মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া ও বিয়ে প্রসঙ্গে

Question

আসসালামু আলাইকুম।
১.আমার একটি বিয়ের প্রস্তাব এসেছিল। আমাদের বাসায়ও আসে। আমার কেন জানি মানুষগুলোকে সুবিধার মনে হয়নি।ছেলে কেউ আমার পছন্দ হয়নি কথাবার্তা কেমন যেন।আম্মুরও পছন্দ হয়নি কিন্তু আব্বু কথা আগাচ্ছিল।আমি তাদের বলেও বুঝাতে পারছিলাম না। কোনকিছুতেই মন বসেছিল না, অল্পতেই রেগে যেতাম কান্না আসত।শেষে আমি থাকতে না পেরে ছেলে না করে দেই। আর বাসায় বলি ছেলে আর আগাবে না। কারণ জিজ্ঞেস করলে বলি সমস্যা আছে। এটা নিয়ে আব্বু আম্মু একটু চিন্তিত হয়ে পরেন। এখন খুব খারাপ লাগছে। এমনটা করা ঠিক হয়নি। ভয়ও লাগছে যদি এমন কাজ করার জন্য আল্লাহ আমার উপর রাগান্বিত হন। এমন কাজ করাতে কি অনেক গুনাহ হয়েছে? হয়ে থাকলে আমি এখন কি করতে পারি?
২. কার সাথে আমার বিয়ে হবে এটা কি নির্ধারিত?
৩.জামা উল্টো পরলে নাকি গুনাহ হয়। শয়তান নাকি উল্টো পরে এটা কি সঠিক?

Answer 1

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/66696/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

কার সাথে কার বিয়ে হবে সেটা পূর্ব থেকেই নির্ধারিত।

আল্লাহ তাআলা কুরআনে ইরশাদ করেছেন,

وَخَلَقْنَاكُمْ أَزْوَاجًا [٧٨:٨

আমি তোমাদেরকে জোড়া জোড়া সৃষ্টি করেছি, {সূরা নাবা-৮}

সুতরাং বুঝা গেল জীবনসঙ্গী কে হবে? তা আল্লাহ তাআলা জানেন।নির্ধারিত রয়েছে। কিন্তু বান্দা জানে না। তাই বান্দা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে ভাল পাত্রি/পাত্র দেখে বিবাহ করতে।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযি-থেকে বর্ণিত তিনি বলেন- 

ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ اﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻋَﻤْﺮٍﻭ ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﻗَﺎﻝَ: ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ اﻟﻠَّﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ -( «ﻛَﺘَﺐَ اﻟﻠَّﻪُ ﻣَﻘَﺎﺩِﻳﺮَ اﻟْﺨَﻼَﺋِﻖِ ﻗَﺒْﻞَ ﺃَﻥْ ﻳَﺨْﻠُﻖَ اﻟﺴَّﻤَﺎﻭَاﺕِ ﻭَاﻷْﺭْﺽَ ﺑِﺨَﻤْﺴِﻴﻦَ ﺃَﻟْﻒَ ﺳَﻨَﺔٍ)ﺭَﻭَاﻩُ ﻣُﺴْﻠِﻢٌ.

আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক মানুষের তাক্বদীর লিপিবদ্ধ করেছেন আসমান-যমীন সৃষ্টির ৫০ হাজার বছর পূর্বে এবং তিনি যার ভাগ্যে যা লিপিবদ্ধ করেছেন তাই ঘটবে। (ছহীহ মুসলিম, মিশকাত হাদীস নং/৭৯)। 

https://ifatwa.info/25636/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, 

জন্ম মৃত্যুর মত বিয়ে শাদী ইত্যাদি সবকিছুই নির্ধারিত রয়েছে। তাকদীরে লিপিবদ্ধ রয়েছে।তাকদীরে যার সাথে বিয়ের কথা লিখিত রয়েছে, তার সাথেই বিয়ে হবে। হ্যাঁ তাকদীরে যা লিখা রয়েছে, তা দু'আর মাধ্যমে পরিবর্তনও হয়ে যেতে পারে।

হযরত সালমান ফারসি রাযি থেকে বর্ণিত,

سَلْمَانَ رضي الله عنه ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَا يَرُدُّ القَضَاءَ إِلَّا الدُّعَاءُ، وَلَا يَزِيدُ فِي العُمْرِ إِلَّا البِرُّ

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,তাকদীরকে দু'আ ব্যতীত অন্যকিছু বদলাতে পারে না। আর নেকী ব্যতীত অন্যকিছু হায়াতকে বৃদ্ধি করবে না।(সুনানু তিরমিযি-২১৩৯)

কুফু সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ  https://www.ifatwa.info/4541/

ইস্তেখারার নামাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/14451/

★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

১. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে এভাবে মিথ্যা বলাটা ঠিক হয়নি। হয়তো পছন্দ না হলে সত্য কথা বলেই বাদ দিয়ে দিবেন বা ইস্তিখারাহ করে সিদ্ধান্ত শুনিয়ে দিবেন। সুতরাং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিবেন।

২. জী হ্যাঁ, এটা নির্ধারিত।

৩. জামা উল্টো করে পরিধান করা ঠিক নয়। পরলে গোনাহ হবে বিষয়টা এমনটা নয়। তবে ঠিক নয়। আর পরবর্তী কথাটা পাওয়া যাইনি।