আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
131 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (27 points)
edited by
ফজরের সুন্নাত সালাতে সুরা কাফিরূন এবং সুরা ইখলাস তিলাওয়াত করা এবং বিতরের সালাতে তিন রাকাতে সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস তিলাওয়াত করা কি সুন্নাহ?

সকালে সুরা ইয়াসিন তিলাওয়াত করলে সকল হাজত পুরা হয়ে যায় এবং সকালে সুরা ওয়াকিয়া তিলাওয়াত করলে খাবারের কষ্ট করতে হয় না, এ হাদিস দুটি কি সহীহ? সকাল দ্বারা এখানে কী উদ্দেশ্য?

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/4599/  নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ফজরের পর সূরা ইয়াসিন আর রাতে সুরা সুরা ওয়াকিয়া পড়া সংক্রান্ত হাদীসঃ

দারেমী শরীফে এসেছেঃ

عن عطاء بن أبي رباحٍ قال: بلغني أن رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم قال: من قرأ یٰٓس في صدر النہار قضیت حوائجہ۔ (رواہ الدارمي) (فضائل اعمال / فضائل قرآن ۱؍۵۲ إشاعۃ دینیات دہلي)

হজরত আতা বিন আবি রাবাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন আমি শুনেছি যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দিনের বেলায় সুরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করবে, তার সব হাজত (প্রয়োজন) পূর্ণ করা হবে।’

অন্যত্রে এসেছেঃ

عن شہر بن حوشب قال: قال ابن عباس رضي اللّٰہ عنہ : من قرأ یٰسٓ حین یصبح، أعطي یسر یومہ حتی یمسي، ومن قرأ ہا في صدر لیلۃ أعطي یسر لیلتہ حتی یصبح۔ (المسند للإمام الدارمي، بحوالہ: أحکام القرآن للقرطبي ۲؍۱۵)

হজরত ইয়াহইয়া ইবনে কাসির রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘যে ব্যক্তি সকালে সুরা ইয়াসিন পাঠ করবে সে সন্ধ্যা পর্যন্ত সুখে-স্বস্তিতে থাকবে। যে সন্ধ্যায় পাঠ করবে সে সকাল পর্যন্ত শান্তিতে থাকবে।’

আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/3811/?show=3811#q3811

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ [রা.] বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

من قرأ سورةالواقعة كل ليلة لم تصبه فاقة ابدا"

 যে ব্যক্তি প্রতিদিন রাতে সুরা ওয়াক্বিয়াহ তেলাওয়াত করবে তাকে কখনো দরিদ্রতা স্পর্শ করবে না। হজরত ইবনে মাসউদ [রা.] তাঁর মেয়েদেরকে প্রত্যেক রাতে এ সুরা তেলাওয়াত করার আদেশ করতেন। [বাইহাকি:শুআবুল ঈমান-২৪৯৮] (মিশকাত পৃঃ ১৮৯)

আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/4163/

এক হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনেক সময় ফজরের সুন্নতের প্রথম রাকাতে সুরা বাকারার ১৩৬ নম্বর আয়াত এবং দ্বিতীয় রাকাতে সুরা আলে ইমরানের ৬৪ নম্বর আয়াত পড়ার বর্ণনা পাওয়া যায়।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বেশির ভাগ সময় ফজরের সুন্নতের প্রথম রাকাতে সুরা বাকারার ১৩৬ নম্বর আয়াত এবং দ্বিতীয় রাকাতে সুরা আলে ইমরানের ৬৪ নম্বর আয়াত তিলাওয়াত করতেন। -(সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস ১১১৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৭২৭)

অতএব ফজরের সুন্নত নামাজে মাঝে মাঝে এই দুই আয়াত পড়াও উত্তম।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/ বোন!

১. ফজরের সুন্নতে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি আলাইহি ওয়াল্লাম সুরা কাফিরুন ও সুরা ইখলাস পড়তেন বলে একাধিক বর্ণনায় পাওয়া যায়।

এক হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা বলেন, ‘আমি এক মাস পর্যন্ত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে খেয়াল করে দেখেছি, তিনি ফজরের সুন্নতে সুরা কাফিরুন ও সুরা ইখলাস এ দুই সূরা পড়েছেন। -(জামে তিরমিজি ৪১৭)

এ হাদীসের উপর ভিত্তি করে ফুকাহায়ে কেরাম বলেছেন, ফজরের সুন্নতের দুই রাকাতে সুরা কাফিরুন ও সুরা ইখলাস পড়া সুন্নত। তবে এটি সুন্নতে গায়রে মুআক্কাদাহ তথা মুস্তাহাব আমল। কেউ ভিন্ন সুরা পড়লে তাতেও কোনো সমস্যা নেই।

ফকিহ আলেমদের মতে, এই সুরা বা অন্য কোনও সুরা পড়াকে অবশ্যক মনে করা বা  নিজের পক্ষ থেকে কোনও নামাজের জন্য কোনও সুরা নির্দিষ্ট করে নেওয়া শরিয়ত-পরিপন্থী।  ( আলবাহরুর রায়েক, খন্ড: ১, পৃষ্ঠা: ৩৪২ হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃষ্ঠা: ৩৮৮ রদ্দুল মুহতার, খন্ড: ১, পৃষ্ঠা: ৫৪৪)

 বেতর নামাজের প্রথম রাকাতে সুরা আ’লা, দ্বিতীয় রাকাতে সুরা কাফেরুন, তৃতীয় রাকাতে সুরা ইখলাস পড়া সুন্নত। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ সুরাগুলো বেতর নামাজে পড়তেন। আব্দুর রহমান ইবনে আবযা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেছেন, নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বেতরের নামাজে ‘সাব্বিহিসমা রাব্বিকাল আলা’ ‘ইয়া আয়্যুহাল কাফিরুন’ এবং ‘কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’ পড়তেন। (সুনানে নাসাঈ: ১৭৫৩)

২. ফজরের পর সূরা ইয়াসিন আর রাতে সুরা সুরা ওয়াকিয়া পড়া সংক্রান্ত হাদীস উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। উপরোক্ত হাদীস গুলো যদিও জয়ীফ,তব মুহাদ্দিসিনে কেরামগন যেহেতু বলেছেন যে ফাজায়েলের ক্ষেত্রে জয়ীফ হাদীস মানা যাবে,তাই অনেকেই উলামায়ে কেরামগন দের পরামর্শ মোতাকেব  উক্ত হাদীসের উপর আমল করেন।       

★★তবে কিছু উলামায়ে কেরামদের মত হলো   কুরআনের অন্যান্য আয়াত তেলাওয়াত করলে প্রতিটি অক্ষরে যে পরিমাণ ছওয়াব পাওয়া যায় এই সূরা তেলাওয়াত করলেও তার প্রতিটি অক্ষরে সেই পরিমাণ ছওয়াব পাওয়া যাবে। তবে কুরআনে মাত্র কয়েকটি সূরা রয়েছে যেগুলোর অতিরিক্ত কিছু ফযিলত রয়েছে যা সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। সহীহ হাদীসে সূরা ইয়াসিনের অতিরিক্ত কোনো ফযিলত বর্ণিত হয় নি। দু একটি দুর্বল হাদীসে এ সূরার বিভিন্ন ফযিলত বর্ণনা করা হয়েছে।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 234 views
...