আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
77 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (8 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ উস্তায,

আমার একজন নানু অসুস্থ। তিনি আমার আপন নানু না, আমাদের আত্মীয়ও না। একসাথে দ্বীনি দাওয়াতি কাজ করা হয় বলে পরিচিত, ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। তিনি ঢাকা ডাক্তার দেখাতে যাবেন, সুনামগঞ্জ থেকে। উনার সাথে উনার একজন ভাতিজা থাকবে সফরসঙ্গী হিসেবে। উনার স্বামী অনেক আগে মারা গেছেন এবং উনি নিঃসন্তান। উনার তেমন কেউ নাই। এখন উনি আমাকে সাথে যেতে বলছেন যদি আমার আব্বু অনুমতি দেন। আমার পরিবারও উনাকে পছন্দ করে এবং বিশ্বস্ত বলে আমাকে যেতে অনুমতি দিয়েছেন। ঢাকা গিয়ে দু-তিন দিন থাকা হবে হোটেলে। নানু বলেছেন আমার পর্দার কোনো অসুবিধা হবে না, আমাকে জাস্ট উনার সাথে থাকার জন্য নিতে চান।

এখন এক্ষেত্রে আমার তো কোনো মাহরাম নেই। সুনামগঞ্জ টু ঢাকা, এতদূরে আমার যাওয়া কি উচিত হবে? আমার দ্বীনি বোন দুয়েকজন না করতেছেন৷ আবার আমার মা আমাকে অমানবিক বলতেছে যদি না যাই। আমি কি করবো উস্তায? পর্দা, গায়রত ইত্যাদি বিষয়ে চিন্তা করে আমার কোন পথে আগানো উচিত? দয়া করে উত্তর দিলে মুনাসিব হয় উস্তায।

1 Answer

0 votes
by (58,500 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/52469/ নং ফাতওয়াতে আমরা বলেছি যে,

সফর কমপক্ষে ৪৮ মাইলের (যা প্রায়  ৭৮ কিলোমিটার মত)  চেয়ে কম হলে মহিলাগণ পর্দার সাথে একা একা সফর করতে পারবেন । আর ৪৮ মাইলের চেয়ে বেশি হলে স্বামী বা মাহরাম ছাড়া কারো সাথে বা একা সফর করা জায়েজ নয়।


আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে এবং জাহিলিয়াত যুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।’ (সূরা আহযাব ৩৩)


রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,

الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ ، وَإِنَّهَا إِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ ، وَإِنَّهَا لا تَكُونُ أَقْرَبَ إِلَى اللَّهِ مِنْهَا فِي قَعْرِ بَيْتِهَا

নারী গোপন জিনিসযখন সে ঘর থেকে বের হয় শয়তান তাকে উঁকি মেরে দেখে। আর সে আল্লাহ তাআলার সবচে’ নিকটতম তখন হয় যখন সে নিজের ঘরের মাঝে লুকিয়ে থাকে।’ (তাবরানী ২৯৭৪)


বিশুদ্ধ মতানুযায়ী মাহরাম না থাকলে মহিলার উপর হজ্বও ফরয হবে না। হাদীস শরীফে এসেছে-

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: لَا يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِاِمْرَأَةٍ وَلَا تُسَافِرَنَّ امْرَأَةٌ إِلَّا وَمَعَهَا مَحْرَمٌ. فَقَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ اكْتُتِبْتُ فِىْ غَزْوَةِ كَذَا وَكَذَا وَخَرَجَتِ امْرَأَتِىْ حَاجَّةً قَالَ: اِذْهَبْ فَاحْجُجْ مَعَ اِمْرَأَتِكَ. (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

 [‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেনরাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন পুরুষ যেন কক্ষনো কোন স্ত্রীলোকের সাথে এক জায়গায় নির্জনে একত্র না হয়আর কোন স্ত্রীলোক যেন কক্ষনো আপন কোন মাহরাম ব্যতীত একাকিনী সফর না করে। তখন এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলোহে আল্লাহর রসূল! অমুক অমুক যুদ্ধে আমার নাম লেখানো হয়েছে। আর আমার স্ত্রী একাকিনী হজের উদ্দেশে বের হয়েছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনযাও তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্জ/হজ করো। সহীহ : বুখারী ৩০০৬মুসলিম ১৩৪১আহমাদ ১৯৩৪সহীহ ইবনু খুযায়মাহ্ ২৫২৯সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১০১৩৪সহীহ ইবনু হিব্বান ৩৭৫৭।


ইমাম নববী রাহ বলেন,

"فَالْحَاصِل أَنَّ كُلّ مَا يُسَمَّى سَفَرًا تُنْهَى عَنْهُ الْمَرْأَة بِغَيْرِ زَوْج أَوْ مَحْرَم " انتهى

মোটকথাঃ স্বামী বা মাহরাম পুরুষ ব্যতীত যেকোনো প্রকার সফর থেকে মহিলাকে বাধা প্রদান করা হবে।


সফরের ধর্তব্য হল দূরত্ব। কত সময়ে উক্ত স্থানে পৌঁছতে পারছে সেটা ধর্তব্য নয়। উদাহরণতঃ ঢাকার থেকে চট্টগ্রামের দূরত্ব চারশত কিলোমিটার। কিন্তু বিমানে যেতে লাগে ৩০মিনিট। এক্ষেত্রে বিমানে সফর করলেও মহিলাদের জন্য স্বামী বা মাহরাম থাকা আবশ্যক। একা সফর করা জায়েজ নয়। মহিলাদের মাহরাম ঐ সকল ব্যক্তিদের বলা হয়যাদের সাথে আজীবন বিবাহ নিষিদ্ধ। যেমন- পিতাদাদাছেলেনাতিভাগিনামামাভাইভাতিজাশ্বশুরচাচামেয়ের জামাই প্রমূখ।

আরো জানুন- https://ifatwa.info/26113/


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!


সফর কমপক্ষে ৪৮ মাইলের ( যা প্রায় ৭৮ কিলোমিটার মত)  চেয়ে কম হলে মহিলাগণ পর্দার সাথে একা একা সফর করতে পারবেন । আর ৪৮ মাইলের চেয়ে বেশি হলে স্বামী বা মাহরাম ছাড়া কারো সাথে বা একা সফর করা জায়েজ নয়। আপনি আপনার পরিবারকে বুঝাবেন যে, মাহরাম ছাড়া একা একা ৪৮ মাইলের চেয়ে বেশি সফর করা ইসলামে জায়েজ নয়। সফর করলে গোনাহ হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...