ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)
আউওয়াল ওয়াক্ত বলতে কি? এমন প্রশ্নের উত্তরে বলা হবে যে,
মাগরিব ছাড়া প্রত্যেক নামাজেরই একটি মুস্তাহাব সময় রয়েছে। যা আওয়াল ওয়াক্ত (ওয়াক্ত শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে) থেকে কিছুটা পরে। যেমন, ফজরের নামাজ সম্পর্কে রাফে বিন খাদিজ রাযি. থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাল্লাহ ﷺ বলেন,
أَسْفِرُوا بِالفَجْرِ، فَإِنّهُ أَعْظَمُ لِلأَجْرِ -
তোমরা ফজরের নামাজ চারদিক আলোকিত হয়ে যাওয়ার পর পড়বে। কেননা তাতে অধিক সওয়াব রয়েছে। (জামে তিরমিযী ১৫৪)
যোহরের নামাজ সম্পর্কে আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত এক হাদীসে বলা হয়েছে,
إِذَا اشْتَدّ الحَرّ فَأَبْرِدُوا بِالصّلاَةِ -
রোদের তাপ বেশি হলে তাপমাত্রা কমে আসার পর যোহরের নামাজ পড়। (সহীহ বুখারী ৫৩৬)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যোহরের ওয়াক্ত শুরু হয় ১১:৫৪ মিনিট হইতে। এখন এই সময়ে বিনা ওজরে যোহর আদায় করা মুস্তহাব পরিপন্থি হিসেবে বিবেচিত হইবে। হ্যা, ওজর থাকলে এই সময়ে যোহর আদায় করা যাবে।
(২)
আল্লাহর রাসুল (ﷺ) বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি এমন কোন মজলিসে বসে, যাতে তার শোর-গোল বেশী হয়ে থাকে, তবে ঐ মজলিস থেকে উঠার পূর্বে যদি সে (নিম্নের দু‘আ) বলে তবে উক্ত মজলিসে তার স্বকৃত গোনাহসমূহকে মার্জনা করা হয়। (দু‘আটি নিম্নেররূপ)ঃ
سُبْحَانَكَ اللّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ، أَشْهَدُ أَنْ لاَّ إِلهَ إِلاَّ أَنْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوْبُ إِلَيْكَ
‘সুবহা-নাকাল্লা-হুম্মা অবিহামদিকা আশহাদু আল লা ইলা-হা ইল্লা আন্তা আস্তাগফিরুকা অআতূবু ইলাইক্।’
অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার সপ্রশংস পবিত্রতা ঘোষণা করছি। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তুমি ব্যতীত কেউ সত্য উপাস্য নেই। আমি তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তোমার প্রতি তওবা (অনুশোচনার সাথে প্রত্যাবর্তন) করছি।(সহীহ তিরমিযী হা/২৭৩০)
মজলিস থেকে উঠে যাওয়ার পূর্বে সকলের জন্য নিম্নের দু‘আ পড়াও সুন্নাত।
اَللّهُمَّ اقْسِمْ لَنَا مِنْ خَشْيَتِكَ مَا تَحُوْلُ بِهِ بَيْنَنَا وَبَيْنَ مَعَاصِيْكَ، وَمِنْ طَاعَتِكَ مَا تُبَلِّغُنَا بِهِ جَنَّتَكَ، وَمِنَ الْيَقِيْنِ مَا تُهَوِّنُ بِهِ عَلَيْنَا مَصَائِبَ الدُّنْيَا، اَللّهُمَّ مَتِّعْنَا بِأَسْمَاعِنَا وَأَبْصَارِنَا وَقُوَّتِنَا مَا أَحْيَيْتَنَا، وَاجْعَلْهُ الْوَارِثَ مِنَّا، وَاجْعَلْ ثَأْرَنَا عَلى مَنْ ظَلَمَنَا، وَانْصُرْنَا عَلى مَنْ عَادَانَا، وَلاَ تَجْعَلْ مُصِيْبَتَنَا فِيْ دِيْنِنَا، وَلاَ تَجْعَلْ الدُّنْيَا أَكْبَرَ هَمِّنَا وَلاَ مَبْلَغَ عِلْمِنَا، وَلاَ تُسَلِّطْ عَلَيْنَا مَنْ لاَ يَرْحَمُنَا
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মাক্বসিম লানা মিন খাশয়্যাতিকা মা তাহূলু বিহী বাইনানা অবাইনা মাআ-সীক, অমিন ত্বা-আতিকা মা তুবাল্লিগুনা বিহী জান্নাতাক, অমিনাল ইয়াক্বীনি মা তুহাউবিনু বিহী আলাইনা মাসা-ইবাদ দুনয়্যা। আল্লাহুম্মা মাত্তি’না বিআসমা-ইনা অ আবস্বা-রিনা অক্বুউওয়াতিনা মা আহয়্যাইতানা, অজআলহুল ওয়া-রিষা মিন্না। অজআল সা’রানা আলা মান যালামানা, অনসুরনা আলা মান আ-দা-না, অলা তাজআল মুসীবাতানা ফী দীনিনা। অলা তাজআলিদ্দুন্য়্যা আকবা-রা হাম্মিনা অলা মাবলাগা ইলমিনা, অলা তুসাল্লিত্ব আলাইনা মাল লা য়্যারহামুনা।
অর্থঃ আল্লাহ গো! আমাদের জন্য তোমার ভীতি বিতরণ কর যার দ্বারা তুমি আমাদের ও তোমার অবাধ্যাচরণের মাঝে অন্তরাল সৃষ্টি কর। তোমার আনুগত্য বিতরণ কর যার দ্বারা তুমি আমাদেরকে তোমার জান্নাতে পৌঁছাও। আমাদের জন্য এমন একীন (প্রত্যয়) বিতরণ কর যার দ্বারা তুমি আমাদের উপর দুনিয়ার বিপদ সমূহকে সহজ করে দাও। হে আল্লাহ! তুমি আমাদের কর্ণ, চক্ষু ও শক্তি দ্বারা যতদিন আমাদেরকে জীবিত রাখ ততদিন আমাদেরকে উপকৃত কর এবং তা আমাদের মৃত্যু পর্যন্ত অবশিষ্ট রাখ। যারা আমাদের উপর অত্যাচার করেছে তাদের নিকট আমাদের প্রতিশোধ নাও। যারা আমাদের সাথে শত্রুতা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য কর। আমাদের দ্বীনে আমাদেরকে বিপদগ্রস্ত করো না। দুনিয়াকে আমাদের বৃহত্তম চিন্তার বিষয় এবং আমাদের জ্ঞানের শেষ সীমা করো না, আর যারা আমাদের উপর রহম করে না তাদেরকে আমাদের উপর ক্ষমতাসীন করো না।(তিরমিযী হা/৩৪৯৭)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
চ্যাটে কারো সাথে কথা বলার পর চ্যাট বন্ধ করার পর উক্ত দোয়া পড়াও সুন্নাত হিসেবে বিবেচিত হবে।
কেউ যদি আপনাকে লিখে সালাম দেয়, তাহলে লিখে জবাব দেওয়া মুস্তাহাব।কিন্তু আপনি যদি ঐ ব্যক্তির প্রেরণকৃত সালামকে মুখ দ্বারা উচ্ছারণ করে পড়ে নেন, তাহলে তখন মুখ দ্বারা সালামের জবাব প্রদাণ করা ওয়াজিব যদিও সে না শুনুক এবং লিখে দেওয়া মুস্তাহাব।
لما في الفتاوی الشامية:
"ويجب رد جواب كتاب التحية كرد السلام.
(قوله ويجب رد جواب كتاب التحية) لأن الكتاب من الغائب بمنزلة الخطاب من الحاضر مجتبى والناس عنه غافلون ط. أقول: المتبادر من هذا أن المراد رد سلام الكتاب لا رد الكتاب. لكن في الجامع الصغير للسيوطي رد جواب الكتاب حق كرد السلام قال شارحه المناوي: أي إذا كتب لك رجل بالسلام في كتاب ووصل إليك وجب عليك الرد باللفظ أو بالمراسلة وبه صرح جمع شافعية؛ وهو مذهب ابن عباس وقال النووي: ولو أتاه شخص بسلام من شخص أي في ورقة وجب الرد فورا؛ ويستحب أن يرد على المبلغ كما أخرجه النسائي."
(کتاب الحظر و الاباحة ، فصل فی البیع جلد ۶ ص: ۴۱۵ ط: دارالفکر)