আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
113 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (56 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।
উস্তায,,,আমি, আমার বোন তার স্বামী -সন্তানরা এবং আমাদের মা বাবা,,আমরা সবাই এক বাসায় থাকি। আমার সন্তানের বাবা দূরে থাকে এবং ১/২ সপ্তাহ পর পর আসে।আমার মেয়ে খুব কান্নাকাটি করে,,,কিন্তু শুধুমাত্র আমার কোলে আসলে বা আমার দুলাভাইয়েত কোলে গেলে কান্না থামায়। এই প্রেক্ষিতেই আমার দুলাভাই আমার মেয়েকে কোলে নেয়, আদর করে। এভাবে আমার মেয়ের প্রতি তার পিতৃসুলভ ভালোবাসা জন্মে গেছে। বড় হলে পর্দা করতে হবে আমার দুলাভাইয়েত সামনে,,,তাই আমার বোন বলছিল আমার মেয়েকে দুধ খাওয়িয়ে তাদের সন্তানের দুধ ভাই বোন বানাতে। এটা কি গুনাহ এর পর্যায়ে পড়বে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তের বিধান হলো যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এক ফোটা দুধ বা তার চেয়েও কম দুধ বাচ্চার পেটে চলে যায়,তাহলেই মাহরাম হয়ে যাবে। 

সুরা নিসার ২৩ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

 حُرِّمَتۡ عَلَیۡکُمۡ اُمَّهٰتُکُمۡ وَ بَنٰتُکُمۡ وَ اَخَوٰتُکُمۡ وَ عَمّٰتُکُمۡ وَ خٰلٰتُکُمۡ وَ بَنٰتُ الۡاَخِ وَ بَنٰتُ الۡاُخۡتِ وَ اُمَّهٰتُکُمُ الّٰتِیۡۤ اَرۡضَعۡنَکُمۡ وَ اَخَوٰتُکُمۡ مِّنَ الرَّضَاعَۃِ وَ اُمَّهٰتُ نِسَآئِکُمۡ وَ رَبَآئِبُکُمُ الّٰتِیۡ فِیۡ حُجُوۡرِکُمۡ مِّنۡ نِّسَآئِکُمُ الّٰتِیۡ دَخَلۡتُمۡ بِهِنَّ ۫ فَاِنۡ لَّمۡ تَکُوۡنُوۡا دَخَلۡتُمۡ بِهِنَّ فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡکُمۡ ۫ وَ حَلَآئِلُ اَبۡنَآئِکُمُ الَّذِیۡنَ مِنۡ اَصۡلَابِکُمۡ ۙ وَ اَنۡ تَجۡمَعُوۡا بَیۡنَ الۡاُخۡتَیۡنِ اِلَّا مَا قَدۡ سَلَفَ ؕ اِنَّ اللّٰهَ کَانَ غَفُوۡرًا رَّحِیۡمًا ﴿ۙ۲۳﴾

তোমাদের উপর হারাম করা হয়েছে তোমাদের মাতাদেরকে, তোমাদের মেয়েদেরকে, তোমাদের বোনদেরকে, তোমাদের ফুফুদেরকে, তোমাদের খালাদেরকে, ভাতিজীদেরকে, ভাগ্নীদেরকে, তোমাদের সে সব মাতাকে যারা তোমাদেরকে দুধপান করিয়েছে, তোমাদের দুধবোনদেরকে, তোমাদের শ্বাশুড়ীদেরকে, তোমরা যেসব স্ত্রীর সাথে মিলিত হয়েছ সেসব স্ত্রীর অপর স্বামী থেকে যেসব কন্যা তোমাদের কোলে রয়েছে তাদেরকে, আর যদি তোমরা তাদের সাথে মিলিত না হয়ে থাক তবে তোমাদের উপর কোন পাপ নেই এবং তোমাদের ঔরসজাত পুত্রদের স্ত্রীদেরকে এবং দুই বোনকে একত্র করা(তোমাদের উপর হারাম করা হয়েছে)। তবে অতীতে যা হয়ে গেছে তা ভিন্ন কথা। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। 

★এখানে মাহরামদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত বলা হয়েছে,  সে সব মাতাকে যারা তোমাদেরকে দুধপান করিয়েছে, 
সুতরাং অল্প দুধ করালেও হারাম হয়ে যাবে। 
কেননা কোনো পরিমান নির্দিষ্ট নেই।

বিস্তারিত জানুনঃ  

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী দুধপানের মাধ্যমে কাউকে মাহরাম বানানো যায়।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ عَنْ جَابِرِ بْنِ زَيْدٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِيْ بِنْتِ حَمْزَةَ لَا تَحِلُّ لِيْ يَحْرُمُ مِنْ الرَّضَاعِ مَا يَحْرُمُ مِنْ النَّسَبِ هِيَ بِنْتُ أَخِيْ مِنْ الرَّضَاعَةِ

ইবনু ‘আববাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হামযাহর মেয়ে সম্পর্কে বলেছেন, সে আমার জন্য হালাল নয়। কেননা বংশ কারণে যা হারাম হয়, দুধ পানের সম্পর্কের কারণেও তা হারাম হয়, আর সে আমার দুধ ভাইয়ের মেয়ে। (বুখারী শরীফ ২৬৪৫.৫১০০) (মুসলিম ১৭/৩, হাঃ ১৪৪৭, আহমাদ ১৯৫২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৪৫৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৪৬৯)

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ بَكْرٍ عَنْ عَمْرَةَ بِنْتِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَخْبَرَتْهَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ كَانَ عِنْدَهَا وَأَنَّهَا سَمِعَتْ صَوْتَ رَجُلٍ يَسْتَأْذِنُ فِيْ بَيْتِ حَفْصَةَ قَالَتْ عَائِشَةُ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ هَذَا رَجُلٌ يَسْتَأْذِنُ فِيْ بَيْتِكَ قَالَتْ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أُرَاهُ فُلَانًا لِعَمِّ حَفْصَةَ مِنْ الرَّضَاعَةِ فَقَالَتْ عَائِشَةُ لَوْ كَانَ فُلَانٌ حَيًّا لِعَمِّهَا مِنْ الرَّضَاعَةِ دَخَلَ عَلَيَّ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَعَمْ إِنَّ الرَّضَاعَةَ تُحَرِّمُ مَا يَحْرُمُ مِنْ الْوِلَادَةِ

 ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর নিকট অবস্থান করছিলেন। এমন সময় তিনি জনৈক ব্যক্তির আওয়াজ শুনতে পেলেন। সে হাফসাহ (রাঃ)- এর ঘরে প্রবেশের অনুমতি প্রার্থনা করছে। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! এই একজন ব্যক্তি আপনার ঘরে প্রবেশের অনুমতি প্রার্থনা করছে। তিনি বলেন, তখন আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তাকে হাফসাহর অমুক দুধ চাচা বলে মনে হচ্ছে। তখন ‘আয়িশাহ (রাঃ) বললেন, আচ্ছা আমার অমুক দুধ চাচা যদি জীবিত থাকত তাহলে সে কি আমার ঘরে প্রবেশ করতে পারত? আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ, পারত। কেননা, জন্মসূত্রে যা হারাম, দুধপানও তাকে হারাম করে। (বুখারী শরীফ ২৬৪৬.৩১০৫-৫০৯৯) (মুসলিম ১৭/১ হাঃ ১৪৪৪, আহমাদ ২৫৫০৮) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৪৫৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৪৭০)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,  
দুধ পানের মুদ্দত বা সর্বোচ্ছ সময়সীমা দুই বৎসর।

তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার বোন যদি আপনার মেয়েকে দুধ খাওয়িয়ে তাদের সন্তানের দুধ ভাই বোন বানায়,অর্থাৎ দুধ পানের নির্দিষ্ট সময় সীমা (২ বছর) এর ভিতরেই আপনার মেয়েকে  দুধ পান করিয়ে দুধ সম্পর্ক স্থাপন করে  ফেলে,এটা গুনাহ এর পর্যায়ে পড়বেনা।

তবে পরবর্তীতে আপনার বোনের ছেলের সাথে কিন্তু আপনার মেয়েকে বিবাহ দেয়া যাবেনা,তারা দুধ ভাই বোন, বিষয়টি সর্বদা স্মরণ রাখতে হবে।

★উল্লেখ্য যে, আপনার মেয়ের বয়স ২ বছরের বেশি হলে সেক্ষেত্রে এভাবে আপনার বোনের দুধ পান করানোর দরুন শরীয়াহ দৃষ্টিকোন থেকে দুধ সম্পর্ক স্থাপন হয়ে যাবেনা।

দুধ সম্পর্ক স্থাপন করার জন্য আপনার মেয়ের ২ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই আপনার বোনের দুধ পান করাতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...