাসস্থান অন্যতম।
তো কেউ যখন নতুন কোনো ঘর নির্মাণ করবেন,
শরীয়তের আলোকে তার জন্যে
কিছু করণীয় রয়েছে।
এক. হালাল ও পবিত্র সম্পদ
ঘর নির্মাণে খরচ করা। কারণ হারাম পরকালীন ভয়াবহ শাস্তির পাশাপাশি দুনিয়ারও সকল অশান্তির
মূল।
দুই. নবনির্মিত ঘর যেন
কারো হক মেরে খাওয়ার বা অভিশাপের মাধ্যম না হয়,
সে জন্য ঘর নির্মাণে শ্রমিকদের
ন্যায্য মজুরি উত্তমভাবে আদায় করা।
কেননা হাদীসে এসেছে-
أَعْطُوا الْأَجِيرَ أَجْرَهُ قَبْلَ أَنْ يَجِفَّ
عَرَقُهُ
শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকানোর
আগেই তাকে তার পারিশ্রমিক প্রদান করো। (ইবনু মাজাহ: ২৪৪৩)
তিন. ঘর নির্মাণ সম্পন্ন
হওয়ার পর নতুন ঘরে দুই রাকাত শুকরানা নামায আদায় করবেন।
কেননা রাসুলুল্লাহ ﷺ এর সামনে কোনো আনন্দের উপলক্ষ এলে দুই রাকাত শুকরানা নামায আদায় করতেন। যেহেতু
নবনির্মিত ঘরটি আপনাদের জন্যে আনন্দের কারণ হচ্ছে,
তাই আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া
আদায় হিসেবে দুই রাকাত নফল নামায আদায় করে নেয়া উত্তম।
চার. সুনির্দিষ্ট কোনো
আয়োজন বা আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই অধিক পরিমাণে কুরআনুল কারীম তিলাওয়াত করা নতুন ঘরের জন্যে
বারাকাতের কারণ। বিশেষ করে সূরা বাকারা ঘরে তিলাওয়াত করলে দুষ্ট শয়তান ও জিনের উপদ্রব
থেকে মুক্ত থাকা যায়। হাদীসে এসেছে-
لَا تَجْعَلُوا بُيُوتَكُمْ مَقَابِرَ إِنَّ
الشَّيْطَانَ يَنْفِرُ مِنْ الْبَيْتِ الَّذِي تُقْرَأُ فِيهِ سُورَةُ الْبَقَرَةِ.
অর্থ: তোমরা তোমাদের ঘরগুলোকে কবরস্থান বানিয়ো না।
নিশ্চয়ই শয়তান এমন ঘর থেকে পালিয়ে যায়,
যে ঘরে সূরা বাকারাহ পাঠ
করা হয়। (মুসলিম: ৭৮০, মুসনাদে আহমদ: ৮৪৪৩, ইবনে হিব্বান: ৭৮৩)
পাঁচ. ঘরে মানুষের বা
অন্যান্য জীব-জন্তুর ছবি, প্রতিকৃতি বা ভাস্কর্য
রাখা যাবে না। শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে এগুলো ঝুলিয়ে রাখা নাজায়েয। পাশাপাশি এগুলো রাখলে
ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না। ঘরে বারাকাত আসে না। হাদীসে এসেছে-
لَا
تَدْخُلُ الْمَلَائِكَةُ بَيْتًا فِيهِ تَمَاثِيلُ أَوْ تَصَاوِيرُ.
অর্থ: ফেরেশতাগণ এমন ঘরে প্রবেশ করেন না যে ঘরে কোনো
প্রাণীর ছবি বা প্রতিকৃতি আছে। (সহীহ মুসলিম: ২১১২) অন্য বর্ণনায় এসেছে-
نَهَى
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الصُّورَةِ فِي البَيْتِ،
وَنَهَى عَنْ أَنْ يُصْنَعَ ذَلِكَ.
অর্থ: রাসূলুল্লাহ ﷺ ঘরে ছবি রাখতে ও ছবি অঙ্কন করতে নিষেধ করেছেন। (তিরমিযী: ১৭৪৯)
ছয়. জীন-ভূত বা শয়তান
দূরীভূত করার জন্যে আযান দেয়ারও অনুমতি আছে। তবে এটাকে সুন্নাত বা মুস্তাহাব মনে করা
যাবে না।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী
দ্বীনী ভাই/বোন!
১. নতুন বাড়িতে উঠার সময়
উপরে উল্লেখিত আমল গুলো করার চেষ্টা করা। নতুন
বাড়িতে আযান দিয়ে উঠতে হয় এমন কোন বর্ণনা কোরআন হাদিসে সুস্পষ্ট ভাবে কোন জায়গায়
পাওয়া যায় না।
২. ভিতর থেকে কথা বলে কোন ভয় বা আশংকা থাকার দরুন দরজা না খুললে কোন গুনাহ হবে না। তবে কোন ধরণের ক্ষতির আশংকা বা পর্দা ভঙ্গ হওয়ার কোন ভয় না থাকলে উত্তম হবে কোন প্রয়োজনে কেউ ডাকলে তার ডাকে সাড়া দেওয়া ও দরজা খুলে দেওয়া।