ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া
বারাকাতুহু
بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
স্বপ্নদোষ হলে গোসল ফরজ
হবে। এক্ষেত্রে শুধু নাভির নিচ থেকে পা
পর্যন্ত ধুয়ে ফেলে, প্যান্ট পরিবর্তন করলেই
পাক হবেনা। বরং নাকে পানি,গড়গড়িয়ে কুলি,সমস্ত শরীরে পানি পৌছানো
ছাড়া পবিত্র হবেনা। এক্ষেত্রে ঠান্ডা পানি
সমস্যা মনে হলে গরম পানি ব্যবহার করা যাবে।
হযরত উম্মে সালমা রাযি
থেকে বর্ণিত,
عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ أَنَّهَا قَالَتْ جَاءَتْ أُمُّ سُلَيْمٍ امْرَأَةُ أَبِي طَلْحَةَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَتْ يَا
رَسُولَ اللَّهِ : ( إِنَّ اللَّهَ لَا
يَسْتَحْيِي مِنْ الْحَقِّ هَلْ
عَلَى الْمَرْأَةِ مِنْ غُسْلٍ إِذَا هِيَ
احْتَلَمَتْ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَعَمْ إِذَا رَأَتْ الْمَاءَ )
তিনি বলেন,হযরত আবু তালহা রাযি এর স্ত্রী উম্মে সুলাইম রাযি রাসূলুল্লাহ
সাঃ এর নিকট এসে বললেন,ইয়া রাসূলুল্লাহ সাঃ!
নিশ্চয় আল্লাহ হককে প্রকাশ করতে লজ্জাবোধ করেন না,মহিলার উপর কি গোসল ফরয
হবে, যখন মহিলার স্বপ্নদোষ হবে?
রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,হ্যা মহিলার উপরও গোসল ফরয হবে,যখন মহিলা পানিকে দেখবে।(সহীহ বোখারী-৩৭৩,সহীহ মুসলিম-৪৭১)
ফরয গোসলের ক্ষেত্রে সমস্ত
শরীর একবার ধৌত করা ফরয।সুতরাং পানি পৌছতে বাধা দেয় এমন কোনো জিনিষ শরীরের সাথে লেগে
থাকতে পারবে না।বরং এমন জিনিষকে শরীর থেকে পৃথক করা বা পৃথক রাখা ফরয।মারাক্বিল ফালাহ
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-
ولا بد من
زوال ما يمنع
من وصول الماء للجسد كشمع
وعجين
শরীরে পানি পৌছতে বাধা
দানকারী জিনিষ শরীর থেকে পৃথক রাখতে হবে।যেমন- মোম,বা মাখানো আটা। (মারাক্বিল
ফালাহ-১/৪৫)
ঠিক তেমনি হাদাছে আসগর
থেকে পবিত্রতা অর্জনের উদ্দেশ্যে ওজুর ক্ষেত্রে ওজুর সমস্ত অঙ্গকে ধোত করা ফরয।এবং
পানি পৌছতে বাধা প্রদাণ কারী সকল জিনিষকে শরীর থেকে পৃথক রাখা জরুরী।
যদি ওজুর অঙ্গ সমূহের
মধ্য থেকে সুই বরাবর কোনো অংশতে পানি না পৌছে,অথবা নকের মূল অংশের সাথে
শুকনা বা ভিজা মাঠি লেগে এঠে যায়,তাহলে ওযু বিশুদ্ধ হবে
না।কেউ যদি মেহিদি বা খামির (এক প্রকার রঙ্গিলা গাস) দ্বারা হাতকে রঙ্গিয়ে দেয়,তাহলে তার ওজু হবে। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৪)
গোসলের ক্ষেত্রে সমস্ত
শরীরে পানি পৌছানো ফরয,এ মূলনীতির আলোকে সম্পূরক
হিসেবে একটি মাস'আলা ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে
এভাবে বর্ণিত রয়েছে-
আবুল কাসিম রাহ কে লম্বাটে
নক বিশিষ্ট ব্যক্তির ওজু সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো? যে নকের মধ্যে ময়লা জমে গেছে বা যে ব্যক্তি মাঠির কাজে ব্যস্ত
থাকে, বা যে মহিলা নিজ হাতকে মেহদী দ্বারা রঙ্গিয়েছে,অথবা চামড়া বিক্রেতা বা পেইন্টার- উপরুক্ত ব্যক্তির নকের কোনে
কোনোকিছু আটকে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। তখন আবুল কাসিম রাহ জবাবে বলেছিলেন, প্রত্যেকরই ওজু হবে।কেননা এত্থেকে বেঁচে থাকা প্রায় অসম্ভব।(ফাতাওয়ায়ে
হিন্দিয়া-১/৪)
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. জ্বী উক্ত নামাজ আপনার উপরে কাজা
করা আবশ্যক।
২. গোসল ফরজ হওয়া সত্ত্বেও নাপাক শরীর
নিয়ে মসজিদে যাওয়া মোটেও জায়েজ নেই। অনতিবিলম্বে
আপনার জন্য উক্ত গুনাহ থেকে তওবা করা আবশ্যক।
৩. পরবর্তীতে এজাতীয় ঘটনা ঘটলে ফরজ গোসল সম্পূর্ণ করে সালাত আদায় করতে হবে। শরীয়ত পালনের
ক্ষেত্রে লজ্জা বা শরমের কারণে কোন ফরজ ত্যাগ করা যাবে না। প্রয়োজনে পরিস্থিতি
বিবেচনায় বিভিন্ন অবলম্বন করা যেতে পারে।
কিন্তু নাপাক শরীর নিয়ে মসজিদে প্রবেশ করা হারাম।